• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

কথা রাখলেন অনন্ত জলিল

রাজীবের ভাইদের দায়িত্ব নিলেন অনন্ত জলিল, নেপথ্যে সাংবাদিক দীপু

প্রকাশ:  ২৪ এপ্রিল ২০১৮, ১৪:৫২ | আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০১৮, ১৫:০১
বিনোদন প্রতিবেদক

চিত্রনায়ক-প্রযোজক ও দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী অনন্ত জলিল তার দেয়া কথা রাখলেন। রাজধানীতে দুই বাসের চাপায় প্রথমে হাত হারানো ও পরে মৃত্যুবরণ করা তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হোসেনের ছোট দুই ভাই মেহেদি হাসান ও আবদুল্লাহর দায়িত্ব নিলেন তিনি। রাজীবের দুই ভাইকে চিত্রনায়ক-প্রযোজক ও দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী অনন্ত জলিলের সাথে যোগাযোগ করানোর পেছনে যার অবদান সবচেয়ে বেশী তার নাম সাংবাদিক এফ আই দিপু। তিনি বাংলাদেশের একটি জাতীয় দৈনিকে কর্মরত আছেন।

গত রোববার সাভারের হেমায়েতপুরে অনন্ত জলিলের নিজস্ব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এজেআই গ্রুপের কার্যালয়ে রাজীবের ছোট দুই ভাইকে ডেকে নেন তিনি। এ সময় তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজীবের খালা ও মামা ও সাংবাদিক এফ আই দীপু। নিজ কার্যালয়ে বসে তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন অনন্ত জলিল। এরপর তিনি মেহেদি হাসান ও আবদুল্লাহর লেখাপড়া, ভরণ-পোষণসহ যাবতীয় দায়িত্ব নেন।

সম্পর্কিত খবর

    এর আগে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজ থেকে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে অনন্ত জলিল ঘোষণা দেন, রাজীবের অসহায় ছোট দুই ভাইয়ের দায়িত্ব নিতে চান তিনি। এ ঘোষণা দেয়ার সময় তিনি পবিত্র ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে স্বপরিবারে অবস্থান করছিলেন। এরপর দেশে ফিরে তিনি রাজীবের দুই ভাইকে খবর দিয়ে নিয়ে আসেন।

    অনন্ত জলিল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সৌদিতে অবস্থানকালীন আমি জানতে পারি রাজীব মারা গেছে। খুব কষ্ট করে বাবা-মা হারা ছোট দুই ভাইয়ের দায়িত্ব পালন করছিল ছেলেটি। কিন্তু সে মারা যাওয়ার পর ওর ভাই দুটো একেবারেই অসহায় হয়ে পড়েছে। পত্রিকায় বিষয়টি পড়ে আমার খুব কষ্ট লেগেছে। তাই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিই, ভাই দুটোর সম্পূর্ণ দায়িত্ব আমি নেব। যেহেতু তাদের কেউ নেই, তারা আমার কাছে থেকে পড়াশোনা করবে। দেশে এসে সাংবাদিক দীপু সাহেবের সাথে কথা বলে রাজীবের দুই ভাইকে খুঁজে বের করে তাদের দায়িত্ব নিলাম। তাদের দায়িত্ব নিতে পেরে আমার বেশ ভালো লাগছে। আশা করি ওরা নিজেদের জীবন গড়ে নিতে পারবে। আমি সবসময় ওদের খোঁজ খবর রাখব।’

    অনন্ত জলিল আরো বলেন, ‘ যেহেতু এদের বাবা-মা আগে থেকেই নেই। একমাত্র বড় ভাই রাজীব, সেও চলে গেছে পৃথিবী ছেড়ে। এ মুহূর্তে খালা-মামাদের সান্নিধ্যে থাকলে হয়তো ছেলে দুটিও মানসিকভাবে কিছুটা স্বস্তিতে থাকবে। তাই তাদের মতামতকেই গুরুত্ব দিয়েছি। পরবর্তীতে যদি তারা মনে করে আরও ভালো কোথাও পড়াশোনা করা দরকার, তাহলে সে ব্যবস্থাও আমি নেব’।

    এ বিষয়ে সাংবাদিক এফ আই দীপু বলেন, ‘রাজীব যখন মারা যায় তখন অনন্ত জলিল সাহেব ছিলেন সৌদিতে। তিনি ১৮ এপ্রিল রাতে ঢাকায় এসে তিনি আমার সাথে যোগাযোগ করেন এবং নিহত রাজীবের ভাইদেরকে খুঁজে বের করবার দায়িত্ব দেন। এরপরই আমি আমাদের সহকর্মী সাংবাদিক ইমনের কাছ থেকে রাজীবের খালার ফোন নাম্বারটা নেই এবং তার সাথে যোগাযোগ করি এ বিষয়টা নিয়ে। আমার সাথে আরাবি নামের একজন বিষয়টাতে কাজ করেছে। যদিও অনন্ত জলিল বলেছিলেন রাজীবের ছোট ভাইদের তিনি নিজের তত্বাবধানে রাখবেন। এ লক্ষ্যে তাদের জন্য সাভারের হেমায়েতপুরে বাসা ভাড়া সহ একজন মুফতিও ঠিক করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা করতে এসে অনন্ত জানতে পারেন, রাজীবের ছোট দুই ভাইয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তার খালা ও মামা। তারা চাইছেন মেহেদি হাসান ও আবদুল্লাহর বর্তমানে যেখানে পড়াশোনা করছে এবং যে হোস্টেলে থাকছে, সেখানেই রাখতে। অনন্তও রাজীবের খালা ও মামার পছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে সেইমত ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নিলেন অনন্ত জলিল। কাজটি করতে পেরে নিজের মন থেকে খুব ভালো লাগছে।’

    প্রসঙ্গত, ৩ এপ্রিল দুর্ঘটনার পর পথচারীরা রাজীবকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি করেন। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। প্রায় দুই সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে গত ১৬ এপ্রিল পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন তিনি। রাজীবের বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড় ছিলেন। পড়ালেখার পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার টাইপ করে তিনি নিজের এবং ছোট দুই ভাইয়ের খরচ চালাতেন।

    /এটিএম ইমু

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close