• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

স্থাপন করা হচ্ছে বিশেষ আদালত

সরকার মানব পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর

প্রকাশ:  ২০ জানুয়ারি ২০১৮, ২০:২১ | আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০১৮, ২০:৩১
আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ায় মানব পাটারের বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে সরকার। দেশটিতে মানবপাচারের ঘটনা দিন দিন বাড়তে থাকায় এর সঙ্গে সম্পৃক্তদের বিচারে বিশেষ আদালত গঠন করতে যাচ্ছে সে দেশের সরকার। সরকারের এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছে মানব পাচারবিরোধী সংগঠনগুলো। এতে ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার পাবে বলে প্রত্যাশা তাদের।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি তাদের কাজের জন্য বিদেশি শ্রমিকদের ওপর নিভর্শীল। বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে যায় এসব শ্রমিক। এই সুযোগে মানব পাচারকারী চক্রগুলো অবৈধভাবে শ্রমিক নেয় মালয়েশিয়ায়। নেয়ার সময় তাদের অনেকে মারা যায় ভারত মহাসাগর ও আন্দামান সাগরে। এ নিয়ে কয়েক বছর ধরে গণমাধ্যমগুলোতে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে।

সম্পর্কিত খবর

    মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের তথ্য অনুসারে, বর্তমানে দেশটিতে ২০ লাখ নিবন্ধিত বিদেশী শ্রমিক রয়েছেন। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, অনুমোদন ছাড়াই মালয়েশিয়ায় কাজ করছে আরো অনেক শ্রমিক। এদের অনেকেই মানব পাচারের শিকার। অবৈধ এসব শ্রমিক নিজ দেশ থেকে বিপুল অর্থ ঋণ করে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন। সেখানে কাজ পেতেও নিয়োগদাতাদের দিতে হয় প্রচুর টাকা।

    এসব অপরাধ বিচারে চলতি বছরের মে মাসে প্রথমে মালয়েশিয়ার সেলানগর রাজ্যে স্থাপন করা হবে বিশেষ আদালত। পরে সারা দেশেই আদালতের কার্যক্রম বিস্তৃত করবে দেশটির সরকার।মালয়েশীয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী জাহিদ হামিদি বলেন, তাদের আশা, ওই আদালত মানবপাচার মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে পারবে এবং জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সক্ষম হবে।

    কুয়ালালামপুর-ভিত্তিক শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা গুলো সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, দীর্ঘ প্রক্রিয়া ও সহযোগিতার কারণে ভুক্তভোগীরা মামলা লড়তে চান না। এই আদালত তাদের সাহায্য করবে।

    শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা তেনাগানিতার পরিচালক অ্যাজিলে ফার্নান্দেজ বলেন, ‘পাচারের শিকার বেশিরভাগই বিদেশী। বিচার পাওয়ার অপেক্ষায় তারা দীর্ঘদিন বিলম্ব করতে চান না।’

    এ দিকে গেলো বছরের শেষের দিকে মানবপাচারে যুক্ত থাকার অভিযোগে কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের প্রায় ৬শ’ অফিসারকে বদলি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ বাংলাদেশিদের পাচার করার গুরুতর অভিযোগ ছিল বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়া কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশিদের প্রবেশ করানোর ৪টি সিন্ডিকেট কাজ করছে।

    এ প্রসঙ্গে মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি ড. আহমেদ জাহিদ হামিদি বলেন, এয়ারপোর্টের অনেক অফিসারই তাদের ইমিগ্রেশনের বন্ধুদের ব্যবহার করছেন বাংলাদেশিদের অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করাতে। এমন অফিসারের সংখ্যা অনেক। সন্দেহভাজনদের অনেকেই মানবপাচারে জড়িত।

    এমনই প্রায় ৬শ’ সন্দেহভাজনকে সিভিল সার্ভিসের নিয়ম মেনে সরকারি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বদলি করা হয়েছে বলে জানান জাহিদ হামিদি।

    তিনি বলেন, ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক সেরি মুস্তাফা আলী যেভাবে মানবপাচারের বিষয়টি সামলাচ্ছেন তা প্রশংসনীয়। যারা সিন্ডিকেটে জড়িয়ে আইন অমান্য করছেন তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

    গত ১৫ ডিসেম্বর বিদেশি শ্রমিক এবং অবৈধ অভিবাসী নিয়ে গঠিত কমিটির সভাপতির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, তবে আমাদের এটা ভুললেও চলবে না যে, হাজারের ওপর সৎ ও পরিশ্রমী ইমিগ্রেশন অফিসার রয়েছেন। দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে সর্ম্পকিত এই বিষয় আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close