• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

রাবির আইন বিভাগ

নম্বরপত্র জমা দিলেন সেই পরীক্ষক, তড়িঘড়ি মূল্যায়নে সংশয়!

প্রকাশ:  ১৫ অক্টোবর ২০১৭, ২১:১২
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আইন বিভাগে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের চুড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশে বিলম্বে আইন অনুষদের ডিন ও বিভাগের সভাপতির ‘গাফিলতির’ অভিযোগ ওঠার পর ‘তড়িঘড়ি’ করে নম্বরপত্র জমা দেওয়া নিয়ে নাটকীয়তার সৃষ্টি হয়েছে। পরীক্ষা কমিটি সভাপতির চাপে ‘গাফিলতির তথ্য গোপন’ করছে বলে অভিযোগ করেছেন খোদ বিভাগের চারজন শিক্ষক। শিক্ষকদের অভিযোগের রেকর্ড প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিতও আছে। তবে সভাপতির দাবি তিনি ‘বেশ আগেই’ নম্বরপত্র জমা দিয়েছেন। কিন্তু ওই বর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি বলছেন- ‘গত বৃহস্পতিবার ওই পরীক্ষক (সভাপতি আবু নাছের মো. ওয়াহিদ) নম্বরপত্র জমা দেন।’

এদিকে বিভাগের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে পূর্বপশ্চিমকে জানান, উনি, সংবাদ প্রকাশের পর তড়িঘড়ি নম্বরপত্র জমা দিয়েছেন বলে তারা জেনেছেন। উত্তরপত্র মূল্যায়নে তাঁর (বিভাগীয় সভাপতি) দেরি হয়েছিল, দীর্ঘসূত্রিতার অভিযোগ গণমাধ্যমে এসেছিল। এজন্য তিনি তড়িঘড়ি উত্তরপত্র মূল্যায়ণ করে জমা দিবেন, এটা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। এতে মূল্যায়ণ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঠিক মূল্যায়ন নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে।

সম্পর্কিত খবর

    রোববার (১৪ অক্টোবর) পূর্বপশ্চিমবিডি নিউজে ‘নিয়ম ৯০ দিনে, ফল প্রকাশ হয় নি ১৯৫ দিনেও’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর বিভাগের সভাপতি চরম সমালোচনার মুখে পড়ে। পরে তিনি পরীক্ষা কমিটির সঙ্গে কথা বলেন। তিনি পরীক্ষা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পর পরীক্ষা কমিটি আর সংবাদ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন নি।

    বিভাগ সূত্র জানায়, আইন বিভাগের ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয় চলতি বছরের ৬ মার্চ। ছয়টি কোর্সের লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় ১ এপ্রিল। আর ৪ এপ্রিল মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। সেই হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের নিয়ম অনুযায়ী মে মাসের ৫ তারিখের মধ্যে ফল প্রকাশের সময়সীমা নির্ধারিত ছিল। কিন্তু আইন অনুযায়ী ৯০ দিনের নিয়ম তো দূরে থাক, ১৯৫ দিন পেরিয়েছে; তবুও ফল প্রকাশ হয় নি। ফলে ওই শিক্ষাবর্ষের শতাধিক শিক্ষার্থী অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন।

    বিভাগের একাধিক শিক্ষক ও পরীক্ষা কমিটির সদস্যরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিভাগের সভাপতি আবু নাছের মো. ওয়াহিদ ৩০৭ নম্বর কোর্সের শিক্ষক এবং উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেন। তিনি প্রথম পরীক্ষক হিসেবে পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরপরই উত্তরপত্র পান। কিন্তু তিনি ওই সময় ছুটিতে থাকায় প্রথমে দ্বিতীয় পরীক্ষককে দিয়ে উত্তরপত্র মূল্যায়ণের সিদ্ধান্ত নেয় পরীক্ষা কমিটি। দ্বিতীয় পরীক্ষকের মূল্যায়নের পর প্রথম পরীক্ষকের হাতে উত্তরপত্র আসলেও তা মূল্যায়ণ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা না দেয়ায় ফল প্রকাশ আটকে যায়।

    বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক মো. আবু নাছের মো. ওয়াহিদ দাবি করেন, ‘আমি অনেক আগে নম্বরপত্র দিয়েছি। তবে খাতাগুলো গত বৃহস্পতিবার দিয়েছি। কেন ফল প্রকাশে বিলম্ব হয়েছে, তা আমি জানি না। এটা পরীক্ষা কমিটি ভালো বলতে পারবেন।’

    জানতে চাইলে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হান্নান বলেন, ‘উনি, নম্বরপত্র জমা দিতে দেরি করেছেন। গত বৃহস্পতিবার তিনি নম্বরপত্র দিয়েছেন। আনুষ্ঠানিকতা শেষে ফল প্রকাশের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দ্রুত ফল প্রকাশ হয়ে যাবে।’

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close