• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা, আসামি যারা

প্রকাশ:  ১০ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:২৬
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফাইল ছবি

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা দুই মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ (বুধবার)। এর ফলে এ মামলার বিচার চেয়ে ১৪ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর পুরান ঢাকায় ১ নম্বর অস্থায়ী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিন রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এদিন ধার্য করেন।

রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে কড়া নিরাপত্তা নেয়ার কথা জানিয়েছেন পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, কোনো স্বার্থান্বেষী মহল সহিংসতার চেষ্টা করলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে।... এ রায়কে কেন্দ্র করে নিরাপত্তাজনিত কোনো হুমকি ও নিরাপত্তা বিঘ্ন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এই এক যুগেরও বেশি সময় ধরে নিহতদের স্বজন আর আহতরা অপেক্ষা করে আছেন, তারা পাবেন ন্যায়বিচার, শাস্তি হবে দোষীদের।

বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে মর্মান্তিক হামলাগুলোর একটি ঘটে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। প্রকাশ্য জনসভায় গ্রেনেড হামলা চালিয়ে সে সময়ের বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টায় চালানো এই হামলায় প্রাণ হারায় ২৪ জন। আহত হয় কয়েকশ।

তবে এর বিচার শুরু করাটা সহজ ছিল না। বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে হামলাকারীদের বাঁচিয়ে নিরীহ জজ মিয়াকে ফাঁসানোর চেষ্টাই ছিল এর কারণ। তবে বিএনপির শাসনামল শেষ হওয়ার পর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অথিকতর তদন্তে খোলে মামলার জট।

তবে অধিকতর তদন্ত হয় আরও এক দফা। ২০০৯ সালে শুরু হওয়ার পর দুই বছর তদন্ত শেষে ২০১১ সালে জমা পড়ে তদন্ত প্রতিবেদন। আর এক বছর পর শুরু হয় বিচার।

২০০৪ সালে ২১ আগস্ট হামলার পরদিন মতিঝিল থানার এসআই শরীফ ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে একটি মামলা (নং-৯৭) করেন।

এরপর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দুই বছর, ২০০৭ থেকে ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুই বছর এবং ২০০৯ থেকে ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আরও দুই বছর চলে অধিকতর তদন্ত।

এর মাঝে বিশেষ করে বিএনপি সরকারের দুই বছর তদন্ত নিয়ে ঘটেছে নানা ঘটনা। তখন সাজানো হয় জজ মিয়া নাটক।

সব মিলিয়ে এই মামলার আসামি মোট ৫২ জন। তবে জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদসহ তিন জন আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে অন্য মামলায়। ফলে ৪৯ জনের বিষয়ে আদেশ দেবেন বিচারক।

এই আসামিদের মধ্যে যেমন প্রকাশ্যে হামলায় জড়িতরা আছেন, তেমনি হামলা পরিকল্পনা, আসামিদের বাঁচিয়ে দেশ ছাড়তে সহযোগিতা করা, তদন্তকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে নানা চেষ্টায় জড়িতরা আছেন।

উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে আছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিণ্টু, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য শোহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউক, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, জোট সরকার আমলের তিন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, এএসপি আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমান, পুলিশের সাবেক তিন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহুদুল হক, আশরাফুল হুদা, খোদা বখ্স চৌধুরী।

আসামিদের মধ্যে ১৮ জন পলাতক এবং ৩১ জন কারাগারে আছেন।

/এসএম

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close