• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

সেনাকর্তার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের জেরেই খুন মেজরের স্ত্রী

প্রকাশ:  ২৫ জুন ২০১৮, ১১:২১ | আপডেট : ২৫ জুন ২০১৮, ১১:৩২
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সেনাকর্তা অমিত দ্বিবেদীর স্ত্রী শৈলজা দ্বিবেদীকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন মেজর নিখিল হান্ডা। তবে মেজরের ইচ্ছেতে সহমত হননি শ্রীমতী দ্বিবেদী। তাতেই প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে তার গলার নলি কেটে খুন করেন মেজর হান্ডা। পরে পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে শৈলজাদেবীর দেহ গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে চাকায় পিষে দেন। তদন্তে উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।

তবে শেষরক্ষা হয়নি। সেনা ক্যান্টনমেন্ট হাসপাতালের বাইরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় মেজরের হন্ডাসিটি গাড়ি। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে ওই গাড়িতেই উঠেছিলেন শ্রীমতী দ্বিবেদী। তাই অমিত দ্বিবেদীর ঠিক করে দেওয়া গাড়ির চালক ম্যাডামকে খুঁজে পাননি। খবর: সংবাদ প্রতিদিন

২০১৫-তে মেজর দ্বিবেদী নাগাল্যান্ডে পোস্টিং ছিলেন। সেই সময় ওই একই জায়গাতে পোস্টিং ছিলেন মেজর হান্ডা। স্বাভাবিকভাবেই দুই মেজরের পরিবারের মধ্যে একটা সখ্যতা গড়ে ওঠে। বেশ কিছুদিন আগে বদলি হয়ে দিল্লির সেনা ক্যান্টনমেন্টে চলে আসেন সস্ত্রীক দ্বিবেদী। তখনও মেজর হান্ডার সঙ্গে শৈলজা দ্বিবেদীর যোগাযোগ ছিল। প্রায়ই তারা ফোনে কথা বলতেন। চলত টুকটাক ভিডিওকলও। একটা সময় দু’জনকে ভিডিওকলে কথা বলতে দেখে ফেলেন অমিত দ্বিবেদী। সেই সময় স্ত্রীকে সতর্ক করে দেন। একই সঙ্গে নিখিল হান্ডাকেও সাবধান করেন।

দ্বিতীয়বার তার স্ত্রীকে যেন ফোন করা না হয়, হুঁশিয়ারিও দেন মেজর দ্বিবেদী। তবে এরপরেও কিন্তু কথাবার্তা বন্ধ হয়নি। মেজরের অবর্তমানে দু’জনেই কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

শনিবার আচমকাই নাগাল্যান্ড থেকে দিল্লিতে আসেন মেজর নিখিল হান্ডা। এসেই শ্রীমতী দ্বিবেদীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দেখা করার কথাও জানান। সেইমতো চিকিৎসকের কাছে এসে আর বাড়ির গাড়িতে ফেরেননি শৈলজা দ্বিবেদী। তিনি মেজর হান্ডার হন্ডাসিটিতে চড়ে বসেন। এদিকে তার জন্য হাসপাতালের বাইরে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর বাধ্য হয়েই মেজর দ্বিবেদীকে ফোন করেন গাড়ি চালক।

অন্যদিকে গাড়িতে বসেই শ্রীমতী দ্বিবেদীকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন মেজর হান্ডা। কিন্তু তার কথায় সায় দেননি শৈলজাদেবী। এরপরেই রেগে গিয়ে সুইস ছুরি দিয়ে তার গলার নলি কেটে দেন ওই সেনাকর্তা। তারপর গাড়ির দরজা খুলে দেহটিকে ধাক্কা মেরে বাইরে ফেলে দিয়ে পিছনের চাকায় পিষ্ট করে এলাকা ছাড়েন। পুলিশ কিছুক্ষণের মধ্যেই সেনা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে দেহটিকে উদ্ধার করে।

প্রথমে দুর্ঘটনা মনে হলেও পরে দেখা যায় সুচারুভাবে গলায় ছুরি চালিয়ে খুন করা হয়েছে মেজর দ্বিবেদীর স্ত্রীকে। এই ঘটনার পরেই সম্ভাব্য খুনি হিসেবে মেজর হান্ডার নাম উল্লেখ করেছিলেন অমিত দ্বিবেদী। পুলিশ তদন্তে নেমে দেখে, ওই দিন সেনা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় হান্ডার হন্ডাসিটি দেখা গিয়েছে। সেই গাড়িতে শৈলজাদেবীকে উঠতেও দেখা গিয়েছে। এই ঘটনার পর মেজর হান্ডার গতিবিধির প্রতি নজর রাখতে শুরু করে পুলিশ।

তারপর রোববার রাতে উত্তরপ্রদেশের মীরাট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। হন্ডাসিটির মধ্যে মেলে রক্তের ছিটে। তোয়ালে দিয়ে রক্ত মোছার চেষ্টা হলেও তাতে খুব একটা সফল হননি মেজর নিখিল হান্ডা। তদন্তে নেমেই তা ভালোভাবে বুঝতে পারে পুলিশ।

সেনাকর্তা,অবৈধ সম্পর্ক,খুন,মেজরের স্ত্রী
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close