জবিতে স্বরস্বতী পূজার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা
প্রতি বছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের শ্রী পঞ্চমী তিথিতে দেবী সরস্বতীর পূজা করা হয়। প্রতিবছরের মতো এবারো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) তে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভর্য নিয়ে পালনের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের মন্ডপ তৈরী ও অন্যান্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে ব্যাস্ত সময় কাটাতে দেখা গেছে।এছাড়া পূজা উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় সাজবে বর্ণিল সাঝে।আয়োজক সূত্রে জানা যায়, প্রতিটি বিভাগে থাকবে পূজা মন্ডপ।মন্ডপগুলো বিভাগের সামনে সাজানো হয়েছে।
সম্পর্কিত খবর
পূজা মন্ডপের কাজে ব্যাস্ত চারুকলা বিভাগের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী রিতু পূর্বপশ্চিমকে জানান,"গতকাল সারারাত ধরে কাজ করে এখনও শেষ করতে পারিনি। আমরা এবার ব্যতিক্রমভাবে পূজা উদযাপন করতে যাচ্ছি। ট্যাপা পুতুলকে আমরা সরস্বতী রূপে প্রতিষ্ঠা করবো।
মন্ডপের কাজে ব্যস্ত লোক প্রশাসন বিভাগের দীপ্তি সরকার পূর্বপশ্চিমকে জানালেন, "আমরাও পুরোদমে পূজার মন্ডপ তৈরিতে কাজ করছি। আমরা চেষ্টা করছি যাতে আমাদের বিভাগের মন্ডপটি অন্য সবার চেয়ে ব্যতিক্রম ও আকর্ষনীয় হয়।
ক্যাম্পাসে পূজা আয়োজনের অন্যতম সংগঠক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নিউটন হাওলাদার বলেন, “গত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও আমরা ক্যাম্পাসে অত্যন্ত সুশৃঙ্খলও শান্তিপূর্ণভাবে সরস্বতী পূজার আয়োজন করেছি। আমরা মনে করি, এই পূজা আয়োজনের মাধ্যমে আমরা বিদ্যাদেবীকে সন্তুষ্ট করে শিক্ষা অর্জনের পথ সুগম করতে পারব। এই পূজা এখন শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটা এখন একটি অসাম্প্রদায়িক উৎসবে পরিণত হয়েছে।’
যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় একটি সার্বজনীন স্থান তাই এখানে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কেউ কারো ধর্মে হস্তক্ষেপ না করার শিক্ষাই এ পূজা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।’
পূজায় আইন শৃঙ্খলার বিষয়টি জানতে চাইলে, সহকারী প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল পূর্বপশ্চিমকে বলেন, বরাবরের মতো এবারো আমাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা থাকবে। আমরা পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি নিয়ে সর্বক্ষণিক তদারকির মধ্যে থাকবো। বিশৃঙ্খলাকারী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এ বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জবি উপাচার্য ড.মীজানুর রহমান পূর্বপশ্চিমকে বলেন, এবারো আমরা পূজায় প্রতিটি বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি যাতে সর্বোচ্চ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য নিয়ে পালন করা হয়। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলেই সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছি। আমাদের এখানে জায়গার তুলনায় বিভাগ সংখ্যা অনেক বেশি থাকায় একটু বেশি সতর্ক থাকতে হবে। আর এই পূজা যেহেতু পূরোনো ঢাকার সকল প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে পালন করা হবে তাই এখানে সবার জন্য উন্মক্ত থাকবে। তবে যদি কেউ রং নিয়ে মাতামাতি করে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হবে।
শাস্ত্রমতে, সরস্বতী হলেন জ্ঞান, বিদ্যা, সংস্কৃতি ও শুদ্ধতার দেবী। সৌম্যাবয়ব, শুভ্র বসন, হংস-সম্বলিত, পুস্তক ও বীণা ধারিণী এই দেবী বাঙালির মানসলোকে এমন এক প্রতিমূর্তিতে বিরাজিত, যেখানে কোনো অন্ধকার নেই, নেই অজ্ঞানতা বা সংস্কারের কালো ছায়া।