রাবির হল গেট থেকে ছাত্রীকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের ফটকের সামনে থেকে বাংলা বিভাগের এক ছাত্রীকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে অনার্স চুড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা দিতে বিভাগের যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। ওই ছাত্রীর বাড়ি নওগাঁর পত্নীতলার নজিপুরে। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া হলের আবাসিক ছাত্রী।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই ছাত্রীর সহপাঠীরা জানিয়েছেন, মাইক্রোবাসে ছাত্রীর সাবেক স্বামীসহ ৫/৬ জনকে দেখা গেছে। ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে একই তথ্য জানিয়েছেন রাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. লুৎফর রহমান। তার সাবেক স্বামী সোহেল রানা ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন। তার বাড়িও নওগাঁ জেলায়।
সম্পর্কিত খবর
প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রীদের বরাত দিয়ে প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান জানান, সকালে ওই ছাত্রী বিভাগে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য তাপসী রাবেয়া হল থেকে বের হয়। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের সামনে পৌঁছালে হঠাৎ সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাস এসে তার পথরোধ করে। গাড়ি থেকে নেমে ৫/৬ জন যুবক তার সঙ্গে বাকবিতন্ডা শুরু করে। একপর্যায়ে তাকে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। পরে তার আর কোনো সন্ধান পাওয়া যায় নি।
প্রক্টর লুৎফর রহমান বলেন, খবর শুনে আমরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ফটকের সিসিটিভির ফুটেজ দেখেছি। তারা ওই তিন ফটক দিয়ে বের হয় নি। পুলিশকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে, তারা মেয়েটিকে উদ্ধারে কাজ করছে।
ওই ছাত্রীর রুমমেট জানান, ওর (অপহৃত ছাত্রীর) সঙ্গে সোহেল রানার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় গত বছরের ডিসেম্বরে। চলতি বছরের অক্টোবরে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। নিয়ম অনুযায়ী আগামী ১০ ডিসেম্বর তালাকনামা কার্যকর হওয়ার কথা। তবে তালাক হয়ে গেলেও সোহেল ওই ছাত্রীকে মোবাইলে প্রায়ই বিরক্ত করত।
এদিকে পরীক্ষা দিতে আসার পথে ছাত্রী নিখোঁজের পরও নির্ধারিত পরীক্ষা নিয়েছে রাবির বাংলা বিভাগ। নিখোঁজ ছাত্রীর সহপাঠীরা পরীক্ষা না নিতে অনুরোধ জানালেও তাতে সাড়া দেয়নি বিভাগ কর্তৃপক্ষ। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিভাগে যোগাযোগ করলে পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে বলে জানানো হয়।
রাবি ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমরা প্রথমত ওই মেয়েটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করছি। মেয়েটি যে পরীক্ষা মিস করেছে, তা কীভাবে দিতে পারবে সেটা পরে আলোচনা করে দেখা যাবে।
নগরীর মতিহার থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে বিষয়টি জানায়েছে। আমরা ছাত্রীকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। রাজশাহী ও রাজশাহীর আশেপাশের জেলাগুলোর বিভিন্ন থানাকে বিষয়টি অবগত করেছি।