• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

প্রবাসীরা আর কত কাল বঞ্চিত হবে!!!

প্রকাশ:  ১১ মার্চ ২০১৮, ১১:০১ | আপডেট : ১১ মার্চ ২০১৮, ১১:০৪
আহমাদুল কবির

মালয়েশিয়ায় শ্রমিক রপ্তানির প্রকৃত খরচ ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু এই খরচের চেয়ে ৮০-৯০ গুণ বেশি টাকা দিলেই চাকরি নিশ্চিত! এমন সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া কে করে? কোন আহম্মক? এই ঘুষের অংক দিন দিন বেড়েই চলেছে। ঘুষখোরদের সংগে না পেরে সরকার চার গুণ বৃদ্ধি করে ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা পাক্কা ঘুষের বন্দোবস্ত করে দিয়েছে! সরকার নির্ধারিত ঘুষের কাগুজে সীমা অনেক আগেই অতিক্রম করেছে! তাহলে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার অংগীকারের সাথে সাথে ঘুষখোরদের ঘুষও নিশ্চিত করেছে সরকার!

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে বিশ্বের ১৬০ টির বেশি দেশে বাংলাদেশের নাগরিক কর্মরত আছেন। অর্থাৎ গ্রাম গ্রামান্তরের নির্ভেজাল তরতাজা তরুণরাই বিদেশ গিয়েছেন এবং যাচ্ছেন। বিএমইটির ইতিহাস অনুযায়ী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই বাংলাদেশ থেকে লোক বিদেশ যাচ্ছে।ইতিহাস যত পুরাতন তত শক্ত ভিত নেই প্রবাসে কর্মী প্রেরণের প্রক্রিয়া।

সম্পর্কিত খবর

    এমনিতেই একে 'মানব ব্যবসা' তথা ' জন শক্তি রপ্তানি ' নাম দিয়ে বঙ্গ সন্তানদের পণ্যের বাজারে ঠেলে দেয়া হয়েছে। মানুষ নয় পণ্য!! বাংলাদেশের বাজারে এর দাম ওঠে। গড়ে উঠেছে লাইসেন্স ধারী ও অলাইসেন্সধারী এজেন্ট, দালাল, বাটপার।এইসব দালাল, বাটপার বা টাউট বা মধ্যসত্বভোগীরা সকল আইন ও প্রতিরোধের ঊর্ধে! কী সাংঘাতিক! বাংলার এক তরতাজা তরুনকে বিদেশে চালান করছে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে, নিক্ষিপ্ত করা হচ্ছে অনিশ্চিত স্থানে, করা হচ্ছে অবৈধ, অধিকার বঞ্চিত। যে যাবে বিদেশে আর যে চাকরি দিবে এই দুইয়ের মাঝে এরা কারা? এদের প্রতিরোধক করার কি কেউ নাই?

    দীর্ঘদিন পর আলাদা মন্ত্রণালয় করা হয়েছে, জেলায় জেলায় অফিস করা হয়েছে কিন্তু কী কাজে? যে অফিস কর্মক্ষম তরুণদের তালিকা রাখতে অক্ষম, যে অফিস যায় না কোন গ্রামে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, বলে না বিদেশ যাবার প্রক্রিয়া, যে অফিস কোথায় যাচ্ছে অানকোরা তরুণ সে সম্পর্কে তথ্য দিতে পারে না সে অফিস কি কেবলই লোকদেখানো? যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপজেলা পর্যন্ত অফিস আছে তাদের কি কি সার্ভিস আছে? সমবায়ের উপজেলায় অফিস আছে তারা কি এ বিষয়ে কিছু করে? সমাজ সেবার উপজেলা অফিস আছে তারা কি এ বিষয়ে কিছু করে? শিক্ষা অফিস ও শহরে গ্রামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে তারা কি এ বিষয়ে কিছু বলে? ধর্মীয় উপাসনালয় আছে (ইদানিং ঈমামদের বেতন দেয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে) তারা কি কিছু বলে? বাংলার যে সোনালি বয়সের সূর্যসন্তান বিদেশ পারি দিচ্ছে তার সম্পর্কে কেউ কি বলার নাই? আছে কেবল মধ্যসত্বভোগী টাউট দালাল? ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার দেশের অন্যতম কর্মসংস্থান পলিসি হল দেশে ও বিদেশে কর্মে নিয়োজিত করা।

    সে নিয়োজিত কেমন? এখন বাংলার প্রত্যেক গ্রামে প্রবাসী পাওয়া যাবে। এবং প্রত্যেকেরই সরকার নির্ধারিত অতিরিক্ত খরচের ক্ষত আছে। জমি বা মূল্যবান সামগ্রী বিক্রি করে বিদেশ যাচ্ছে।অর্থাৎ পাশে কেউ নেই। যেহেতু প্রত্যেক গ্রাম থেকে কর্মী বিদেশে আছে এবং যাচ্ছে তাই ওয়ার্ড বা ইউনিয়ন ভিত্তিক কমিটি সরকার করে দিতে পারে, যে কমিটি নিরাপদ অভিবাসনের প্রচারণা চালাবে, স্বল্প খরচ ও প্রবাসে চাকরির খোজ খবর রাখবে ও অন্যদের জানাবে।কর্মী প্রেরণের খরচে কোন নগদ লেনাদেনা হবে না ব্যাংকের মাধ্যমে হবে এবং এ খরচ ব্যংকগুলো দিবে।পরিবার গ্যারান্টার হবে যাতে সরকার নির্ধারিত ব্যয় এর অতিরিক্ত একপয়সা ব্যয় না হয়। অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ কমিটি প্রতি ছয়মাস অন্তর ব্যয় মাত্রা নির্ধারণ করে দিবে। রিক্রুটিং এজেন্ট বা সাবএজেন্ট নির্ধারণ করে দিবে শর্তাধীনে। কম ব্যয়ে অভিবাসন এজেন্ট কে বিশেষ ইনসেন্টিভ ও পুরস্কার দিতে হবে। দূতাবাসগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা ও পুরস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে। সব মিলিয়ে ব্যাপক ব্যবস্থাপনা গড়ে না তুললে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়েই চাকরি নিতে হবে মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভকারী সন্তানদের!

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close