• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

নৌকার দুর্গ ফিরিয়ে আনতে চান সাংবাদিক কামাল হাসান

প্রকাশ:  ১৯ মার্চ ২০১৮, ২২:০৭ | আপডেট : ১৯ মার্চ ২০১৮, ২২:৫৪
এম. এ. কাইয়ুম, মৌলভীবাজার

চা বাগান অধ্যুসিত নির্বাচনী এলাকা মৌলভীবাজার ২ (কুলাউড়া) আসন। মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের পর এই আসনকে বলা হয়ে থাকে আওয়াীলীগের ঘাঁটি। এই আসনে স্বাধীনতা পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হলেও ৮০’র দশক থেকে দলীয় প্রার্থরা জয়ের মুখ দেখছেন না বললেই চলে। প্রায় তিন দশকে শুধু মাত্র ১৯৭৯ নির্বাচনে আব্দুল জব্বার ও ১৯৯৬ সালে সাবেক ডাকসু ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হোন। বিগত ১৮ বছরে টানা তিন দফা জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীরা ধরাশয়ী হয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। তাছাড়া বর্তমানে সুলতান মনসুরের বিকল্প কোন হেভিওয়েট প্রার্থী রাজনীতির মাঠ গরম করতে পারছেন না। নির্বাচনী এই এলাকায় দলীয় নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করতে অনেকেই কাজ করছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম লন্ডন আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ও সাংবাদিক কামাল হাসান। একসময় সাংবাদিকতায় সিলেট থেকে ঢাকা পরবর্তীতে যুক্তরাজ্যে সংবাদ সংগ্রহে মাঠ চষে বেড়ালেও বর্তমানে তিনি পুরদস্তুর একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ইতিমধ্যে তিনি তাঁর নিজ নির্বাচনী এলাকা কুলাউড়ায় ব্যাপক পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।

সম্পর্কিত খবর

    সাংবাদিকতা থেকে অবসর নিয়ে জনসেবায় মনোনিবেশ করেছেন তিনি। দৈনিক বাংলাবাজার, দৈনিক ভোরের কাগজ, দৈনিক মানবজমিন, চ্যানেল আইসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় দেশ ও প্রবাস থেকে দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেছেন। বর্তমানে নিজ মাতৃভূমি কুলাউড়ায় জনসেবায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে মাঠে নেমেছন। মৌলভীবাজার-২ আসনে আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী তিনি। ইতিমধ্যে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে শীতার্তদের মধ্যে শীত বস্ত্র বিতরণ ও বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেখ হাসিনার উন্নয়নের সফলতার জন্য নগদ অর্থ দিয়ে সহায়তা করে সাড়া জাগিয়েছেন।

    অপরদিকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সিলেটের অন্যতম ছাত্র নেতা ছিলেন তিনি। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও পেশাগত সাংবাদিক হওয়ার কারনে সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে সময় দিতে পারেননি তিনি। দলের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য চেষ্টা করছেন এখন থেকে। সেক্ষেত্রে দল থেকে মনোনয়নের জন্যও তিনি জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই ফাঁকে বিকালে পূর্বপশ্চিমডটনিউজ এর সাথে সংক্ষিপ্ত সাক্ষাতকার দিলেন তিনি-

    পূর্বপশ্চিম: সাংবাদিকতা বাদ দিয়ে নির্বাচন মূখী কেন ?

    কামাল হাসান: নিবার্চন মূখীটা মানতে পারবো না। নির্বাচন একটি প্রক্রিয়া মাত্র। এক সময় পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা ছিলোই আমার ধ্যান ধারণা। মানুষের কল্যাণে কাজ করার এক অন্যতম মাধ্যম হল গণমাধ্যম। কিন্তু একসময় দেখলাম মানুষের কল্যাণে লেখালেখির পাশাপাশি স্ব-শরীরে সরাসরি সর্ম্পকের বন্ধন সৃষ্টি করতে হলে রাজনীতির বিকল্প নেই। যুগে যুগে যত মহান ব্যক্তিত্ব মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য জন্ম নিয়েছিলেন, সবাই কোন না কোন রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। বাঙ্গালী জাতির শ্রেষ্ট মানব জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের মধ্যে অন্যতম। তাঁদের আর্দশই রাজনীতিতে অনুপ্রবেশে আমাকে অনুপ্রোনিত করেছে।

    পূর্বপশ্চিম: জনপ্রতিনিধি হওয়ার নৈপথ্যে কি ?

    কামাল হাসান: সাংবাদিকতার সুবাদে আমি ২৬টি দেশে গিয়েছি। সে সব দেশের কলা-কৌশল খুব কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। আমার বাস্তাব অভিজ্ঞতা কাজি লাগিয়ে আমার জন্মস্থান কুলাউড়ার জন্য কিছু করতে চাই। বিশে^র প্রথম সারির দেশ গুলোর পরিবেশগত দায়বদ্ধতা আমায় নাড়া দিয়েছে। বিশেষ করে কুরাউড়ায় ব্যক্তিত্ব, কর্মী এবং জনগরে জন্য রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য।

    পূর্বপশ্চিম: মনোনয়ন দৌড়ে কতটা সফল হতে পারবেন ?

