• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

এমপি বদির চ্যালেঞ্জ: পারলে প্রমাণ করুন, আমি ইয়াবা কারবারি

প্রকাশ:  ২৫ মে ২০১৮, ১৭:২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তালিকায় আ.লীগ নেতা ও সাংসদ আবদুর রহমান বদির নাম থাকলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রমাণ নেই বলে দাবি করেছেন তিনি। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে যারা ‘অপপ্রচার’ চালাচ্ছেন তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন বদি। তিনি বলেছেন, কেউ পারলে প্রমাণ করুক, আমি ইয়াবা ব্যাবসায়ের সাথে জড়িত।

শুক্রবার( ২৫ মে) বিকেলে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাক্ষাতকারে এ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন এমপি বদি।

সারাদেশে চলছে মাদকবিরোধী অভিযান। এই অভিযানে ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গত ২০ দিনে ৬৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের নামে রয়েছে এক বা একাধিক মাদক মামলা।

তবে, মাদকের বিরুদ্ধে এই অভিযানে বারবার যার নাম উঠে এসেছে তিনি কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের এমপি বদি। গত বছর ৩১ ডিসেম্বর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি) থেকে ১৪১ জনের তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানো হয়। ওই তালিকায় গডফাদার হিসেবে বদি ও তার পাঁচ ভাইয়ের নাম উল্লেখ করা হয়।

তালিকার দ্বিতীয় পৃষ্ঠার একটি প্যারায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘মাননীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি দেশের ইয়াবা-জগতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী। তার ইশারার বাইরে কিছুই হয় না। দেশের ইয়াবা আগ্রাসন বন্ধের জন্য তার ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট।’

তবে, এ তালিকার প্রথমেই তার নাম থাকা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে একটা প্রমাণ আজ পর্যন্ত কোনো মিডিয়া আনতে পারেনি। আমি যদি সত্যিই অপরাধী হতাম তাহলে এতদিনে অনেক প্রমাণ থাকত। আপনারা নিজে এসে আমার নির্বাচনী এলাকা উখিয়া ও টেকনাফে দেখে যান, মানুষজনকে জিজ্ঞাসা করে যান যে, আসলেই আমি মাদক ব্যবসায়ী কিনা।’ এমপি বদির বেশ কয়েকজন নিকটাত্মীয় ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছেন, এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে বদি বলেন, ‘ধরেন আপনার নাম জরিনা, আপনার নামে যদি কোনো খারাপ মেয়ে ব্যবসা করে এবং তার বদলে যদি আপনাকে দোষারোপ করা হয় তাহলে আপনার কেমন লাগবে? একই নাম মিলে যাওয়ায় এই ভুলবোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে।’

তিনি সরকারের চলমান অভিযান প্রসঙ্গে বলেন, ‘সরকার যে মাদক বিরোধী অভিযান চালাচ্ছে আমি তার পক্ষে অবস্থান করছি। দোষী যেকোনো ব্যক্তির শাস্তি চাই আমি।

এদিকে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তালিকা-সংক্রান্ত গোপনীয় প্রতিবেদনের ভূমিকা অংশে বলা হয়েছে, ‘সরকারদলীয় এমপি হওয়ার সুবাদে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অনুসারী/সহযোগী নিয়ে তিনি ইচ্ছামাফিক ইয়াবা ব্যবসাসহ অন্যান্য উৎস থেকে অবৈধ আয়ে জড়িত আছেন।’

শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীরা তার অনিচ্ছার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা করার সাহস রাখে না। তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জেলার অন্য শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বা টেকনাফের যে কোনো চাঁদাবাজ এলাকায় প্রভাব বিস্তারে সক্ষম নয়। বিশেষত মিয়ানমার থেকে চোরাচালান হওয়া ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ করার জন্য তার ইচ্ছাশক্তি সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।'

জানা গেছে, ইয়াবার মূল উৎস টেকনাফ। মিয়ানমার থেকে প্রতিদিনই বিপুল পরিমাণ ইয়াবা প্রবেশ করছে বাংলাদেশে।

গত ২২ মে সচিবালয়ে এমপি বদির বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘সংসদ সদস্য বদির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমাদের কাছে আছে। আমরা সেই অভিযোগগুলো সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছি। বদিসহ অন্য মাদক ব্যবসায়ীদের বিষয়ে আপনাদের কাছেও কোনো তথ্য থাকলে আমাদের দিন। বদির বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তথ্য-প্রমাণ নাই।’

এদিকে বৃহস্পতিবার (২৪ মে) রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, শুধু আব্দুর রহমান বদি কেন, আরও তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে সরকারি দলের প্রভাবশালী কেউ যদি হয়ও, প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশ, মাদক ব্যবসার সঙ্গে, ড্রাগ ডিলিংয়ের সঙ্গে যেই বা যারা জড়িত যতো প্রভাবশালী হোক না কেন ছাড় দেওয়া হবে না।

এমপি বদি
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close