• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ফুটপাতে খাবার বিক্রেতা এখন সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রপতি!

প্রকাশ:  ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:০৪
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক

সিঙ্গাপুরের প্রথম নারী রাষ্ট্রপতির নাম হালিমা ইয়াকোব। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম বাবা এবং মালয় মায়ের সন্তান হালিমার জন্ম ১৯৫৪ সালে। ৮ বছর বয়সে পিতার মৃত্যুর পর মায়ের সাথে ফুটপাথে খাবার বিক্রি করার পাশাপাশি পড়াশুনা চালিয়ে যান। পরিবারে ৫ ভাইবোনের সাথে দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে একসময় পড়াশুনা শেষ করার পর আইনজীবী হিসেবে পেশা শুরু করেন।

এসব কিছুই হয়তো আমাদের চারপাশের অহরহ ঘটনার একটা। কতজনকেই আমরা এরচেয়েও খারাপভাবে জীবন যাপন করতে দেখি। কিন্তু অন্য সবার চেয়ে ব্যতিক্রম হালিমা। কেননা আশ্চর্য হলেও সত্যি হালিমা নামের এই নারী এখন সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রপতি।

সম্পর্কিত খবর

    হালিমার বাবার নাম ইয়াকুব। কুইন স্ট্রিটে ১৯৫৪ সালের ২৩ আগস্ট তার জন্ম। পরিবারের পাঁচ সন্তানের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ হালিমা। ১৯৬২ সালে তার বাবা মারা যান। তার বাবা ছিলেন একজন পাহারাদার। বাবার মৃত্যুর পর সংসার সামলাতে তার মাকে অমানবিক পরিশ্রম করতে হয়েছে। তার মা রাস্তার পাশের একটি খাবারের দোকানে কাজ করতো। প্রতিদিন সকাল ৪টায় যেতো আর বাড়ি ফিরতো রাত ১০টায়। হালিমা রোজ স্কুলে যাওয়া-আসার পথে দোকানটি পরিষ্কার করতো, বাসনপত্র ধুয়ে দিতো, টেবিল পরিষ্কার করা এবং দোকানে ক্রেতাদের খাবার পরিবেশন ছাড়াও আরো অনেক কাজে সাহায্য করতো।

    এভাবেই ১৯৭০ সালে তানজং ক্যানটং গার্লস স্কুল মাধ্যমিকের পড়াশোনা শেষ করেন। পরে সিঙ্গাপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি সম্পন্ন করেন হালিমা। নানা কষ্ট এবং সমস্যা আর ভোগান্তিকে নিত্যসঙ্গী করে হালিমার এই সময়গুলো কেটেছে।

    হালিমা তার এক বক্তৃতায় বলেছেন, ‘জীবনের এই মারাত্মক খারাপ সময়গুলোতে অনেকবার আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু যখন ভেবেছি যে আমি একজন মুসলিম তখন আবার ফিরে এসেছি সে সিদ্ধান্ত থেকে। আবার নতুন করে জীবন সাজাতে শুরু করেছি’।

    ১৯৭৮ সালে ন্যাশনাল ট্রেডস ইউনিয়ন কংগ্রেসে (এনটিইউসি) একজন আইন কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। তার রজনৈতিক জীবন শুর হয় ক্ষমতাসীন দল পিপলস অ্যাকশন পার্টির কর্মী হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে। ২০০১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী গোহ চোক টংয়ের অনুরোধে রাজনীতিতে আসেন হালিমা। এরপর ধারাবাহিকভাবে ৪টি সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করেন তিনি। ২০১১ সালে সামাজিক উন্নয়ন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর ২০১৩ সালে সিঙ্গাপুরের সংসদে প্রথম নারী স্পিকার নিযুক্ত হওয়ার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী আলোচনায় চলে আসেন এবং পরিচিতি অর্জন করেন।

    ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার জন্য স্পিকার পদ থেকে ইস্তফা দেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের একমাত্র বৈধ প্রার্থী হওয়ায় তাকেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেন দেশটির প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা।

    /এসএইচ

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close