• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

রাজীবের ছোট দুই ভাইকে ৫ লাখ টাকা দিতে চায় ‘স্বজন পরিবহন’

প্রকাশ:  ২১ মে ২০১৮, ১৪:৪৬ | আপডেট : ২১ মে ২০১৮, ১৫:১৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে দুই বাসের চাপায় হাত হারিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া কলেজছাত্র রাজীবের দুই ভাইকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়ে মঙ্গলবার আদেশ দেবেন হাইকোর্টের আপিল বিভাগ।

সোমবার (২১ মে) সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হাসানের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশের তারিখ ধার্য্য করেন।

আদালতে বিআরটিসির পক্ষে ছিলেন এ বি এম বায়েজিদ, স্বজন পরিবহনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু।

রাজীবের পরিবারের পক্ষে থাকা আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

এ মামলার আদেশের জন্য সোমবার দিন ধার্য থাকলেও পরে শুনানির কারণে মঙ্গলবার (২২ মে) পুনরায় দিন ধার্য করা হয়।

শুনানিতে বিআরটিসির পক্ষের আইনজীবী এ বি এম বায়েজিদ বলেন, ‘মাই লর্ড, আমরা তো ওই দিন অপরাধ করিনি। স্বজন পরিবহন বাম দিক থেকে ধাক্কা দিয়েছিল।’

স্বজন পরিবহনের পক্ষে আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু বলেন, ‘আমরা বলছি, ওই ঘটনাটা হৃদয়বিদারক। কিন্তু আমরা আপাতত পাঁচ লাখ টাকা জমা দিতে চাই।’

রাজীবের ক্ষতিপূরণের পক্ষে থাকা আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘হাইকোর্ট বিভাগ রুলে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের কথা বলেছেন। টাকা জমা রাখার জন্য এরই মধ্যে একটা যৌথ অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে।’

এরপর আদালত বলেন, ‘কারো ওপর অবিচার হোক, আমরা তা চাই না। হাইকোর্টের আদেশটা সংশোধন করতে হবে। আর ক্ষতিপূরণের টাকা যে রাজীবের দুই ভাই পাবে, সেটা নিশ্চিত করাটা খুব কঠিন।’

এর আগে গত ১৭ মে আপিল বিভাগে এ বিষয়ে শুনানি হয়। ওই দিন আদালতে বিআরটিসির পক্ষের আইনজীবী এ বি এম বায়েজিদ বলেছিলেন, তারা ওই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী না। স্বজন পরিবহনের গাড়িটি ওই দিন বাম দিক থেকে ওভারটেক করে এসে বিআরটিসির গাড়িসহ রাজীবকে ধাক্কা দেয়। বিআরটিসি দায়ী না হলে ক্ষতিপূরণের টাকা কেন দেবে বলে প্রশ্ন রাখেন তিনি।

এর আগে রাজীবের পরিবারকে কেন এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে গত ৪ এপ্রিল রুল জারি করেছিলেন আদালত।

গত ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ানবাজারে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের বাসের প্রতিযোগিতার সময় হাত হারান তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব। পরে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ১৭ এপ্রিল মারা যান তিনি।

রাজীবের বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড় ছিলেন। পড়ালেখার পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার টাইপ করে তিনি নিজের এবং ছোট দুই ভাইয়ের খরচ চালাতেন।

ছোট দুই ভাই মেহেদি ও আবদুল্লাহ তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসায় সপ্তম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে।

গত ৮ মে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রাজীবের দুই ভাইকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১ কোটি টাকা দেয়ার নির্দেশ দেন।

বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনকে ৫০ লাখ করে মোট এক কোটি টাকা দিতে ওই আদেশে বলা হয়ছে। হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী আগামী এক মাসের মধ্যে ওই দুই বাস কর্তৃপক্ষকে ২৫ লাখ করে মোট ৫০ লাখ টাকা পরিশোধের পর আদালতকে অবহিত করতে বলা হয়।

সোনালী ব্যাংক মতিঝিল শাখায় রাজীবের খালা ও তার গ্রামের এক কর্মকর্তা ওমর ফারুকের নামে যৌথ অ্যাকাউন্ট খুলে সেখানে এই টাকা রাখতে বলেন আদালত। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহন।

/এফআইজে

রাজীব,মেহেদি,আবদুল্লাহ,ক্ষতিপূরণ,আদালত
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close