• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

সেই চোখ হারানো ২০ জনকে ক্ষতিপূরণ দিলো ইমপ্যাক্ট কর্তৃপক্ষ

প্রকাশ:  ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ১৫:৪২
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

চুয়াডাঙ্গা ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের চক্ষু শিবিরে গিয়ে চোখ হারানো ২০ জনকে ক্ষতিপূরণের সর্বমোট ১ কোটি টাকার চেক দিয়েছে ইমপ্যাক্ট কর্তৃপক্ষ।

উচ্চ আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে আদালতের নির্দেশে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা.খায়রুল আলম ২০ জনের হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেন।

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা.খায়রুল আলম জানান, উচ্চ আদালতে ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিটকারীর পক্ষে শুনানী শেষে গত ২১ অক্টোবর আদালত আদেশ দেয় যে, আগামী এক মাসের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টার ও অস্ত্রোপাচারে ব্যবহৃত ভারতের ঔষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আইরিশ কোম্পানীকে ৫ লাখ করে মোট ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ১৭ জনকে দিতে হবে। এছাড়া চোখ হারানো ১৭ জন ও অস্ত্রোপাচারের পর সংক্রমণের শিকার আরো ৩ জন রোগী মোট ২০ জনকে আজীবন বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসা দিতে হবে।

চুয়াডাঙ্গা ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারকে নির্দেশ দেয়া হয় যে, ওই ২০ জনের চোখের চিকিৎসা ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের বাইরে অন্য কোন হাসপাতালে হয় তাহলে কর্তৃপক্ষকে ওই ব্যয়ও বহন করতে হবে। ক্ষতিপূরণের টাকা চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনের মাধ্যমে পরিশোধ করে সে সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে হবে।

আদালতের আদেশ অনুযায়ী ১৭ জনকে এবং মানবিক কারণে ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন আরো ৩ জনকে ৫ লাখ করে টাকার চেক হস্তান্তর করেছে বলে জানান ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশনের প্রশাসক ডাঃ সাইফুল ইমাম।

এরা হলেন, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা গ্রামের লাল মোহাম্মদ, একই উপজেলার রংপুর গ্রামের এখলাস আলী, সোনাপট্টীর অবনী দত্ত, এনায়েতপুর গ্রামের মীর ইয়াকুব আলী, কুটিপাইকপাড়ার যমুনা বালা ওরফে উষা রানী, স্টেশনপাড়ার কুটিলা খাতুন, মোড়ভাঙ্গা গ্রামের আহম্মেদ আলী, খাসবাগুন্দা গ্রামের খোবিরোন নেছা, নতিডাঙ্গা গ্রামের ফাতেমা খাতুন ও হারদী গ্রামের হাওয়াতন নেছা, সদর উপজেলার আলুকদিয়া গ্রামের ওলি মুহাম্মদ, একই উপজেলার গাইদঘাট গ্রামের গোলজার হোসেন, দামুড়হুদা উপজেলার সদাবরী গ্রামের হানিফা খাতুন, একই উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের তায়েপ আলী, মদনা গ্রামের মধু হালদার, বড়বলদিয়া গ্রামের আয়েশা খাতুন, কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের গোলজান খাতুন, মজলিসপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম, চিৎলা গ্রামের নবিছদ্দিন ওরফে নবী ও জীবননগর উপজেলার সিংনগর গ্রামের আজিজুল হক।

গত ২০১৮ সালের ৪ মার্চ চুয়াডাঙ্গা ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের চক্ষু শিবিরে ২৪ জন নারী-পুরুষের চোখের ছানী (ফ্যাকো) কাটা হয়। ওই অস্ত্রোপাচারের দায়িত্বে ছিলেন চিকিৎসক মোহাম্মদ শাহিন। অস্ত্রোপাচারের পর দিন রোগীদের চোখে সংক্রামণ দেখা দিলে তাদের চোখ জ্বালাপোড়া করলে তারা ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশনে আসলে তারা বিষয়টিতে প্রথমে কোন গুরুত্ব দেয়নি।

পরে ওই রোগীদের তারা একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। ওই বিশেষজ্ঞ রোগীদের দ্রুত ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরই মধ্যে ৩ জন রোগী নিজ উদ্যোগে তাদের স্বজনদের নিয়ে ঢাকায় যায়। পরে ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন থেকে ১২মার্চ এক সঙ্গে ১৬ জন রোগীকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। দেরী হয়ে যাওয়ায় ১৯ জন রোগীর একটি করে চোখ তুলে ফেলতে হয়। আরেক নারীর বাম চোখ অস্ত্রোপাচারের মাধ্যমে ভাল হয়। তবে দ্বিতীয় দফায় অস্ত্রোপাচারেও তার দৃষ্টি শক্তি ফিরে আসেনি। পরে ২৯ মার্চ জাতীয় দৈনিকে ‘চক্ষু শিবিরে গিয়ে চোখ হারালেন ২০ জন!’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে সংবাদটি যুক্ত করে আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত উচ্চ আদালতে রীট আবেদন করেন।

/পি.এস

চুয়াডাঙ্গা,চোখ হারানো
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close