• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

​শেষ বেলায় আরও ১৭ শিক্ষার্থীর জামিন, মুক্ত ৯ জন

প্রকাশ:  ২০ আগস্ট ২০১৮, ০০:৩২ | আপডেট : ২০ আগস্ট ২০১৮, ০০:৪০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দিনের শেষ বেলায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে গ্রেফতার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও ১৭ শিক্ষার্থীকে জামিন দিয়েছেন আদালত। এর আগে বিকাল পর্যন্ত জামিন পান ২৫ জন। ফলে আন্দোলনকালে পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে রাজধানীর ৯টি থানার ১২ মামলায় গ্রেফতার মোট ৪২ শিক্ষার্থী জামিন পেলেন একদিনে।

রোববার (১৯ আগস্ট) ঢাকা মহানগরের ভিন্ন ভিন্ন হাকিম আদালতের বিচারক এ জামিন দেন।

এদিকে, জামিন আদেশ পেয়ে ৯ শিক্ষার্থী এরই মধ্যে মুক্তি পেয়েছেন। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন তারা।

সোমবার আরও ১৩ শিক্ষার্থী মুক্তি পাবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অতিরিক্ত জেলার জাহিদুল আলম।

আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) সূত্রে জানা যায়-

ভাটারা থানার জামিনপ্রাপ্ত ৬ শিক্ষার্থী হলেন- সাখাওয়াত হোসেন নিঝুম, শিহাব শাহরিয়ার, আজিজুল করিম অন্তর, মাসহাদ মুর্তজা আহাদ, মেহেদী হাছান, ফয়েজ আহমেদ।

বাড্ডা থানার জামিনপ্রাপ্ত ১২ শিক্ষার্থী হলেন-নূর মোহম্মদ, আজিজুল হক, মো. হাছান, দোয়ান আহম্মেদ, তরিকুল ইসলাম, রেজা রিফাত আখলাক, এ এইচ এম খালেদ রেজা, রাশেদুল ইসলাম, মুশফিকুর রহমান, ইফতেখার আহমেদ ও জাহিদুল হক।

ধানমন্ডি থানার জামিনপ্রাপ্ত ৯ শিক্ষার্থী হলেন- সোহাদ খান, মাসরিকুল ইসলাম, তমাল সামাদ, মাহমুদুর রহমান, ওমর সিয়াম, মাহাবুবুর রহমান, ইকবাল হোসেন, নাইমুর রহমান ও মিনহাজুল ইসলাম।

উত্তরা পশ্চিম থানার জামিনপ্রাপ্ত ৩ শিক্ষার্থী হলেন- মাহবুব খান রবিন, তোফায়েল ও আশিক।

কোতোয়ালি থানার জামিনপ্রাপ্ত ৩ শিক্ষার্থী হলেন-মেহেদী, জাহিদুল ও দুলাল।

নিউমার্কেট থানার জামিনপ্রাপ্ত ৩ শিক্ষার্থী হলেন- আজিজুর, আমিন ও নূর আলম।

শাহবাগ থানার জামিনপ্রাপ্ত ২ শিক্ষার্থী হলেন-আবু বকর সিদ্দিক, রিয়াজুল হক উলু হাজী।

পল্টন থানার জামিন প্রাপ্ত একজন শিক্ষার্থী হলেন- সাইফুল ওয়াদুদ।

রমনা থানার জামিনপ্রাপ্ত ৩ শিক্ষার্থী হলেন-আরমানুল হক, খাইরুল আলম দিপু ও দাইয়ান নাফিজ প্রধান

এদের মধ্যে মুক্তি পাওয়া ৯ শিক্ষার্থী হলেন—

বাড্ডা থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী রেজা রিফাত ওরফে আখলাক, ভাটারা থানা এলাকায় গ্রেপ্তার আইইউবির ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র ফরিদ আহমেদ ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মেহেদী হাসান, বাড্ডা থানা এলাকায় গ্রেপ্তার ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের ষষ্ঠ বর্ষের ছাত্র সীমান্ত সরকার ও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ইক্তিদার হোসেন। এ ছাড়া বাড্ডা থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডাস্ট্রি ও প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের ছাত্র ইফতেখার আহমেদ ও প্রেসিডেন্সিয়াল ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং একাদশ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী মো. হাসানও মুক্তি পেয়েছেন। জামিনে কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন ভাটারা থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বিবিএ শেষ বর্ষের ছাত্র সামাদ মর্তুজা বিন আজাদ।

রাতে যখন শিক্ষার্থীরা একে একে বেরিয়ে আসছিলেন তখন জেল গেটে সৃষ্টি হয় আবেগঘন পরিবেশ। স্বজনের বুকের তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

তারা বলেন, ‘আমাদের ছেলেরা নিরপরাধ। ঈদ উপলক্ষে ওদের জামিন দেয়া হয়েছে, তাতে আমরা অনেক আনন্দিত। আমাদের বাচ্চাদের প্রথম জামিন দেয়া হয়েছে। বাকিদের যেন কাল দিয়ে দেয় সেজন্যে অনুরোধ করছি আমরা।’

উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট বিকালে সায়েন্স ল্যাব, জিগাতলা ও ধানমন্ডিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় গুজব রটানো হয় আওয়ামী লীগ অফিসে ৪ শিক্ষার্থীকে মারধর করে হত্যা, একজনের চোখ উপড়ানো এবং আরও চার ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ গুজব শুনে শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগ অফিসের দিকে তেড়ে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ ঘটে। এ ঘটনার প্রতিবাদে পরবর্তীতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে এবং আন্দোলন চলাকালে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এসব ঘটনায় পুলিশের ও আওয়ামী লীগের পক্ষে নাশকতার মামলা দায়ের করা হয়।

-একে

জামিন,শিক্ষার্থী,সড়ক আন্দোলন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close