• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

কাপাসিয়া কলেজ অধ্যক্ষের বাণিজ্য চরমে

প্রকাশ:  ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০২:০২ | আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০২:১১
মাহমুদুল হাসান, গাজীপুর

গাজীপুরের কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজে নতুন নতুন দুর্নীতি প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে। বিতর্কিত অধ্যক্ষ মো. ছানাউল্লাহ বাণিজ্যের ষোল আনা পূর্ণ করতে কৌশলে এসব চালিয়ে যাচ্ছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, অধ্যক্ষ ছানাউল্লাহর নানা অনিয়ম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি হাইকোর্টে রিট করে পরপর তিনবার স্থগিতাদেশ এনে বরখাস্তের প্রক্রিয়া আটকে রেখেছেন।

সম্পর্কিত খবর

    গত ১৩ জানুয়ারি পূর্বপশ্চিমে ‘কাপাসিয়া কলেজ অধ্যক্ষের নিয়োগে কারচুপি!’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

    জেলা প্রশাসক ও কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য:

    গত ২০১৫ সালের ২৭ জুন ব্যবস্থাপনা ও সমাজকর্ম বিষয়ের অনার্স চালুর সময় প্রভাষক আল আমিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

    নিয়োগ পাওয়ার পর তিনি যোগদান করেননি। হাজিরা খাতা ও এমপিওভুক্তির জন্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো তালিকায়ও তার নাম নেই।

    অথচ গত ১৮ ডিসেম্বর পর্ষদ সভার সিদ্ধান্তে অধ্যক্ষ উল্লেখ করেন, কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে দীর্ঘ ছুটি শেষে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আল আমিনের যোগদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

    জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটি বিধি অনুযায়ী, শিক্ষক হিসেবে ন্যূনতম দুই বছর কাজ না করলে কোন শিক্ষক নৈমিত্তিক ছুটি ব্যতীত দীর্ঘ ছুটির জন্য আবেদনই করতে পারবেন না।

    অপরদিকে অধ্যক্ষের সাথে যোগসাজশ করে গত ২০১৬ সালের ১৫ মে খলিলুর রহমান আরিফ আইসিটি বিষয়ে প্রভাষক হিসেবে খণ্ডকালীন নিয়োগ পান। তার স্নাতকে ফলাফল তৃতীয় শ্রেণি। আইসিটিতেও প্রাতিষ্ঠানিক কোন সনদ নেই।

    জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বিধি অনুযায়ী, খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগেও প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে। তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য নয়।

    ইনকোর্স বাণিজ্য:

    অনার্স ও ডিগ্রির ইনকোর্স পরীক্ষার ফি ৪০০ টাকা। আগে প্রতি বিষয়ে নেওয়া হত ৩০০ টাকা। অনেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করলেও পাস নম্বর দেওয়া হয়।

    এ ছাড়া ফি আদায়ের সময় শিক্ষার্থীদের রসিদ দেওয়া হয় না। ব্যাংকের বদলে নেওয়া হয় হাতে হাতে। পরে অধ্যক্ষকে ভাগ দিয়ে টাকা আত্মসাত করা হয় বলে অভিযোগ।

    এরই মধ্যে প্রভাষক পলাশ কান্তি বিশ্বাস ইংরেজি বিষয়ের জন্য ৩০০ টাকা করে ফি আদায় করেন। যার পরিমাণ অন্তত পৌনে এক লাখ টাকা। কিন্তু পরীক্ষা না নিয়েই পাস নম্বর দেওয়া হয়।

    অধ্যক্ষের বক্তব্য:

    অধ্যক্ষ ছানাউল্লাহ ইনকোর্স পরীক্ষা না নেওয়ার প্রসঙ্গে বলেন, শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসা করে জানতে হবে। না জেনে বলতে পারব না।

    শিক্ষক আল আমিনের দীর্ঘ ছুটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গভর্নিং বডি তাকে ছুটি দিয়েছিল।

    অপর শিক্ষক খলিলুর রহমান আরিফের তৃতীয় শ্রেণির বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন, এটা চাকরির বিধির আলোকে কিছু না।

    এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক বলেন, আইনে কী আছে, আর কী ঘটেছে, যাচাই করে দেখা হবে।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close