    কামাল হাসান: প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সর্বত্র উন্নয়নের রুল মডেল স্থাপন করেছেন। বিশে^র সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল অবস্থানে দাড়ি করিয়েছেন। জাতির জনকের সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে নেত্রীর পাশাপাশি আমার অবস্থান থেকে তৃনমূলের মানব কল্যানে কাজ করে যাচ্ছি। সুখে-দু:খে জনগনের পাশে দাঁড়াচ্ছি। সাথে আওয়ামীলীগের ঘাটি হিসেবে কুলাউড়াকে পুনরুদ্ধার করার জন্য নিরলস কাজের ত্রুটি রাখছি না। ইতিমধ্যে জনগন আমার প্রত্যাবর্তন ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখছেন। আশা করছি দলীয় হাই কমান্ড, আমার কর্ম কা- ও অতিতের অভিজ্ঞতা অর্জন পর্যালোচনা করে মূল্যায়ন করবে।

    পূর্বপশ্চিম: এ আসন জাতীয় রাজনীতিতে উপেক্ষিত, এবার নৌকা প্রতীক আসবে কি, আসলে বিজয় কতটা সম্ভব ?

    কামাল হাসান: স্থানীয় রাজনীতির বিভিন্ন মেরুকরনের কারনে অভ্যন্তরীন কোন্দলে এখানে কোন হেভিওয়েট প্রার্থী অবস্থান করতে পারেননি। তবে এখন সময় পাল্টেছে। সরকারের উন্নয়নের সুফল সর্বত্র বিরাজমান। শেখ হাসিনার নৌকা সাধারণ মানুষের অন্তরে অতি সাদরে স্থান করে নিয়েছে। আর মৌলভীবাজার জেলা আ.লীগের নবগঠিত কমিটির অধিনে আগামী নির্বাচনে জেলার চারটি আসন নৌকা প্রতীকের জয়লাভ করবে বলে আমার বিশ^াস। আগামী নির্বাচন আ.লীগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন বটে তবে কোন আসনই উপক্ষিত হওয়ার সুযোগ নেই। সেক্ষেত্রে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া উপজেলা) এবার নৌকা প্রতীক আসবে এবং বিজয় লাভ করবে বলে আমি আশাবাদী।

    পূর্বপশ্চিম: মনোনয়ন পেলে শুরুটা কি দিয়ে ?

    কামাল হাসান: দলের সর্বস্থরের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে আমার নির্বাচনী কর্মকা- পরিচালিত করব। তাদের সাথে নিয়ে তৃনমূলের সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের বার্তা পৌঁছে দিব।

    পূর্বপশ্চিম: আর না পেলে ?

    কামাল হাসান: দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। তবে জনগন এবং দলের পাশে থাকব।

    পূর্বপশ্চিম: মৌলভীবাজার-২ আসনে উন্নয়নের ক্ষেত্রে কি কি ঘাটতি আছে বলে মনে করেন ?

    কামাল হাসান: আশানুরূপ উন্নয়ন কুলাউড়ায় হয়নি। পিছনে আছে। এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওয়ার এই অ লের সাধারণ মানুষ সরকারের অনেক সুবিধা থেকে বি ত। তাদের নিয়ে আমার বিশেষ কর্ম পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও চা শ্রমীকদের মানবেতর জীবন যাপনের উন্নয়ন সাধন করা বড় একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে চাই। যা অতীতে কেউ গুরুত্ব দেয়নি। সাথে কুলাউড়ার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাটের নাজুক অবস্থান রয়েছে। সার্বিক সমস্যা চিহ্নিত করে ধাপে ধাপে সরকারি বরাদ্দ সুষ্ট বন্টনের মধ্যে দিয়ে সমাধান করব।

    পূর্বপশ্চিম: কোন দিকটায় বেশি পেছনে?

    কামাল হাসান: সুবিধা বি ত এলাকা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যেগাযোগ, প্রযুক্তি জরাজীর্ন। চিকিৎসা অপ্রতুল, ইউপি স্বাস্থ্য কেন্দ্রর অবস্থা নাজুক, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও বিনোদনের জন্য জায়গা নেই। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার সুবিধা নেই। এসবের জন্য দায়ী কুলাউড়ার অতীত নেতৃত্বের। সকলের তাদের প্রতি সম্মন রেখে বলতে চাই- অতীথ নেতৃত্ব সঠিকভাবে পালন করেননি বিদায় কুলাউড়ার পিছিয়ে রয়েছে।

    পূর্বপশ্চিম: আপনার আসনে আ.লীগের একটি অংশ মূল ধারা থেকে বিচ্ছন্ন, নির্বাচনে প্রভাব পড়বে কি?

    কামাল হাসান: প্রভাব পড়ার প্রশ্নই আসে না। কারন শেখ হাসিনার বাইরে কোন আ.লীগ নেই।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close