• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

মালয়েশিয়ায় ডিজিটাল সেবা কার্যক্রমে বিদেশিদের প্রশংসা কুড়িয়েছে বাংলাদেশ

প্রকাশ:  ০২ নভেম্বর ২০১৮, ১৫:৪১ | আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০১৮, ১৫:৪৩
আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ায় ডিজিটাল পদ্ধতির সেবা কার্যক্রমে বিদেশিদের প্রশংসা কুড়িয়েছে বাংলাদেশি হাইকমিশন। বাংলাদেশের শ্রমবাজারের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে রয়েছে মালয়েশিয়া। প্রায় ৮ লাখেরও বেশি বাংলাদেশিদের বসবাস। নানা প্রয়োজনে তাদের যোগাযোগ করতে হয় বাংলাদেশ দূতাবাসে। হাইকমিশনার মহ.শহীদুল ইসলামের দিক নির্দেশনায় কর্মকর্তারা প্রবাসীদের সেবা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে জানালেন, শ্রম শাখার প্রথম সচিব মো: হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডল। এমনকি দূর দূরান্ত থেকে যারা দূতাবাসে আসতে পারেননি তাদেরকে সহযোগিতা দেয়ার জন্য চালু রয়েছে হটলাইন ও ওয়ানষ্টপ সার্ভিস।

বিভিন্ন সময় মন্ত্রী, সাংসদ, মানবাধিকার, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে দূতাবাসের সেবার মানের প্রসংশা করেছেন এবং সরকার মালয়েশিয়ার এ মিশনকে প্রথম গ্রেডে উন্নীত করেছেন বলে দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে। এদিকে শ্রমিক বান্ধব দূতাবাসের কর্মকর্তারা মালয়েশিয়ার পারটুবুহান পেঙ্গুসাহা বুঙ্গান বুঙ্গানান (এসোসিয়েশন) ক্যামেরুন হাইল্যান্ড কর্তৃক ইতিমধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। দেশের বাইরে এ প্রথম সেবাদানে বিদেশিদের সম্মান কুড়িয়েছে। পাহাং, দারুল মাকমুর মালয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট মি. লি পেংফো বলেন, দূতাবাসের সকল কর্মকর্তার আন্তরিকতার কারণেই ক্যামেরুন হাইল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশিরা সহজেই পাসপোর্ট করতে পারছে বলে বাংলাদেশ দূতাবাসের সকল কর্মকর্তাকে সংগঠনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যাদের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তারা রি-ইস্যু পাসপোর্টের জন্য আবেদনের সঙ্গে তার ভিসার ফটোকপি সংযুক্ত করে যে ক্যাটাগরির ভিসা রয়েছে সে ক্যাটাগরিতে আবেদন করতে হবে। সাধারণ শ্রমিক এবং ষ্টুডেন্টের ব্যাংক ড্রাফ্ট ১১৬ রিঙ্গীত এবং এর সঙ্গে যুক্ত করতে হবে ভিসা ফটোকপি। আর যারা প্রফেশনাল ভিসায় অথবা ট্যুরিষ্ট ভিসায় দেশটিতে অবস্থান করছেন তাদের ৩৮৫ রিঙ্গীতের ব্যাংক ড্রাফ্ট করে আবেদন করতে হবে।

এ ছাড়া যাদের পাসপোর্ট হারিয়ে গেছে তাদের জন্য থানায় রিপোর্ট করে আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে। এদিকে মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (নতুন) রি-ইস্যু আবেদন গ্রহণ ও বিতরণ সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ।

জন্ম নিবন্ধন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পরিচয়পত্র, প্রত্যয়ন, এলওআই, পারিবারিক সনদপত্র সত্যায়ন, আমমোক্তারনামা ইত্যাদির আবেদনগ্রহণ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা। বিতরণ ৫টা। ট্রাভেল পারমিট সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টায় গ্রহণ এবং বিকেল ৫ টায় বিতরণ। মৃতদেহ সংক্রান্ত কেস আবেদনগ্রহণ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা। সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে বিকেল ৫টায় বিতরণ। শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ, আইনগত সহায়তা এবং অন্যান্য কল্যাণমূলক কাজের জন্য সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টায় আবেদন গ্রহণ এবং সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে প্রদত্ত তারিখে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টায় বিতরণ।

ভিসা সংক্রান্ত আবেদন গ্রহণ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এবং বিতরণ সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে বিকেল ৪টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। বাণিজ্যিক কাগজপত্র সত্যায়ন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। আবেদন গ্রহণ এবং বিতরণ একই দিন দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।

এ বিষয়ে দূতাবাসের পাসপোর্ট ও ভিসা শাখার প্রধান (প্রথম সচিব) মশিউর রহমান শুক্রবার এ প্রতিবেদককে বলেন, হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলামের দিক নির্দেশনায় আমরা প্রবাসী/শ্রমিকদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। এ ছাড়া মালয়েশিয়ার জহুর বারু, পেনাং, মালাক্কা, সারওয়াক, ক্যামেরুন হাইলেন্ডসহ দূরের প্রদেশগুলোতে মোবাইল ক্যাম্পিংয়ের মাধ্যমে পাসপোর্ট আবেদন ও ডেলিভারি দেয়া হচ্ছে যাতে করে প্রবাসীদের পাসপোর্ট করতে এবং পাসপোর্ট পেতে অসুবিধা না হয়।

মশিউর রহমান বলেন, আগে যেখানে পাসপোর্ট সংক্রান্ত অথবা অন্য সমস্যা সমাধানের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে সিরিয়াল নিতে হতো সেখানে এখন দেয়া হচ্ছে তাৎক্ষণিক সেবা। গড়ে প্রতিদিন ১২শর অধিক সেবা প্রত্যাশীদের পাসপোর্ট সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে।

পাসপোর্ট সেবার উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে সচিব বলেন, ওয়ানষ্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে সাথে-সাথেই পাসপোর্ট ডেলিভারি দেয়া হচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ১লাখ ১৬ হাজার ৫৮০ টি আবেদন জমা পড়েছে। তন্মধ্যে ১ লাখ ১০ হাজার ৬৬৬ টি পাসপোর্ট প্রদান করা হয়েছে।

নাম ও বয়স জটিলতায় অনেকে পাসপোর্ট পাচ্ছেন না এমন প্রশ্নের জবাবে মশিউর রহমান বলেন, যদি কেউ নাম ও বয়স গোপন রেখে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন তারাই সমস্যায় পড়ছেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, পূর্বের পাসপোর্টে নাম এবং বয়সের সাথে নতুন আবেদনের সাথে মিল থাকে না। ডিজিটাল পাসপোর্টে প্রথমে যে নাম এবং বয়স থাকবে সে অনুপাতেই পাসপোর্ট হবে । ঘষা-মাঝার কোন সিষ্টেমই নেই ।

পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন পাসপোর্ট করতে আসা মনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা যেকোনো প্রয়োজনে সহজেই দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি এবং খুব দ্রুত সেবা পাচ্ছি। আগে চাইলেই কর্মকর্তার সাথে কথা বলা সম্ভব ছিলো না। এখন পাসপোর্ট এবং ভিসার ব্যাপারে সহজেই কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়। আমরা আরো উন্নত দূতাবাসের আশা প্রকাশ করেন মনোয়র।

/পি.এস

মালয়েশিয়া,বাংলাদেশ,ডিজিটাল
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close