বিজয়ের রঙে নিজেকে রাঙান

১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ৪৮তম বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনটিতেই বিশ্বমানচিত্রে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে একটি দেশ, যার নাম বাংলাদেশ। বিজয় মানেই আনন্দ। আর বিজয় দিবসের রঙ বলতে মূলত লাল সবুজকেই বোঝায়। তাই বিজয় দিবসের ফ্যাশনে প্রাধান্য পায় লাল আর সবুজ এই দুটি রঙ। আর কোনো রঙের ছোঁয়া থাকুক বা না থাকুক এই লাল সবুজ রঙ ছাড়া বিজয় দিবসের ফ্যাশন একেবারেই বেমানান। তাই দিনটিতে সাজুন নিজের মতো করে। শাড়ি, পাঞ্জাবী, শার্ট, কুর্তা, ফতুয়া, যেটাই পড়ুন না কেন লাল সবুজকে প্রাধান্য দিন।

বিজয় মানেই উৎসব। আর এই খুশির ধারায় পোশাকেও থাকে বিজয়ের ছাপ, জাতীয় পতাকার রং লাল-সবুজের ছোঁয়া। নগরীর ফ্যাশন হাউসগুলো এই দিবসকে মাথায় রেখে আলাদাভাবে তৈরি করেন বাহারি ধরনের পোশাক।

বিজয় দিবসে পোশাকের রং লাল-সবুজ বা লাল-সাদার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। কোনোটা হয়তো একটু গাঢ় থাকে আর কোনোটা থাকে হালকা। কিছু পোশাকে থাকে শেডের ছোঁয়া। তবে একরঙা পোশাকের চাহিদা কোনো অংশেই কম না।

এসব বিশেষ দিনের পোশাকের ডিজাইনে বিশেষ মোটিফ ব্যবহার করা হয়। বিজয় দিবসে সাধারণত পতাকার ডিজাইন, শাপলা ফুল, স্মৃতিসৌধের মোটিফ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। দেশীয় ধারায় ১৬ ডিসেম্বরের স্মৃতিকে পোশাকের ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলা হয়।

মেঘ ব্র্যান্ডের করিওগ্রাফার মিরাজুল হক বলেন, ‘বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের পতাকার রং লাল ও সবুজ অনুপ্রেরণায় পোশাক তৈরি করা হয়েছে। সব বয়সীদের জন্যই নতুন ডিজাইনের শাড়ি, পাঞ্জাবি, সালোয়ার কামিজ, শার্ট, ফতুয়া আনা হয়েছে নতুন এই আয়োজনে।’ এই বিশেষ দিনে সুতি কাপড়কেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। যেহেতু সব বয়সের মানুষই এ দিবসে যোগ দেন, সেহেতু স্বাচ্ছন্দ্যের কথাটি মাথায় রাখেন ডিজাইনাররা। সুতি কাপড়ে শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া যেকোনো পোশাকই মানিয়ে যায় বেশ। এর সঙ্গে শীতের পোশাক, যেমন চাদরও নকশা করা হয়ে থাকে বিশেষ দিনের কথা মাথায় রেখে।

এ বিজয় দিবসের পোশাকের পসরা সাজানো হয়েছে বিভিন্ন শপিংমলগুলোতে। দামটাও বেশ হাতের নাগালে। তাই এই বিশেষ দিন উৎযাপনে আজই পছন্দের পোশাকটি কিনে নিন। বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পোশাক নিয়ে হাজির হয় সুনামধন্য ব্র্যান্ড 'মেঘ'। এ মহান বিজয় দিবসকে সামনে রেখে নানা পোশাকের আয়োজন করেছে এ ব্র্যান্ড। সুতি কাপড়কে পাধান্য দিয়ে নতুন সাজে পোশাকের সাজ নিয়ে বাজারে এনেছে নতুন নতুন ড্রেস। 'মেঘ' ব্র্যান্ডের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেট, ধানমন্ডির মেট্রো শপিংমলে। ছেলেদের পাঞ্জাবির দাম ৮০০ এবং মেয়েদের কামিজের দাম ৯০০ থেকে ১০০ টাকা।

পরামর্শ ০১. বিজয় দিবসে পোশাকটাই মুখ্য। তাই খুব বেশি মেকআপের প্রয়োজন নেই। হালকা বেইজ মেকআপ করে লাল রঙের লিপস্টিক বা টিপ পরতে পারেন। আর চুলটাও পরিপাটি করে বেঁধে রাখলে ভালো করবেন।

০২. ছেলেরা পাঞ্জাবির সঙ্গে সাদা পায়জামা অথবা জিন্স পরতে পারেন। আর পায়ে পরুন স্লিপার।

০৩. মেয়েরা খুব বেশি গয়না পরবেন না। দেখতে বেমানান লাগতে পারে।

০৪. শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজ থ্রি-কোয়ার্টার বা ফুল হাতার হলে ভালো লাগবে।

০৫. শাড়ি বা সালোয়ার কামিজের সঙ্গে সেমি হাই হিল পরতে পারেন। দেখতে ভালো লাগবে।

নারীদের ফ্যাশন

এই দিনে নারীরা সাধারণত লাল সবুজ শাড়ি পরতে থাকেন। শীত ও ফ্যাশন মাথায় রেখে ব্লাউজ পরতে পারেন লম্বা হাতার। অথবা একটি রঙের শাড়িতে নিজেকে সাজিয়ে জড়িয়ে নিতে পারেন পছন্দের লাল সবুজ শাল দিয়ে। যারা শাড়ি পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না তারা সালোয়ার কামিজ অথবা লম্বা ধরণের কুর্তা পরে নিন নিজের পছন্দের ডিজাইনের। কামিজ বা কুর্তার সঙ্গে গায়ে জড়াতে পারেন শাল। মেকআপের মাঝেও ধরে রাখুন বিজয়ের রঙ। শাড়ির সঙ্গে কপালে বড় লাল টিপ, লাল, সবুজ পুঁথির মালা, হাত ভর্তি চুড়ি এবং লিপস্টিকের রঙে নিজেকে রাঙিয়ে নিন বিজয়ের রঙে।

পুরুষের ফ্যাশন

আজকাল যে কোনো বড় ফ্যাশন হাউজ থেকে শুরু করে ছোটোখাটো দোকান সবগুলোতেই বিজয় দিবসের জন্য ছেলেদের নানা পোশাক পাওয়া যায়। টি শার্ট, ফতুয়া, পাঞ্জাবীতে থাকে লাল সবুজ রঙের ছোঁয়া, বিজয়ের ডিজাইন। পছন্দ অনুযায়ী বেছে নিন নিজের পোশাকটি। সঙ্গে রাখতে পারেন লাল- সবুজ শাল।

শিশুদের ফ্যাশন

বিজয়ের উল্লাসে সবচাইতে বেশি উল্লাসিত হয় শিশুরা। তাদের জন্য তো একটি পোশাক চাই-ই চাই। শিশুদের ফ্যাশনে আধিক্য পায় লালের ব্যবহার। নিজের সন্তানকে রাঙিয়ে তুলুন লাল বা লাল সবুজের মিশ্রণের ভালোবাসায়। এর সঙ্গে হাতে দিতে পারেন আমাদের পতাকার প্রতিকৃতি। ছোট হাতে বেশ সুন্দর মানিয়ে যাবে। এছাড়া বিজয় দিবসের দিন কিছু শিল্পী গালে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পতাকা এঁকে দেন রঙ দিয়ে। ইচ্ছে করলে একটি পতাকাও আঁকিয়ে নিতে পারেন নিজের ও নিজের সোনামণির গালে।

ওএফ