• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

গণমাধ্যমের ‘গণ’ শব্দটিই যখন আপত্তিকর

প্রকাশ:  ২৫ এপ্রিল ২০১৮, ১৪:৩৬
মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মজুমদার

বহু কথা প্রতিদিন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ কথাগুলো কি যাদের উদ্দেশ্যে বলা হয় তাদের কান পর্যন্ত কি পৌছায়। কাগজের আড়ালে ঢেকে যায় শহরের দেয়াল গুলো, কলকলিতে মাতামাতি পড়ে যায় টিভি গুলোতে, সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রোল পড়ে যায় খবরের কাগজ আদান-প্রদানে। কিন্তু রাজনীতিকরা কেন দেয়াল পড়বেন! তাদের পড়ার কথা বই, পত্র-পত্রিকা। পশ্চিমা বিশ্বে দেয়াল লিখন নেই। এটাতো এক ধরনের সামাজিক অপরাধ। যারা দেয়ালে নানা রকম ছবি আঁকে রাত্রি-নিশিতে তাদেরকে পুলিশ পেলে পাকড়াও করে। কারণ এরা পরিবেশ দূষণ করছে। এ ব্যাপারে রাজনীতিবিদ ও আমলারা খুবই সচেতন। কে কখন কোন রাস্তায় থু থু ফেললো সেদিকে তারা তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখেন। তাদের কথা হলো রাস্তায় এভাবে থু থু ফেলতে হবে কেন। এসব তো অভদ্র লোকজন করে থাকে। থু থু জমাট করে রাস্তায় ছেড়ে দিতে হবে। তাদের মত বিলাসবহুল গাড়ির আরোহী ও দৃষ্টিনন্দন ফ্লাটের বাসিন্দারা যা করে থাকে। তারা আবার পেশাদার গণমাধ্যমকর্মীদের উপদেশ দিতে আপোষ করে না। সার্বক্ষণিক উপদেশ দেয় নিরপেক্ষতা বজায় রাখার। নবীন গণমাধ্যমকর্মীরা এ নিরপেক্ষতার পারিভাষিক সংজ্ঞা না জেনে মাঝে মাঝে চরম ভূল করে ফেলে। যার গ্লানি টানতে হয় গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলকে। রাজনীতিবিদদেরও আবার ভরা ডুবি হয়। তাদের কখনও বসন্ত কাল থাকলেও কোন কোন সময় তাদের কনকনে শীতেও পড়তে হয়। যে পুলিশরা তাদের নিরাপত্তা দেয় তারাই আবার এক সময় কান ধরে শ্রীঘরে নিয়ে যায়। গণমানুষকে সন্তুষ্ট রাখা থেকে শুরু করে অনেক সংকীর্ণ কালও অতিক্রম করতে হয় রাজনৈতিক নেতাদের। প্রকাশিত হয়ে যায় তাদের অধিকাংশ দুর্নীতি। যদিও বিচারের ব্যাপারটা সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র।

কিন্তু আমলারা থাকে আমাদের দেশে মহা রাজত্বে। নীরবে নিভৃতে তারা তাদের স্বার্থ লুটে নেয়। গণমানুষের সেবার কাজে আত্মনিয়োগ করে এমন আমলার সংখ্যা হাতে গুনা কয়েকজন। আর ছটি আমলাদের দাপটের সীমা তো মহাশূণ্যের ন্যায়। তারা পল্লীর সাধারণ মানুষের উপর প্রভাব খাটিয়ে নীরবে উদ্দেশ্য আদায় করে নেয়। পল্লীর সরল সহজ গণ মানুষরাও অধিকাংশ আইনের ব্যাপারে অজ্ঞ ও নিরক্ষর হওয়ার কারণে প্রতিবাদ করার সাহস পান না। পল্লীর গণ মানুষের কাছে পুলিশ, ম্যাজিট্রেড, কোর্ট শব্দ গুলো তো রীতিমত আতঙ্ক।

সম্পর্কিত খবর

    মফস্বলে কর্মরত আমলাদের কাছে গণমাধ্যমও অসহায়। অবশ্য এক্ষেত্রে পল্লী অঞ্চলে গণমাধ্যমের সীমাবদ্ধতার কথাও উল্লেখ করা যায়। গণমাধ্যমের সঠিক ব্যবস্থাপনা, দক্ষ গণমাধ্যমকর্মী ও প্রশিক্ষণের সীমাবদ্ধতাকে দায়ী করা যায়। আর পৃষ্ঠপোষকতা ও গণমাধ্যমের প্রতি নিরোৎসাহিত করণের ফলে এসব হয়।

