• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

‘এত সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশে কবে হয়েছে?’

প্রকাশ:  ২০ মে ২০১৮, ২২:০৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফাইল ছবি

খুলনা সিটি নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন। আমি জানতে চাই, এত সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশে কবে হয়েছে? আজ যারা চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন, তারা ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের কথা ভুলে যান কেন?

রোববার (২০ মে) সন্ধ্যায় খুলনার নবনির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এদেশে নির্বাচন নিয়ে যে খেলা, সিল মেরে বাক্স ভরা–এটা তো শুরু করে দিয়েছে জিয়াউর রহমান। ক্ষমতায় থাকার জন্য হ্যাঁ- না ভোট দিয়ে ভোট চুরির মহড়া করলো। পরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও ভোট চুরি। ৭৯ সালের নির্বাচনেও ভোট চুরি। ভোট চুরি করাটাই তাদের একটা চরিত্র।’

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে দিয়ে গেছেন। এরপর থেকেই হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল শুরু হয়, যার ফলে বাংলাদেশের মানুষের কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়নি। কিছু মানুষ বড়লোক হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘একসময় খুলনার মানুষ আমাদের নৌকায় ভোট দিত না, এটা হলো বাস্তব কথা। তবে কী কারণে, আমরা তা বুঝতে পারতাম না।’

তিনি বলেন, ‘আগের নির্বাচনে (২০১৩ সালে) তালুকদার খালেক ৬০ হাজার ভোটে পরাজিত হন। এবার তা কাভার করে আরও বেশি ভোটে জিতেছেন। এই ভোটটা পেয়েছি, আমরা যে উন্নয়ন করেছি সেজন্যই। খুলনাবাসী উপলব্ধি করতে পেরেছে আওয়ামী লীগ এলে উন্নতি হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির মেয়র থাকার সময়ও আমরা কোনও সিটি করপোরেশনে উন্নয়নের কোনও প্রকল্প বন্ধ করিনি। কে মেয়র আছে আর কে নেই সেটা আমরা দেখিনি। আমরা সব জায়গায় দিয়েছি। কিন্তু বিএনপির মেয়ররা কোনও উন্নয়নমূলক কাজ করেনি। টাকাপয়সা কী করেছে তা বলতে পারবো না। কাজ তারা করেনি, এটা বাস্তবতা। কাজে তাদের মনই ছিল না। কাজ তারা জানেই না।’

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় আসার খুলনা শহরটাকে শেষ করে দেওয়া হয়। শিল্প কলকারখানা একে একে বন্ধ করে দেয়। যতবার বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে, খুলনাকে কেন যেন অন্ধকারে নিয়ে যাওয়া হয়। আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে সব ঠিকঠাক হয়। আমরা ১৯৯৬ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় এসে মোংলা বন্দর চালু করি। ২০০১ ক্ষমতায় এসে বিএনপি তা বন্ধ করে দেয়। পরে আমরা ক্ষমতায় এসে তা আবারও চালু করেছি। যতদূর সম্ভব শিল্পকারখানা চালু করেছি। খুলনা-যশোর অংশের রাস্তাটার কাজ কিছুটা থেমে ছিল, আমরা সেটা আবার সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের সময় যত রকমের উন্নয়ন সম্ভব তা করে যাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কথা দিলে তা রাখে। আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম দিন বদলের। ৯ বছরে দিন বদল করে মানুষকে উন্নত জীবন দিতে সক্ষম হয়েছি। বিএনপি ক্ষমতায় আসা মানে বাংলাদেশে একটি দুর্যোগ আসা। তারা পারে খুন-খারাবি, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস আর লুটপাট করতে। এই ব্যাপারে তারা একেবারে ওস্তাদ। লুটপাট তারা ভালো জানে।’

খুলনাবাসীর উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আপনারা নৌকায় ভোট দিয়েছেন। এবার উন্নতি আরও ত্বরান্বিত হবে। নৌকাই মানুষকে উন্নতি দেয়। নৌকা বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার দিয়েছে। নৌকা স্বাধীনতা দিয়েছে। নৌকা এলে উন্নতি হয়। মানুষ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা চায় বলেই আওয়ামী লীগ খুলনায় জয়লাভ করেছে।’

খুলনা নির্বাচনের ফলের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধভাবেকাজ করলে কোনও নির্বাচনে জয়ী হওয়া কঠিন নয়। এটা হচ্ছে বাস্তবতা ও প্রমাণিত। দেশের জনগণ ব্যাপকভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষে। অনেক জরিপ হচ্ছে, তাতে দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগ ক্রমান্বয়ে ওপরে উঠে যাচ্ছে।’

এসময় তিনি দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। -একে

নির্বাচন,খুলনা নির্বাচনে,প্রধানমন্ত্রী
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close