পেঁয়াজ মুরগির একই দাম
ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা বেড়ে কেজিতে ১২০ টাকায় উঠলেও ছাড়াতে পারেনি পেঁয়াজের দাম। সপ্তাহখানেক আগে থেকেই ঢাকার বাসিন্দাদের এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে ১০০ টাকার বেশি গুণতে হয়, এখন তা আরও বেড়ে ১২০ টাকার বেশি লাগছে।
শুক্রবার কারওয়ানবাজারসহ ঢাকার বেশ কয়েকটি কাঁচাবাজার ও পাড়া মহল্লার দোকানগুলোতে পেঁয়াজের এই দাম দেখা গেছে।
সম্পর্কিত খবর
এদিকে গত এক মাস ধরে প্রতিকেজি ১১০ টাকা বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগি এখন ১২০ থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ফার্মের এই মুরগির মাংস সুলভে মিললেও গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। এক কেজি মাংস কিনতে লাগছে ৫০০ টাকা, যা স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য কেনা কষ্টকর বটে।
বাজারে শীতের সবজি আসায় কমেছে শাক-সবজির দাম। অধিকাংশ সবজিই এখন মিলছে ৫০ টাকার মধ্যে, যা মাসখানেক আগেও ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়। সপ্তাহখানেক আগেও ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হওয়া নতুন আলুর দাম এখন নেমে এসেছে অর্ধেকে। পুরান আলুর দামও কমে কেজিপ্রতি ১৫ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ানবাজারে গত মঙ্গলবার পাইকারিতে ৮৫ টাকার মধ্যে থাকা পেঁয়াজের কেজি শুক্রবার বিক্রি হয় ১০৫ টাকায়। এদিন ওই বাজারে খুচরায় ১১৫-১২০ টাকায় এক কেজি পেঁয়াজ পাওয়া গেলে পাড়ার দোকানে তার চেয়ে বেশি লাগছিল। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দামও প্রতিকেজি ৯০ থেকে ৯৫ টাকার মধ্যে।
পেঁয়াজের দাম বাড়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় এই দ্রব্যের বিক্রি কমেছে বলে জানিয়েছেন কারওয়ানবাজারের পাইকার মোহাম্মদ মোশাররফ।
তিনি বলেন, এ বছর ভারতেও পেঁয়াজের সঙ্কট রয়েছে বলে শুনেছি। দাম বাড়ার কারণে বেচাকেনাও কমে গেছে। আমি দৈনিক ৩০ থেকে ৪০ মণ পেঁয়াজ বিক্রি করি। তবে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দিনে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ মণ। মানুষ পেঁয়াজের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছে।
তার দোকানে পেঁয়াজ কিনতে আসা গ্রিন রোডের বাসিন্দা তুষার বলেন, আমাদের বড় পরিবার। সপ্তাহে অন্তত ৫ কেজি পেঁয়াজ প্রয়োজন হয়। দেড় মাস আগেও পাল্লা (৫ কেজি) ২৮০ থেকে ৩২০ টাকায় কিনেছি। তখনও দাম বেশি ছিল। এখন তারও দ্বিগুণ হয়েছে। কিছু পেঁয়াজ কিনে রাখলে অনেক লাভ করতে পারতাম!
চলতি বছর জুলাইয়ের শেষভাগে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ২০-২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকার উপরে ওঠে। এরপর ভারত, মিশরসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি বাড়ায় পেঁয়াজের দাম কয়েক মাস বাড়েনি, নভেম্বর থেকে আবার দাম বাড়তে শুরু করে এখন ১২০ টাকায় উঠেছে।
ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়লেও দীর্ঘদিন ধরে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম কমার প্রবণতায় রয়েছে। গত সপ্তাহে প্রতি ডজন ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় থাকলেও এদিন ৭৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেল ফার্মের মুরগির ডিম। সেই সঙ্গে দেশি মুরগি ও হাঁসের ডিমের দাম ডজন প্রতি ৩০ টাকার মতো কমে ১২০ টাকা হয়েছে।
এদিন নতুন আলু প্রতিকেজি ৩০ টাকা এবং পুরানো আলু ১৩ থেকে ১৪ টাকায় বিক্রি হয়। পাড়া-মহল্লায়ও ভ্যানে নিয়ে ৭ কেজি আলু ১০০ টাকায় ডেকে ডেকে বিক্রি করতে দেখা যায় ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতাদের।
রসুনের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও আদার দাম কিছুটা বেড়েছে। কারওয়ানবাজারে দেশি রসুন প্রতিকেজি ৭০ টাকা এবং আমদানি করা রসুন ৮০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে আদা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়।
কারওয়ানবাজারে শিম ৪০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, ঝিঙা ৩৫ টাকা, ঢেঁড়শ ৩৫ টাকা, বেগুন ৩৫ টাকা, শালগম ৩৫ টাকা, পটল ৩৫ টাকা, দেশি গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মুলা ২০ টাকায় প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে কাঁচামরিচের দাম এখনও ১২০ টাকার উপরে।
মাছের দামও একই রকম রয়েছে। রুইমাছের কেজি ২২০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, টাকি মাছ ৩০০ টাকা, সরপুটি ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় প্রতিকেজি বিক্রি হতে দেখা যায়।
আর ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে। অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের মধ্যে পোয়া মাছ ৪০০ টাকা, ছেউয়া মাছ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, সাগরের বাইলামাছ ৩০০ টাকায় প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে।