• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

‘মন্ত্রী হওয়াটা কি আমার অপরাধ?’

প্রকাশ:  ২০ এপ্রিল ২০১৮, ২০:২৮ | আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০১৮, ২০:৪৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘মন্ত্রী হওয়াটা কি আমার অপরাধ? ফখরুল সাহেব রংপুর সিটি নির্বাচনে ক্যাম্পেইন করলেন। আমি সেখানে যেতে পারলাম না। তিনি মহাসচিব, আমিও মহাসচিব। এটা কি লেভেল প্লেইং ফিল্ড? বেগম জিয়া করতে পারবেন, শেখ হাসিনা পারবেন না। এটা কি লেভেল প্লেইং ফিল্ড? আমি যুক্তির ভাষায় কথা বলতেছি, এখানে জোড়াজুড়ি করে তো কিছু হবে না।’

শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচনী আচরণবিধি প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।

সম্পর্কিত খবর

    তিনি বলেন, ‘আচরণবিধি পৃথিবীর সব গণতান্ত্রিক দেশে, বিশেষ করে পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসি যে সমস্ত দেশে আছে, যে কোনো নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী সব নির্বাচনে ক্যাম্পেইন করতে পারে। এই যে কয়েকদিন আগে আমাদের পাশের রাজ্যে ত্রিপুরায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিধান সভার নির্বাচনে প্রচারণা চালিয়েছেন।

    ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের দেশে মন্ত্রীও পারবে না, এমপিও পারবে না। সব দেশে যেটা হচ্ছে, আমাদের দেশে সেই সুযোগ কেন থাকবে না? আমরা কিন্তু মন্ত্রীর জন্য চাই নাই। আমরা নির্বাচন কমিশনকে একটা প্রপোজাল দিয়েছি। নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করতেও পারে, নাও করতে পারে।’

    সেনাবাহিনীকে উস্কানি দিচ্ছে বিএনপি

    সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যেখানে সেনাবাহিনী প্রয়োজন সেখানে সরকার কখনও না করেনি। কিন্তু আপনি এখন সেনাবাহিনী, সেনাবাহিনী বলে চিৎকার করছেন, তার মানে একটা উস্কানিমূলক প্রবণতা সৃষ্টি করতে চাইছেন। সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা বিরোধ বাধানোর উস্কানি দিচ্ছেন। এটা কিন্তু দেশের জন্য ভালো নয়।’

    বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনি নিজে যা করেননি, সেটা দাবি করেন কেন? এটা অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কি সে রকম পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে? তাহলে অযৌক্তিক দাবি করে সেনাবাহিনীকে কেন বিতর্কিত করতে চাইছেন? এটা হলো আমার প্রশ্ন।’

    কাদের বলেন, ‘আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই বিএনপি নেতাদের তারা যখন ক্ষমতায় ছিলো, তখন কোন নির্বাচনে সেনাবাহিনী নিয়োগ করেছিল? একটা নির্বাচনেও না। সিটি কর্পোরেশন থেকে জাতীয় নির্বাচনে, অনেক ইলেকশন তো হয়েছে। আপনারা তো সেনাবাহিনী নিয়োগ করেননি।’

    তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী নিয়োগের যৌক্তিকতা কতটুকু? সে রকম পরিস্থিতি হলে সেনাবাহিনী নিয়োগ করবে কী না- সেটা ইলেকশন কমিশন সরকারের সঙ্গে আলাপ করবে। ইলেকশন কমিশন ডিমান্ড দেবে। কারণ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা নির্বাচনের সময় ইসির অধীনে গেলেও সেনাবাহিনী কিন্তু যাবে না। সেনাবাহিনী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে।’

    আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পরিস্থিতি যদি সেনাবাহিনী নিয়োগের মতো হয় তাহলে সরকারও সায় দিতে পারবে। কিন্তু সে রকম পরিস্থিতির উদ্ভব না হলে শুধু শুধু সেনাবাহিনী, সেনাবাহিনী বলেন। আমি রাষ্ট্রীয় অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানে ক্ষমতায় থাকাকালে যারা (বিএনপি) অভিযোগ করছেন, আমি তাদের (বিএনপি) অনুরোধ করবো এই প্রতিষ্ঠানটাকে (সেনাবাহিনী) বিতর্কিত করবেন না।’

    ‘আমাকে কোণঠাসা করে লাভ নেই​’

    পরিবহন খাতের বিশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমি নিজেও অসহায়, অসহায়ত্ব আমার মধ্যেও কাজ করে। আমি কি মানুষ নই? আমি মন্ত্রী, আমি কি দায় এড়াতে পারব? এসব বিষয় নিয়ে কার সঙ্গে আলাপ করব? আসলে আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে।’

    ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনি বাংলাদেশের যেখানেই যান, শুধু কর্মযজ্ঞ চলছে। রাস্তা, ব্রিজ। জন্মকালে তো ব্যথা হয়। রাস্তা হবে, ব্রিজ হবে—এর কি বার্থপেইন আছে না? এটা মানবেন না কেন? আমাদের দেশে মিডিয়ার একটা অংশ এটাকে রাজনীতিতে নিয়ে যাচ্ছে।’

    মন্ত্রী বলেন, ‘আমি সবাইকে বলব, আমাকে কোণঠাসা করে লাভ নেই। আমার মধ্যেও সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু আমি লড়াকু থাকব, হতাশ হব না। সমালোচনা আমাকে শুদ্ধ করে। আপনারা যারা বিরূপ সমালোচনা করেন, এরাও একদিন বুঝবেন এই সমালোচনা সঠিক নয়।’

    চালকদের সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, ‘কেউ রাস্তার শৃঙ্খলা মানে না। ছোট ছোট ব্যাটারিচালিত গাড়ি, যাত্রীরাও জানে এগুলোতে উঠলে বিপদ আছে। একজনও বাঁচে না। তারপরও এই গাড়িগুলোতে ওঠে। তিনি বলেন, তারপর আমাদের চালকেরা কার আগে কে যাবে, কত ট্রিপ নিলে কত লাভ হবে। এ বিষয়টাই মাথায় থাকে। মানুষের জীবন নিয়ে আমাদের খুব কম মানুষেরই মাথায় থাকে। আমার টাকা, আমি কত লাভ করলাম—এটা প্রাধান্য পায়। তখন তো এখানে আমাদের অনেক কিছু ভাবতে হবে।’

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close