সৎ মেয়েকে ধর্ষণ স্বীকার করলেও আরমানের অনুশোচনা নেই
আট বছর ধরে সৎ মেয়েকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে আরমান হোসেন সুমন (৩৮) । তবে এই নিয়ে তার কোনো অনুশোচনা নেই। উল্টো বরং সৎ মেয়েক আরমান বিয়ে করার দাবিও জানিয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকার কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং টিমের পুলিশ পরিদর্শক মো. নাজমুল নিশাত এ তথ্য জানান।
বৃহস্পতিবার সৎ মেয়েকে আটবছর ধরে ধর্ষণের এ মামলায়আলামত জব্দ ও ঘটনার রহস্য উন্মোচনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুমনকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. নাজমুল নিশাত।শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম জাকির হোসেন টিপু দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
সম্পর্কিত খবর
এর আগে ধর্ষণের অভিযোগ করে সৎবাবার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে রমনা মডেল থানায় মামলা করেছেন বর্তমানে ২০ বছর বয়সী ওই মেয়ে।পরদিন বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মালিবাগ এলাকা থেকে আরমানকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. নাজমুল নিশাত জানান, আরমান ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। পাশাপাশি সে তার সৎ মেয়েকে বিয়ে করারও দাবি করেছে।কৃতকর্মের জন্য তার মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই। তবে যৌন নির্যাতনের শিকার মেয়েটি এই দাবিকে মিথ্যা বলে জানিয়েছেন। বিয়ের বিষয়টি আমরা যাচাই করছি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, মেয়েটির বাবার সঙ্গে মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ২০০৫ সালে আরমান হোসেনকে বিয়ে করে তার মা। দ্বিতীয় বিয়ের এক বছর পর থেকে মায়ের কাছে থাকা শুরু করে মেয়েটি। চাকরির কারণে মেয়েটির মা মোহাম্মদপুরের নুরজাহান রোডের বাড়ি থেকে সকালে কর্মস্থলে চলে যেতেন। ২০০৮ সালের কোনো একদিন দুপুরে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েটিকে আরমান প্রথম ধর্ষণ করে। এ সময় মেয়েটির আপত্তিকর ছবি মোবাইলে তুলে রাখে আরমান। ছবি ও ভিডিও প্রকাশের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আরমান এরপর থেকে প্রায়ই ধর্ষণ করে আসছিল বলে অভিযোগ করে মেয়েটি।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে পরে গর্ভপাত ঘটায়। এরপরও তার ওপর নির্যাতন চালিয়ে যায় আরমান। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ওই মেয়ে তার এক নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে চলে যায়। সেখানেও কুপ্রস্তাব পাঠাতে থাকে আরমান। এতে রাজি না হওয়ায় মেয়েটির এক বন্ধুকে ভিডিও ও অডিও ক্লিপ পাঠায় আরমান। এ ছাড়া আরমানের বিরুদ্ধে ফেসবুকে দুটি নকল আইডি খুলে মেয়েটি তার ছবিযুক্ত করার অভিযোগ আনেন।
আরমান বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ টুয়েন্টিফোরের শব্দ প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিল। ওই প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা জানান, মামলার পরপরই আরমানকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।