• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

যে কারণে কারাগারের আদালতে ছিলেন না খালেদার আইনজীবীরা

প্রকাশ:  ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৭:১৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করেছেন আদালত। নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে আধা ঘণ্টার মতো কার্যক্রম চলার পর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা না থাকায় শুনানি পিছিয়ে দেন বিচারক।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান এ আদেশ দেন।

এর আগে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা সকাল ১০টার দিকে আদালতকক্ষে হাজির হন। দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল, আবদুল্লাহ আবু, শাহআলম তালুকদার আদালতে তাদের নির্ধারিত জায়গায় হাজির হন।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা না এলেও ঢাকা বারের সভাপতি বিএনপিপন্থি আইনজীবী গোলাম মোস্তফা খান আদালতকক্ষে উপস্থিত ছিলেন।

আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে প্রথমে বক্তব্য দেন দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল। মামলার সর্বশেষ পরিস্থিতি এবং নতুন করে আদালতের স্থান নির্ধারণের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন তিনি।

তিনি জানান, এই মামলায় প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। মামলার দুই আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খানের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মধ্যেই প্রায় ৯ মাস ধরে শুনানি বন্ধ রয়েছে।

‘এই অবস্থায় পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের এই স্থানে অস্থায়ী আদালত ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল এই সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। আসামি খালেদা জিয়ার আইনজীবীর কাছে প্রজ্ঞাপনের কপি পাঠানো হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবেও তাদের ফোন করে জানিয়েছি। এছাড়া মিডিয়ার মাধ্যমে সকলকে অবহিত করা হয়েছে। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা এখন আদালতে উপস্থিত নেই।’

কাজল এই অবস্থাতেই বিচার কার্যক্রম শুরু করতে আদালতের কাছে আর্জি জানান এবং মুন্না ও মনিরুলের কাছে জানতে চান তাদের আইনজীবীরা কোথায়।

এরপর বিচারক বলেন, যেহেতু তারিখ নির্ধারিত ছিল, আইনজীবীরা উপস্থিত হননি। তাদের উপস্থিত হওয়ার জন্য কোর্ট এক ঘণ্টা মুলতবি করা হচ্ছে।

এ সময় ঢাকা বারের সভাপতি ও বিএনপিপন্থী আইনজীবী গোলাম মোস্তফা খান দাঁড়িয়ে বলেন, প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে রাতে। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা কেউ আদালত স্থানান্তরের বিষয়ে অবহিত নন। এ কারণে তারা সবাই বকশীবাজারের আদালতে গেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি একজন অবজারভার হিসাবে এখানে এসেছি। আর আমাদের সবার ফোন বাইরে রেখে দেওয়া হয়েছে। এখান থেকে যোগাযোগ করাও সম্ভব না। একজন অবজারভার হিসাবে আমার মনে হয় তারিখ পেছানোই যৌক্তিক হবে।’

বিচারক আখতারুজ্জামান তখন বলেন, ‘প্রজ্ঞাপনতো কালকে জারি হয়েছে। আর মামলার ডেটতো আগেই ছিল। তারিখ পেছাতে হলেওতো আইনজীবীদের পিটিশন লাগবে।’

এ সময় কোনো আসামির আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় এবং ‘যোগাযোগ সম্ভব না’ বলে শুনানির নতুন তারিখ নির্ধারণের কথা বলেন ঢাকা বারের সভাপতি।

তখন খালেদা জিয়া আদালতের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমার আইনজীবীদের কেউতো এখানে নাই। আমার শারীরিক অবস্থাও ভালো না। ডাক্তার বলেছে, এভাবে বসে থেকে বেশিক্ষণ পা ঝুলিয়ে রাখলে ফুলে যেতে পারে। হাতেও প্রচণ্ড ব্যথা। এ অবস্থায় আদালত চলতে পারে না।’

তিনি বিচারককে বলেন, ‘আপনার যতদিন ইচ্ছা সাজা দিন, আমি এ অবস্থায় আসতে পারবো না। এই আদালতে ন্যায়বিচারও হবে না ।’

এরপর শুনানি মুলতবি করে আগামী ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর নতুন তারিখ ঠিক করেন বিচারক।

এদিকে, প্রজ্ঞাপন জারি করে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা বকশীবাজার কারা অধিদপ্তরের মাঠ থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে বেলা ১১টার দিকে আদালত এলাকায় জড়ো হন খালেদার আইনজীবীরা।

তারা বলেন, কারাগারের ভেতরে আদালত বসানো সংবিধান পরিপন্থি। আইনের বিধি বিধানের বাইরে তারা যাবেন না। যদি আদালত স্থানান্তর হয়ে থাকে তাহলে আদালতকে সেখানে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি জানাতে হবে। তখনই কেবল তারা কেন্দ্রীয় কারাগারে যাবেন কি-না সেটি বিবেচনা করবেন।

উপস্থিত সিনিয়র আইনজীবীরা বলেন, এখানেই বিএনপি চেয়ারপার্সনের মামলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই তারা বকশীবাজারে এসেছেন।

প্রজ্ঞাপন বেআইনি, সংবিধান পরিপন্থি উল্লেখ করে তারা বলেন, আদালত স্থানান্তর হলে অপর পক্ষকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিএনপির আইনজীবীরা আদালতের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক নোটিশ পাননি।

-একে

খালেদা জিয়া,আইনজীবী
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close