• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে মনোবিজ্ঞানীর তথ্য

আত্মঘাতির সংখ্যা বাড়ছে, ঝরে পড়ছে বছরে ১১ হাজার প্রাণ

প্রকাশ:  ২০ জানুয়ারি ২০১৯, ২০:৫৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশে প্রতি বছর ১১ হাজার আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। এই হিসাবে বছরে প্রতি জেলায় গড়ে ১৭২জন তাদের জীবন স্বেচ্ছায় বিসর্জন দিচ্ছে। জাপানে এক সময় আত্মহত্যার ঘটনা ঘটত খুব বেশি। গত দশ বছরে সে সংখ্যা কমে গেলেও বাংলাদেশে এ সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

রোববার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য প্রকাশ করেন বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের সহকারি অধ্যাপক মো. সেলিম চৌধুরী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে জেনেটিক হারে আত্মহত্যা বেড়েই চলেছে। এই প্রবণতা রোধে বিভিন্ন কৌশল ও পরিকল্পনা গ্রহন করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ‘অনীকদের জন্য উদ্যোগ’ শীর্ষক একটি সংগঠনের আহবায়ক সুভাষ চৌধুরী।

তথ্য উপাত্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, গত ২০১৮ সালে সাতক্ষীরা জেলায় ৩৬৭টি অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এই হিসাবে এই জেলায় দৈনিক একজনের অপমৃত্যু ঘটছে। আত্মহননকারীদের মধ্যে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এই তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নারী ও পুরুষ। এ প্রসঙ্গে আরও বলা হয় (১৯ জানুয়ারি) শনিবার সাতক্ষীরায় তিনটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। আত্মহননকারী তিনজনই বিভিন্ন কলেজের ছাত্রী। তুচ্ছ কারণে এসব আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। আমাদের ছেলে মেয়েরা অনেক কারণে হতাশা ও বিষন্নতায় ভোগে। তারা এর প্রতিবাদ অথবা প্রতিশোধ হিসাবে আত্মহত্যার মতো ক্ষতিকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আত্মহত্যা বা স্বেচ্ছামৃত্যু নিছক আবেগের কারণে হয়ে থাকলেও আত্মহত্যা কোনো প্রতিবাদ হতে পারে না। আত্মহত্যা কোনো প্রতিশোধ হতে পারে না। শিশু কিশোরদের এ ধরনের প্রবণতা থেকে সরিয়ে আনতে হলে সাসাজিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

প্রতিটি আত্মহত্যার নেপথ্য ঘটনা অনুসন্ধান করে তার প্রতিকারের উদ্যোগ নিতে হবে বলেও মত প্রকাশ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কেন এতো আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। অভিভাবকের আচরণ, শিক্ষা ব্যবস্থা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, লিঙ্গ বৈষম্য, সামাজিক অবক্ষয় নাকি অন্য কিছু তা তলিয়ে দেখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলা হয় এর থেকে পরিত্রানের পথ খুঁজতে হবে।

শিশুরা নানা কারণে বিষন্নতা ও আশাহীনতায় ভোগে জানিয়ে বলা হয়, শিশু কিশোররা মাদকের দিকে ঝুঁকছে কিনা তা দেখতে হবে। শিশুর মেধা বিকাশের স্বাভাবিক সুযোগ দিতে হবে। চাপ প্রয়োগ করে তার কাছ থেকে বেশি কিছু প্রত্যাশা করা ঠিক নয়।

এ নিয়ে সাতটি প্রস্তাবও তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে পাঠ্যপুস্তকে আত্মহত্যা বিষয়ক প্রবন্ধ লেখা, কাউন্সেলিং, গনমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশসহ নানা বিষয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন আত্মহত্যায় পুত্রহারা বাবা তালা কলারোয়া আসনের সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, তার সহধর্মিনী প্রধান শিক্ষিকা নাসরিন খান লিপি, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, ‘অনীকদের জন্য উদ্যোগ’এর সদস্য সচিব হাফিজুর রহমান মাসুম প্রমুখ।

এ সময় আরও দুই মনোবিজ্ঞানী আবদুল আওয়াল মিয়া ও সালমা আক্তারসহ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

/পিবিডি/একে

আত্মহত্যা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close