• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

গুজবে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা নষ্ট হতে পারে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ:  ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৪:৫২ | আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৫:১১
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফাইল ছবি

গুজবে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা নষ্ট হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এজন্য জনগণকে গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে ‘গুজব বিরোধী জনসচেতনতামূলক বিজ্ঞান (টিভিসি)’ -এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে এ আহ্বান জানান তিনি।

স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেন, গুজব বা মিথ্যা তথ্য একটি দিয়াশলাইয়ের মতো। দিয়াশলাইয়ের কাঠি যেমন মুহূর্তের মতো বিশাল অগ্নিকাণ্ড ছড়াতে পারে, ভস্মীভূত করতে পারে -তেমনি একটা গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে সামাজ ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে ছোট ছোট স্কুলের ছেলে মেয়েরা রাস্তায় নেমে এসেছিল। যদিও তারা একটা সঠিক কারণেই রাস্তায় নেমেছিল। কিন্তু সেটাকে গুজব রটিয়ে ভিন্ন খাতে নেওয়ার অপচেষ্টা আমরা দেখেছি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, যারাই গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছে ও চেষ্টা করছে তাদের আমরা চিহ্নিত করেছি। তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেবো।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে আমরা অনেক দূর চলে গেছি। শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামের সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। এর সুফলের সাথে সাথে কুফল বা অপব্যবহারও করা হচ্ছে। সমাজ ব্যবস্থায় অতীব গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা। সাধারণ জনগণের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কে রেখে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এ ক্ষেত্রে সফলতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে র‌্যাব।

তিনি বলেন, অবাধ তথ্য প্রবাহের যুগে যোগাযোগ ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন ফলে বিশ্বে অভূতপূর্ব তথ্য বিপ্লব সাধিত হয়েছে। এটি যেমন সমাজে তথ্যের গতিশীলতা তরান্বিত করেছে তেমনি মিথ্যে তথ্য স্থিতিশীলতার জন্য হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।

র‌্যাবের সাইবার ক্রাইম সেল গঠন করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় সুযোগ সন্ধানী চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অরাজকতা তৈরি করে অপচেষ্টা করেছিল, যা ছিল আইনের দৃষ্টিতে দণ্ডনীয় অপরাধ। র‌্যাব ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই গুজব রটনাকারীদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, এখন আমাদের এমন একটি সময় আসছে, যে সময় গুজব রটনার একটি বিশেষ ক্ষেত্র তৈরি হয়ে যেতে পারে।

স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেন, আপনারা সবাই সোশাল মিডিয়ায় দেখেছেন যে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য ও ছবি আপলোড করা হচ্ছে। দেখলেও লজ্জায় মাথানত হয়। এটা দণ্ডনীয় অপরাধ, যারাই করুক তাদের আমরা চিহ্নিত করেছি এবং করছি।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমরা দেখেছি র‌্যাব জলদস্যু, বনদস্যু নির্মূলের কিভাবে কন্ট্রোল করেছে। জঙ্গি দমনে র‌্যাব প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। র‌্যাব জনগণের একটা আস্থার অর্জন করেছে। র‌্যাবের আগেও জঙ্গি বিরোধী টিভিসি তৈরি করে জনসচেতনতায় প্রচার করেছে।

অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, এখন সবার হাতে হাতেই স্মার্টফোন। সোশ্যাল মিডিয়া এমন হয়ে গেছে, যে লেখাপড়া জানে না সেও এটা ব্যবহার করছে। গুজব ছড়িয়ে রামুতে ভয়াবহ ঘটনা ঘটানো হয়েছে, ছাত্র আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। সচেষ্ট না হলে সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা বিনষ্ট করে দিতে পারে।

র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, গত দশ বছরে বাংলাদেশে একটা ইন্টারনেট বিপ্লব ঘটে গেছে। সাত কোটি মানুষ মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। কিন্তু আমরা দুঃখের সঙ্গে দেখছি এক শ্রেণির কুরুচির কতিপয় ব্যক্তি উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে গত তিন-চার মাস ধরে লক্ষনীয়ভাবে ইন্টারনেটে গুজব ছড়াচ্ছে।

তিনি বলেন, গুজব ছড়ানোর অপরাধে এ পর্যন্ত র‌্যাব ১৩২ জনকে গ্রেফতার করেছে। গতকাল রাতেও আমরা ছয়জনকে গ্রেফতার করেছি। এসব কর্মকাণ্ড যারা ঘটাচ্ছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আইনের আওতায় আনবই।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

পিবিডি/এসএম

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close