• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

‌‘রোহিঙ্গাদের ঘর আগুনে পুড়িয়ে দিত মিয়ানমারের সেনাবাহিনী’

প্রকাশ:  ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:২৮ | আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:৩১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২০১১ সাল থেকে মিয়ানমারজুড়ে রোহিঙ্গা মুসলমান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে জাতিগত নির্যাতন চালিয়েছে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী। নির্যাতনের মুখে পলায়নরত রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে বলেও জাতিসংঘের মানবাধিকার প্যানেলের ৪৪০ পৃষ্ঠার নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী প্রায়ই ভোরে রোহিঙ্গা গ্রামে হামলা চালিয়ে সন্ত্রাসবাদের সৃষ্টি করত। এসময় বন্দুকের গুলির শব্দে জেগে উঠত গ্রামবাসী। তারপর সৈন্যরা নির্বিচারে ঘরে ঢুকে গুলি করে আগুনে পুড়িয়ে দিত সব। রোহিঙ্গারা পালিয়ে যেতে চেষ্টা করলেও তাদের অনেককে গুলি করে হত্যা করা হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত আগস্টে মিয়ানমারের গণহত্যা নিয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধানের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল। ওই প্রতিবেদনে মিয়ানমারের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত এবং গণহত্যার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনে অপরাধে তাদের অভিযুক্ত করার সুপারিশ করা হয়। ওই প্রতিবেদনটির ওপর ভিত্তি করেই নতুন করে আবার ধ্বংসযজ্ঞের তথ্য দিল আন্তসরকার সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা গ্রামে যে হামলাগুলো হয়েছে সেগুলোর ধরন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ এবং সিনিয়র জেনারেল মিন অং ইং লাইংয়ের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। সেনাপ্রধানের নেতৃত্বে প্রাক-পরিকল্পনা এবং নকশা করে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা চালানো হয়, এমনটি প্রতিবেদনের বর্ণনায় উঠে আসে।

রোহিঙ্গাদের গণহত্যা ও নির্যাতনের জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শীর্ষ জেনারেলদের বারবার দোষারোপ করা হয়েছে জাতিসংঘের ওই তদন্ত প্রতিবেদনে। সেক্ষেত্রে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে ‘রাজনীতি’ থেকে দূরে রাখা উচিত বলে মনে করেন জাতিসংঘের তদন্তকারীরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর উচ্চ স্তরের নেতৃত্বে পরিবর্তন আনা জরুরি। পাশাপাশি মিয়ানমার প্রশাসনের ওপর যাতে তারা প্রভাব ফেলতে না পারে সে প্রদক্ষেপ নেয়া উচিত।

এদিকে, সংবাদ সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, বৌদ্ধ জাতিগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির শাসনকর্তা কার্যত মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। পার্লামেন্টে এক-চতুর্থাংশ আসন সেনাবাহিনীর দখলে এবং তিনটি মন্ত্রণালয়ও তাদের নিয়ন্ত্রণে। গত ২০১১ সালে দেশটিতে রাজনৈতিক সংস্কার শুরু হওয়ার পরও তারা দাপট ধরে রেখেছে।

২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী সহিংস অভিযান শুরু করে। এসময় রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এসব ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে অভিহিত করে জাতিসংঘ। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

/রবিউল

রোহিঙ্গা,মিয়ানমার
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close