• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

প্রথম ওয়ানডেতে টাইগারদের দাপুটে জয়

প্রকাশ:  ২৩ জুলাই ২০১৮, ০৩:৫৬ | আপডেট : ২৩ জুলাই ২০১৮, ০৫:২৯
স্পোর্টস ডেস্ক
ফাইল ছবি

টেস্ট সিরিজের দুঃস্বপ্ন ভুলতে ওয়ানডেতে গা ঝাড়া দিয়ে ওঠলো টাইগাররা। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪৮ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টাইগারদের দেওয়া ২৮০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৩১ সংগ্রহ করতে পারে ক্যারিবিয়ানরা।

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন দুই ওপেনার ক্রিস গেইল ও এভিন লুইস। দু’জেনের বোঝপড়ায় সিঙ্গেলস, ডাবলস ও বাউন্ডারিতে বড় জুটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল জ্যাসন হোল্ডারদের ইনিংস। কিন্তু হঠাৎই খেই হারালেন লুইস।

নবম ওভারে মাশরাফির ৪র্থ বলটি মিড অফে উঠিয়ে দিলে সেখান থেকে তা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তালুবন্দি করলে ১৭ রানে ফিরে যান এ ওপেনার। দ্বিতীয় উইকেটের শিকারি রুবেল হোসেন। নিজের প্রথম ওভারের একেবারে প্রথম বলেই এলবি’র ফাঁদে ফেলেন শেই হোপকে (০৬ রান)।

এরপর ২২তম ওভারে রান আউট হন ‘দানব’ গেইল। ওই ওভারে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের তৃতীয় বলটি শিমরন হেটমেয়ার শর্ট থার্ডম্যানে ঠেলে দৌড়ের সংকেত না দিলেও ক্রিজের ওই প্রান্ত থেকে দৌড়ে পিচের মাঝ বরাবর চলে আসেন গেইল। শর্ট থার্ডম্যান থেকে ফিল্ডার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বল মোসাদ্দেকের হাতে দিলে তিনি তা স্ট্যাম্পে ছুঁড়ে দেন এবং ব্যক্তিগত ৪০ রানে (৬০ বল) নিজের ইনিংসের সলিল সমাধি ঘটান গেইল।

চতুর্থ ব্যাটসম্যান জ্যাসন মোহাম্মেদকে মেহেদি হাসান মিরাজের বল থেকে স্ট্যাম্পড করেন মুশফিকুর রহিম।

এরপর মোস্তাফিজুর রহমান পরপর দুই বলে হেটমেয়ার ও পাওয়েলকে সাজঘরে ফেরান। পরের ওভারেই মাশরাফির শিকার হন হোল্ডার।

এরপরও চলতে থাকে টাইগার দলপতির শিকার। ভয়ংকর আন্দ্রে রাসেল ও নার্সকে সাজঘরে ফেরান তিনি।

শেষ উইকেট জুটিতে জোসেফ এবং বিশু কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও তারা শুধুমাত্র পরাজয়ের ব্যবধানটাই কমাতে পেরেছেন। শেষ পর্যন্ত তারা অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়লেও জয় সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেননি।

এর আগে স্বাগিতকদের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নেমে তামিম ইকবালের অপরাজিত ১৩০, সাকিব আল হাসানের ৯৭ ও মুশফিকুর রহিমের ১১ বলে ৩০ রানের ঝড়ো ইনিংসে ৪ উইকেটের বিনিময়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৭৯ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।

সকালে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন মাশরাফি। কিন্তু শুরুটা জঘন্য ছিল বাংলাদেশের। কোনো রান না করেই পেসার জেসন হোল্ডারের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ওপেনার এনামুল হক বিজয়।

দলের রান তখন ১, ওভার ১.৩। এই অবস্থায় কান্ডারি হলেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। শুরুর ধাক্কা সামলে ধীরে ধীরে দলকে টেনে নিতে থাকেন এ জুটি। ২৫.৪ ওভারে পূরণ হলো ১০০ রান। ৮৭ বলে ক্যারিয়ারের ৪২তম ওয়ানডে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম। ৩৮তম হাফ সেঞ্চুরি করেন সাকিব আল হাসান। তিনি হাফ সেঞ্চুরি করেন ৬৮ বলে।

হাফ সেঞ্চুরির করার পর হাত খুলে খেলতে থাকেন সাকিব-তামিম। উইকেটের চারদিকে চার আর ছক্কা। এক পর্যায়ে অতিক্রম করেন ১৬২ রান। মানে ১৬১ রানের অপরাজিত জুটি। দ্বিতীয় উইকেটে যেটি দেশের জন্য নয়া রেকর্ড। দ্বিতীয় উইকেট জুটি ইমরুল কায়েস- জুনায়েদ সিদ্দিকি মিলে ১৬০ রান করেছিলেন ২০১০ সালে, ডাম্বুলাতে, পাকিস্তানের বিপক্ষে। এতদিন এটাই ছিল দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দেশের সর্বোচ্চ রান।

তামিম- সাকিব মিলে ওই রেকর্ড ভেঙে দেন। যে কোনো উইকেট জুটিতে সবচেয়ে বেশি রান করার কৃতিত্ব সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দখলে। গতবছর কার্ডিফে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২২৪ রান করেছিলেন সাকিব- রিয়াদ পঞ্চম উইকেট জুটিতে।

১৬২ রান অতিক্রম করার পর দেখার ছিল রেকর্ড ২২৪ রান টপকাতে পারেন কিনা। সেদিকেই এগুচ্ছিলেন তারা। জোড়া সেঞ্চুরির দিকে যাচ্ছিলেন সাকিব- তামিম। কিন্তু না, ৯৭ রান করার পর ক্যাচ আউট হয়ে ৩ রানের আফসোস নিয়ে ফিরতে হয় সাকিবকে। ২০৭ রানের জুটি। গায়ানাতে যে কোনো উইকেট জুটিতে এটাই সর্বোচ্চ রান। আর বাংলাদেশের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

সাকিব না পারলেও সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন তামিম। ১৪৬ রানে তুলে নেন ক্যারিয়ারের দশম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। অবশ্য ক্যারিয়ারে এটাই ছিল তামিমের সবচেয়ে ধীর গতির রেকর্ড।

সাকিবের বিদায়ের পরপরই ৪ বলে ৩ রান করে স্ট্যাম্প হয়ে যান সাব্বির। তবে শেষ দিকে দুর্ধর্ষ ব্যাটিং করেন মুশফিক। ৪৯তম ওভারে একাই ২২ রান নেন তিনি। বলে রান করেন মুশফিক। আর বলে রান করে নট আউট থাকেন তামিম। বাংলাদেশের স্কোর থামে ৪ উইকেটে ২৯৭ রানে।

-একে

মাশরাফি বিন মর্তুজা,বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close