• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

বাড়ছে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ

প্রকাশ:  ২৪ মে ২০১৮, ১৫:২৮ | আপডেট : ২৪ মে ২০১৮, ১৫:৩২
বিজনেস ডেস্ক

বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের ওপর চাপ বাড়ছে। চলতি অর্থবছর থেকে এ চাপ বাড়তে শুরু করলেও তা অব্যাহত থাকবে পরবর্তী অর্থবছরগুলোয়ও। ২০১৮-১৯ থেকে ২০২০-২১ পর্যন্ত তিন অর্থবছরে সরকারকে পরিশোধ করতে হবে ৫১৫ কোটি ডলার বা ৪১ হাজার ২০০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮০ টাকা ধরে)। এর মধ্যে আসল হচ্ছে ৪০০ কোটি ডলার বা ৩২ হাজার কোটি টাকা এবং সুদ ১১৫ কোটি ডলার বা ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

বিদেশি ঋণ পরিশোধের অঙ্ক বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আসলের কিস্তি পরিশোধ, লাইবর (লন্ডন ইন্টার ব্যাংক অফারড রেট) বৃদ্ধি এবং ডলারের তুলনায় টাকা অবমূল্যায়ন।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডির) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ চিত্র।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব কাজী শফিকুল আযম বুধবার এ প্রসঙ্গে বলেন, ঋণ নিলে তো পরিশোধ করতেই হবে। এক্ষেত্রে রূপপুর পরমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে নেয়া ঋণের আসলের প্রথম কিস্তি পরিশোধ করা হয়েছে সম্প্রতি। ফলে চলতি অর্থবছরে ঋণ পরিশোধ গত অর্থবছরের চেয়ে বেড়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে (২০১৭-১৮) জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত নয় মাসে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে ১১০ কোটি মার্কিন ডলার বা ৯ হাজার ৮৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে আসলের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ১৮০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা এবং সুদ ১ হাজার ৯০৩ কোটি টাকা।

অন্যদিকে গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ে অর্থাৎ নয় মাসে ঋণ পরিশোধ করা হয়েছিল ৮৩ কোটি ১৩ লাখ ডলার বা ৬ হাজার ৫৫২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে আসল ছিল ৫ হাজার ২১৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা এবং সুদ ১ হাজার ৩৩৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের আসলের প্রথম কিস্তি পরিশোধ, লাইবর রেট বৃদ্ধি এবং ডলারের তুলনায় টাকার অবমূল্যায়ন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক সৌকত আকবর বলেন, এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রস্তুতিমূলক কাজের জন্য প্রথম পর্যায়ে হাতে নেয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়নে রাশিয়ার কাছ থেকে ৫০ কোটি ডলার বা ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়া হয়।

২০১৩ সালের মার্চ থেকে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন শুরু হয়। প্রায় ৫ বছর পর চলতি অর্থবছর থেকে আসল ঋণের কিস্তি পরিশোধ শুরু হয়েছে। তবে ইআরডির ফাবা উইং বলতে পারবে প্রথম কিস্তি দেয়া হয়েছে কি না।

ইআরডির এ উইংয়ের এক কর্মকর্তা জানান, দু-তিনদিন আগেই প্রথম কিস্তির অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে। ইআরডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৬০ কোটি মার্কিন ডলার বা ১২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

এর মধ্যে আসল ১২৫ কোটি ডলার বা ১০ হাজার কোটি টাকা এবং সুদ ৩৫ কোটি ডলার বা ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে ঋণ পরিশোধের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭৩ কোটি মার্কিন ডলার বা ১৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে আসল ১৩৫ কোটি ডলার বা ১০ হাজার ৮০০ কোটি টাকা এবং সুদ ৩৮ কোটি ডলার বা ৩ হাজার ৪০ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে পরিশোধ করতে ব্যয় হবে ১৮২ কোটি মার্কিন ডলার বা ১৪ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে আসল ১৪০ কোটি ডলার বা ১২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা এবং সুদ ৪২ কোটি মার্কিন ডলার বা ৩ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা। পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রতি অর্থবছরই তার আগের অর্থবছরের তুলনায় ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বাড়বে।

অন্যদিকে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক সহায়তার অর্থছাড় বেড়েছে। জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্পের অনুকূলে উন্নয়নসহযোগীরা ছাড় করেছে ৩৯৯ কোটি ডলার।

এর মধ্যে ঋণের পরিমাণ ৩৭২ কোটি ডলার এবং অনুদান ২৭ কোটি ২১ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে অর্থছাড়ের পরিমাণ ছিল ২৩১ কোটি ডলার। এর মধ্যে ঋণ ছিল ২০১ কোটি ৯১ লাখ ডলার এবং অনুদান ২৯ কোটি ডলার।

পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, গত অর্থবছরের নয় মাসে অর্থছাড়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরে নয় মাসে ৭৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ অর্থছাড় বেড়েছে। তাছাড়া বেড়েছে উন্নয়নসহযোগীদের প্রতিশ্রুতিও। সূত্র: যুগান্তর

ওএফ

বৈদেশিক,ঋণ,পরিশোধ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close