    প্রতিনিয়ত মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষ বড় বড় দুর্নীতির ঘটনা জানতে পারছে। মানুষের মনে জিজ্ঞাসা, ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলে সরকার কেন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না। ইন্টারনেটের যুগে মুহূর্তের মধ্যে যে কোনো তথ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে। সুতরাং সরকার না চাইলেও বিশ্বের দরবারে নিজেদের ভাবমূর্তি নিয়ে জনগণ সহজেই ধারণা নিতে পারে। আবার সবসময় যে নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ পাচ্ছে ব্যাপারটা তাও নয়। ইতিবাচকও তো প্রকাশ পায়। এর মধ্য থেকেই দেশের ইমেজ নিয়ে সরকার ভাবতে তো পারে। ইমেজ সংকটে পড়ে থাকলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই তা সংশোধন করা যেতে পারে । সমালোচনা হলে তা তুলে ধরা দরকার। সমালোচনা বেঠিক হলে তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তারও জবাব দেয়া উচিত বলে মনে করে গণমানুষ। কিন্তু গণমাধ্যম নামে পরিচিত সংস্থা গুলোতে আলোচনা-সমালোচনার উপযোগী কোন প্রতিবেদন তো প্রাকাশ হয় না। বরং নির্দিষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠির প্রচার মাধ্যম হিসেবেই এগুলো ব্যবহার হয়।

    সাক্ষরতা একটি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার সঙ্গে সাক্ষরতার আর সাক্ষরতার সঙ্গে উন্নয়নের সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যে দেশের সাক্ষরতার হার যত বেশি সে দেশ ততো উন্নত এটি চিরন্তন ভাবে স্বীকৃত উক্তি। বাংলাদেশে কি তবে পরিকল্পিতভাবে মানুষকে অধিকার বঞ্চিত রাখতে নিরক্ষর করে রাখা হচ্ছে? বহু ক্ষেত্রে পরোক্ষভাবে তাই করা হচ্ছে। যা সাধারণত স্কুল মাষ্টাররা করে থাকে। অতিরিক্ত উপার্জনের লোভে। কিন্তু মাষ্টাদের নীতিটি গণমাধ্যম গুলোও চর্চা শুরু করে দিয়েছে। মানুষ ভাবছে তাদের ভবিষ্যতের কথা। তাই সুবিধাবাদী যারা যারা বিদেশে টাকা পাচার করে নিজেদের আখের গোছাতে চাইছেন তারা বিদেশে এসে কাজকর্ম করেই দেখুন এখানকার জীবন কত কষ্টের। সাধারণ মানুষের ভাগ্য লুট করে টিকে থাকা যাবে কি যাবেনা তার চেয়ে এ কথা আরও সত্য যে লুটের মাধ্যমে টিকে থাকা জীবনে সংসয় ও আতঙ্কের। প্রতিষ্ঠিত ফরমাল গণমাধ্যম ছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়া এখন মানুষকে সজাগ করে তুলছে। তা লুটপাটকারীদের জন্য অবশ্যই শুভ সংবাদ নয়।

    গণমাধ্যম গণমানুষের কথা পৌঁছে দেয় বৃহৎ পরিবেশ ও পরিধিতে। সম্প্রচার গণমাধ্যম এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করে থাকে। অন্যান্য খাতেহ যাই হোক, গণমানুষ ও গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নিরস নয়। গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের মালিকানা, মালিকপক্ষের আদর্শিক অবস্থান, দেশে প্রচলিত সরকার ব্যবস্থা, সামাজিক চিন্তাধারা ইত্যাদির উপর নির্ভর করে একটি জটিল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্প্রচার রোধকরা বা ব্রডকাস্ট নীতিমালা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

