• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

কোটা সংস্কার সুপারিশ বাতিলের দাবি মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের

প্রকাশ:  ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৭:৪১
নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি চাকরিতে কোটা সম্পর্কিত সচিব কমিটির সুপারিশ অবিলম্বে বাতিলসহ সব গ্রেডে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রেখে প্রিলিমিনারি থেকে তা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানরা। শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে এসব দাবি জানায় তারা।

সমাবেশে তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে আন্তরিক। তবে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকর্তারা প্রতিটি পদক্ষেপে মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মানের ব্যাপারে সচেষ্ট। সচিব কমিটির সুপারিশ তারই একটি নতুন সংস্করণ।

মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা বলেন, সচিব কমিটির সুপারিশের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে জামায়াত-শিবির কর্মীরা মিষ্টি বিতরণ করেছে। প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা স্বাধীনতাবিরোধীরা চায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা যাতে সারাজীবন পিয়ন, দারোয়ান ও সুইপারের মতো নিম্নপদে চাকরি করে। তাদের দাবি মেনে নিলে স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে।

তারা বলেন, জাতির পিতা হত্যার পর থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র হয়েছে। পরবর্তীতে ২০০১ সালের পর মুক্তিযোদ্ধা কোটা আবারো ষড়যন্ত্র হয়। এভাবে ২৯ বছর কোটায় কোনো মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের চাকরি হয়নি। বরং মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে। কোটা সংস্কার বা বাতিলের আগে এ ২৯ বছরের হিসাব দিতে হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানের দিকে তাকিয়ে হলেও কোটা বহাল রাখা জরুরি।

সমাবেশে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্বারকলিপি প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে সকাল সাড়ে ১০টায় এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে স্বারকলিপি দেয়ার কর্মসূচি পালনে আহ্বান জানানো হয়।

সমাবেশে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা ৯ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো-

১. জাতির পিতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তিকারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

২. বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতিসহ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন করতে হবে।

৩. ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রেখে তা বাস্তবায়নে কমিশন গঠন করে প্রিলিমিনারি থেকে কোটা শতভাগ বাস্তবায়ন করতে হবে।

৪. মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চলমান সব নিয়োগ কার্যক্রম অব্যাহত রাখাসহ মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কোটার শূন্য পদ সংরক্ষণ করে বিশেষ নিয়োগের মাধ্যমে তা পূরণ করতে হবে।

৫. ১৯৭২-২০১৮ পর্যন্ত ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় শূন্য পদগুলোতে চলতি বছরেই নিয়োগ দিতে হবে।

৬. বীর মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন প্রবাসী সরকারের প্রথম সেনাবাহিনী। তাই তাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে পেনশন, বোনাস, রেশনসহ সব সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

৭. রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে স্বাধীনতাবিরোধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্তসহ তাদের উত্তরসূরীদের চাকরিতে অযোগ্য ঘোষণা এবং জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

৮. ঢাবি ভিসির বাসভবনে হামলাসহ দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী স্বঘোষিত রাজাকারদের কঠোর শাস্তি এবং

৯. মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ অন্য সবার চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা তুলে দিতে হবে।

সংগঠনের সভাপতি মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং কোষাধ্যক্ষ ও দফতর সম্পাদক আহমেদ রাসেলের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, শহীদ সংসদ সদস্য নুরুল হক হাওলাদারের কন্যা ও সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য জোবায়দা হক অজন্তা, সহ-সভাপতি ওমর ফারুক সাগর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আনিসুর রহমান মোল্লা, আজহারুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, জোবায়েদ আলম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি কেএম আবদুল্লাহ সোহাগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অনলাইন কমান্ডের সভাপতি নাজমুল হক, সাধারণ সম্পাদক লামিয়া খানম, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান প্রজন্ম পরিষদের সদস্য সচিব কামরুজ্জামান শিমুল প্রমুখ।

/এসএম

কোটা,মুক্তিযোদ্ধা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close