দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে সুজনের সংশয়
দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন।
সোমবার (১৯ নভেম্বর) সকালের জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে সংবাদ সম্মেলনে এ সংশয়ের কথা জানান সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।
সম্পর্কিত খবর
তিনি বলেন, এই নির্বাচন আগের মতোই দলীয় সরকারের অধীনে হচ্ছে। সরকার মানে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দলীয় সরকারের অধীনে যেসব নির্বাচন হয়েছে তখন দেখা গেছে, যে সরকার ক্ষমতায় ছিল তারাই আবারও ক্ষমতায় ফিরে এসেছে। তাই এ নির্বাচনও সংশয়মুক্ত নয়। এখানে ঝুঁকি থেকেই যায়।
বদিউল আলম বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার মূল দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তাই সতর্ক থাকতে হবে সাম্প্রতিক কয়েকটি নির্বাচনের মতো নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। ইসিকে আইনি ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে নৈতিকতা ও সাহসিকতার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোনও ধরনের অনিয়মের ঘটনা দৃষ্টিগোচর হলে, অভিযোগ দায়েরের অপেক্ষা না করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি কোনও অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। মনে রাখতে হবে সুষ্ঠু , শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের নির্লিপ্ত থাকার সুযোগ নেই।
সুজন সম্পাদক বলেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হচ্ছে দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়। সাম্প্রতিক অনুষ্ঠিত কিছু নির্বাচনে প্রশাসন তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়ায় প্রশাসন তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রভাবিত হওয়ার ঝুঁকি আরও বেড়ে গেছে। তাই এব্যাপারে কমিশনকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এর পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে মনে রাখতে হবে, আগামী নির্বাচন হচ্ছে সংসদ বহাল রেখে। এই নির্বাচনে কোনও কোনও প্রার্থী মন্ত্রী বা সংসদ সদস্যের অবস্থান থেকে ভোট চাইবেন। আবার কেউ কেউ ভোট চাইবেন সাধারণ প্রার্থীর অবস্থান থেকে। তাই সতর্ক থাকতে হবে মন্ত্রী বা সংসদ সদস্যরা যেন নির্বাচনি আচরণবিধি যথাযথভাবে মেনে চলেন এবং তারা যেন পদের প্রভাব দেখাতে না পারেন।
তিনি বলেন, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে বলা যায় রোল মডেল। নির্বাচন কমিশনের হাত লম্বা। তারা চাইলে করতে পারে। তারা সাংবিধানিক পদে নিয়োজিত। সুষ্ঠু নির্বাচন করা তাদের দায়িত্ব।
সংবাদ সম্মেলনে একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার আহ্বান জানায় সুজন।
এ লক্ষ্যে তারা নির্বাচন কমিশনের প্রতি ১৬ দফা প্রস্তাব করেছেন।
একইভাবে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি তিন দফা, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি তিন দফা, মন্ত্রী ও সাংসদদের প্রতি তিন দফা, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি তিন দফা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি সাত দফা, গণমাধ্যমের প্রতি চার দফা, প্রার্থী ও সমর্থকদের প্রতি চার দফা এবং ভোটারদের প্রতি তিন দফা প্রস্তাব করেছে সুজন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০১৮ সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সুজন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সুজন মহানগর ইউনিটের ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্যামেলিয়া চৌধুরী, সুজনের মিডিয়া সমন্বয়কারী শামীমা মুক্তা প্রমুখ।
/এসএম