• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

সন্ত্রাসবাদ দমনে বিশ্বনেতাদের ঐক্য ও সম্মিলিত উদ্যোগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ:  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:৩৩
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সন্ত্রাসবাদ দমনে বিশ্বনেতাদের ঐক্য ও সম্মিলিত উদোাগের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন. ভবিষ্যৎ শান্তিপূর্ণ বিশ্ব নিশ্চিত করতে অবশ্যই আন্তর্জাতিক সব বিরোধ শান্তিপূর্ণ উপায়ে নিষ্পত্তি করতে হবে এবং বিদ্যমান সব সংঘাতের অবসান ঘটাতে হবে।

নিউ ইয়র্কে স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের জেনারেল অ্যাসেম্বলি হলে অনুষ্ঠিত নেলসন ম্যান্ডেলা শান্তি সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের অর্থায়ন, তাদের অস্ত্র সরবরাহের উৎস বন্ধ এবং তাদের আশ্রয় দান বন্ধের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদের মতো ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অবশ্যই বিশ্বনেতাদের এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে, অভিযোজন সক্ষমতা অর্জন করতে হবে এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে মানবাধিকার রক্ষা করতে হবে। শান্তির সংস্কৃতি ও অহিংসা লালন করতে হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ অর্জনে আমাদের সহযোগিতা জোরদার করতে হবে, সহনশীলতা বাড়াতে হবে, বৈচিত্র্যকে ধারণ করতে হবে, ধর্মীয় ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীকে বৈষম্য ও শোষণ থেকে রক্ষা করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সংঘাত অবসান, মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা থেকে এখনো আমরা অনেক দূরে, যার জন্য ম্যান্ডেলা লড়াই করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন অংশে বহু মানুষ অনাহার ও অপুষ্টিতে ভুগছে।’ জাতিগত সংঘাত, ভীতি এবং অসহিষ্ণুতা বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক সমাজের লোক বৈষম্যের শিকার, ধর্ম ও নৃ-গোষ্ঠীগত পরিচয়ের কারণে তাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হচ্ছে। তারা নির্যাতন ও গণহত্যার শিকার হচ্ছে। শেখ হাসিনা এ প্রসঙ্গে বলেন, মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের হাত থেকে রক্ষা পেতে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা বিশ্বের অনেক স্থানে মানুষের জীবন রক্ষা করছে। তিনি বলেন, দুই দশক আগে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশ শান্তি প্রস্তাবের সংস্কৃতি চালু করেছে। এটি ক্ষুধা থেকে বৈষম্য নির্মূল করে মানব জীবনের সর্বক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়নের অ্যাজেন্ডা। শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর রূপকল্প আমাদের সবাইকে পথ দেখিয়েছে।’

নেলসন ম্যান্ডেলার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি মানুষের নেতা হিসেবে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় জাতিগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। পরে তাঁর আত্মত্যাগ, উৎসর্গ, মানুষের জন্য সহানুভূতি তাঁকে মানবতা শান্তি, স্বাধীনতা ও ঐক্যের নেতায় পরিণত করেছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নেলসন ম্যান্ডেলার মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও আমাদের শোষণ নির্যাতন থেকে মুক্তি ও স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। দেশের মানুষের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করতে গিয়ে তাঁরা দুজনেই জীবনের বড় অংশ কারাগারে কাটিয়েছেন।’

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুকে ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বারবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কারাগারে বসেই তিনি কয়েকটি বই লিখেছেন। তিনি বলেন, নেলসন ম্যান্ডেলা রচিত ‘লং ওয়াক টু ফ্রিডম’-এর মতো বঙ্গবন্ধু রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের ডায়েরি’তে শান্তি ও দেশের মানুষের জন্য তাঁর সংগ্রামের কথা উঠে এসেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আসুন, আমরা সকলে একসঙ্গে কাজ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে তাঁর আত্মাকে শান্তিতে থাকতে দিই।’

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close