    পত্রিকার পাঠক, টিভির দর্শক, রেডিওর শ্রোতা- সব মিলিয়ে নিয়মিত গণমাধ্যম অনুসরণ করেন, এমন মানুষের সংখ্যা খুব সতর্কতার সঙ্গে করলেও কোটির বেশি হবে না। এই এক কোটি মানুষই ঘুরেফিরে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করে, কেউ মালিক হিসাবে, কেউ সম্পাদক হিসাবে, কেউ বিজ্ঞাপনদাতা হিসাবে, কেউ পাঠক বা দর্শক-শ্রোতা হিসাবে। হিসাবের বাইরে থেকে যায়, বাকি ১৫ কোটির অধিক মানুষ। তাদের আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্নার খবর গণমাধ্যম কখনও জানার প্রয়োজন বোধ করে না। ঝড়-বন্যা-সাইক্লোন-দুর্ঘটনা হলেই সেই সব মানুষের নাম পত্রিকায় উঠে আসে। পত্রিকা প্রকাশিত হয় নির্দিষ্ট পাঠক গোষ্ঠিকে মাথায় রেখে, টেলিভিশনের নীতিমালা তৈরি হয় টিআরপি বিবেচনায় রেখে। যারা কখনোই পত্রিকা পড়তে পারবে না, তাদের কথা লিখে পত্রিকা তাদের মূল্যবান স্পেস নষ্ট করবে কেন। যাদের টিভি দেখার সুযোগ নেই, তাদের কথা প্রচার করে কেন টিভি সম্রাটরা তাদের মহামূল্যবান এয়ারটাইম অপচয় করবে। যাদের ইন্টারনেট সুবিধা নেই, তাদের কথা পোস্ট করলে তো অনলাইনের হিট বাড়বে না।

    গণমাধ্যম গুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রেও দক্ষতা ও যোগ্যতার তোয়াক্কা না করে পরিলক্ষিত হয় ধর্মীয় বিশ্বাস ও রাজনৈতিক আদর্শের অবাধ বৈষম্য। যারা এসব বিবেচনায় সর্বদা ব্যস্ত থাকেন বিজ্ঞাপন ও আর্থিক অনুদানের বেলায় তারা নিরপেক্ষ বৈষম্যহীন ও ভয়ানক উদার হয়ে পড়েন।

    গণমাধ্যমের প্রধান দু’টি অংশ হলো সংবাদমাধ্যম ও চলচ্চিত্র। এরমধ্যে সংবাদমাধ্যম গুলোর অবস্থা করুণ। অধিকতর নিজের কর্মীদের জীবনমান। কারো কারো বেতন দেড় থেকে দু’হাজার টাকা। আবার কোন কোন প্রতিষ্ঠানে বেতন আটক থাকে বছরের পর বছর। কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসা ভাতার পরিবর্তে কর্তন করা হয় মৃত্যু যন্ত্রনায় ভোগা দিন গুলোর মজুরী। মাস শেষে বাড়িওয়ালার সঙ্গে ঝগড়া ও অভাব অনটনে পারিবারিক কলহ নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। সুন্দর পোশাকের আড়ালে খালি পেট আর শুকনো হাসিমাখা মুখটিই তাদের জীবন চলার পুঁজি। প্রতিষ্ঠানের লোকসানের কারণে যে এমন হয় তাও নয়। এটি হয় ইতর, ছোটলোক মালিকপক্ষের সেচ্ছাচারিতার কারণে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এগুলো করে নিজেকে সাংবাদিক দাবি করা গণ্যমাধ্যম মালিকরা। গণমাধ্যমের কোন কর্মী তাদের দুর্দশার খবর মালিকদের কাছে নিয়ে এলে তারা মাতাল হয়ে পড়ে। আবোল তাবোল এমন ভাবে আচরণ করতে থাকে তার সঙ্গে কথা বলার পরিবেশটিই নষ্ট করে দেয়।

    একদিকে তারা কর্মীদের উপর চালায় নীরব নির্যাতন আর অপরদিকে প্রতি সাপ্তাহে তাদের গাড়ীর মডেল পরিবর্তন করে, দেশে বিদেশে প্রতিমাসে তাদের নামে যুুক্ত হয় অভিজাত শ্রেণির ফ্ল্যাট। বছরে পৃথিবীর এমন কোন দর্শনীয় স্থান বাদ থাকে না তাদের অদেখা। রাষ্ট্রীয় বিজ্ঞাপন সুবিধা ভোগ করে , কদিন পর পর বিজ্ঞাপনের রেট পরিবর্তনের আবেদন করে এভাবেই চলে তাদের জীবন। অথচ কর্মীদের বেতন প্রদানের ক্ষেত্রে তারা রাষ্ট্রের কোন আইনের তোয়াক্কা করে না। নিয়োগের সময়ও এরা কোন কর্মীকে নিয়োগপত্র প্রদান করে না। নিয়োগপত্র ছাড়াই কাজে নেমে পড়তে বাধ্য করে কর্মীদের। যাতে কর্মীরা তাদের কোন আইনি জটিলতায় ফেলতে না পারে।

