রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার ৩৬ বছর
রাজনীতিতে ৩৬ বছর পূর্ণ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গত ৩ জানুয়ারি রাজনীতি জীবনের ৩৬ বছরে পা রেখেছেন তিনি।
শুক্রবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ৩ জানুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৩৬ বছরের রাজনৈতিক জীবন পূর্ণ হলো। ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির প্রাথমিক সদস্য হিসাবে দলে যোগ দেন। এর দুই মাসের মধ্যে গণতন্ত্র হত্যা করে হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ সামরিক শাসন জারি করেন। আবার বন্ধ হলো বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের প্রবর্তিত বহুদলীয় গণতন্ত্রের এগিয়ে যাওয়া। কণ্ঠরোধ করা হলো জনগণের। জাতীয় জীবনের ওপর দুঃসময় নেমে এলো। এইরকম এক ক্রান্তিকালে শুরু হলো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন। সেই আন্দোলনে বেগম জিয়ার অবদান বীরুত্বগাঁথা।
সম্পর্কিত খবর
তিনি বলেন, সেই সময়ে নিরবিচ্ছিন্ন সংগ্রামে তিনি (বেগম খালেদা) জাতীয় রাজনীতির মঞ্চে একক ও অনন্য নেতৃত্বে সুপ্রতিষ্ঠিত হন। দীর্ঘ ৯ বছরের সংগ্রামে, সংকটে আপোষহীন ধারায় জনগণের সঙ্গে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। শুরু হয় গণতন্ত্রের পথ চলা।
রিজভী বলেন, দেশি-বিদেশি চক্র এই মহান জাতীয়তাবাদী নেত্রীর উত্থান সহ্য করতে পারেনি। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রকে যিনি আগলে রেখেছিলেন অতন্ত্র প্রহরীর মতো, তাকে পর্যুদস্ত করার জন্য চক্রান্তকারীরা চক্রান্তের জাল বুনতে থাকে। ভোটারশূন্য নির্বাচনে বিদেশি মদদপুষ্ট অগতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী শক্তি গণতন্ত্রকে দাফন করতে বেগম জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটকে রেখে জুলুমের পর জুলুম চালিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, তার (খালেদা জিয়া) ৩৬ বছরের রাজনৈতিক জীবনে দেশ ও জাতির প্রতি অবদানের জন্য আমরা আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা তার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
তিনি বলেন, ৭ দিন পরপর আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে তার দেখা করার কথা। অথচ বেগম জিয়ার জন্য কারা কর্তৃপক্ষ ১৫ দিন পরপর সাক্ষাতের বিধান করে। এবার ২০-২১ দিন অতিবাহিত হলেও দেশনেত্রীর সঙ্গে তার আত্মীয়-স্বজনদের সাক্ষাৎ করতে দেয়া হয়নি। দলের সিনিয়র নেতারা ও দেশনেত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা বিগত চারমাস যাবৎ বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বেগম জিয়ার ওপর সরকারি জুলুমের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ আঁচ করতে না পারলেও তা যেকোনো মুহূর্তে প্রবল ঘূর্ণিতে টর্নেডোর আঘাত আসবে তা তারা টের পাচ্ছে না। দেশ ও জাতির প্রতি এত বড় প্রতারণা ও জালিয়াতির জন্য জনগণের আদালতে প্রকাশ্যে এগুলোর বিচার একদিন হবেই।
প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের প্রেক্ষিতে সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়। তিনি বর্তমানে নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাবন্দি আছেন।
/পিবিডি/আরাফাত