    পক্ষান্তরে চলচ্চিত্রে অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। সেখানে মালিকপক্ষ ও কর্মী দু’পক্ষের অবস্থাই সমান সমান। কোন কোন ক্ষেত্রে মালিক অথবা উদ্যোক্তা পক্ষ লোকসান গুনলেও সমান্তরাল থাকে পারফর্মকারীদের জীবন। অর্থ বৃত্তের কোন সংকট ও অধিকার হরণের কোন কলহও সেখানে নেই। চলচ্চিত্র পল্লীতে অর্থনৈতিক অধিকার হরণের কোন আর্তনাদ নেই।

    তাই মিডিয়া জুড়েই আলোচিত হয় উচ্চবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্তদের হৈ হুল্লোড়ের খবর। তাদের সাফল্য-ব্যর্থতা, হাসি-কান্না পত্রিকার পাতাজুড়ে, টিভির স্ক্রিনজুড়ে। আর পত্রিকা পড়ে, টিভি দেখে, এই এক কোটি মানুষকেই বাংলাদেশ ভাবা হয়। এর বাইরে রয়ে যাচ্ছে ১৫ কোটির অধিক মানুষ। কখনো তাদের কাছে পৌছানোর চেষ্টাও করি না। বাদ পড়ে যাওয়া মানুষের মধ্য থেকে একজন পাঠক বা দর্শক বাড়ানোর চেষ্টাটা যতটা কঠিন, তারচেয়ে অনেক সহজ এক কোটির মধ্য থেকে পাঠক বা দর্শক ভাগিয়ে আনা। তাই সকল মাতামাতি ১ কোটিকে নিয়ে।

    নির্বাচনের খবর আনতে আমরা দল বেধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাই; কিন্তু অনেক আগুন, অনেক ভাঙচুর, অনেক লাশ পড়ে যাওয়ার পর মাত্র সংখ্যালঘুর সাইনবোর্ডে মাত্র কয়েকটি স্থান পায় গণমাধ্যমে, তাও সেটি কতৃপক্ষ মার্কেটিং এর উদ্দেশ্যে করে থাকে। গ্রামে-গঞ্জে যত নির্যাতন, যত অত্যাচার, যত শক্তির দাপট, যত বাল্যবিয়ে, যত দরিদ্র কৃষক ও দিনমজুর দম্পতির ঝুলন্ত লাশের খবর আমাদের আড়ালেই থেকে যায়। অথচ অথচ অভিজাত হাসপাতালের মৃত্যুর খবর, রাস্তার ডিভাইডারের ঘর্ষণে কোটি টাকার গাড়ির কোথাও রং উঠলো কিনা, মন্ত্রীর মায়ের শাশুড়ির ভাইয়ের হজমশক্তি আগে তুলনায় সচল না বিকল হয়ে হয়েছে এ ধরণের খবর কোন গণমাধ্যমই মিস করে না। বাদ পড়ে না এমপির শালীর স্কুল জীবনের বান্ধবীর নরমাল ডেলিভারির খবরও।

    সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে বাংলাদেশে মূলত সার্বাধিক ফেসবুক জনপ্রিয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের শুরুতে ধারণা ছিল সামাজিক যোগাঐেঠগ মাধ্যম গণমাধ্যমকে অনুসরণ করবে। কিন্তু হয়েছে উল্টো, কখনো কখনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমই এখন কতৃত্ব করে গণমাধ্যমের উপর। ফেসবুকে কোনো নিউজ বা ভিডিও ভাইরাল হলে কয়েকদিন পর গণমাধ্যমে আরও মজবুত হয়ে বসে। যার কারণে টাকার কুমিরদের অভিজাত হোটেলে মদ্যপানের ঘটনা হয় গণমাধ্যমের মূল ধারার খবর।

    সিলেটে একজন কলেজছাত্রীকে তার কুপিয়েছে ক্ষুব্ধ প্রেমিক। সাধারণত এটি পত্রিকার ভেতরের পাতার ছটি সংবাদ। এমন সংবাদ প্রায়ই পত্রিকার ভেতরের পাতায় ছাপাও হয়। কিন্তু সিলেটের মেয়েটি হয়ে গেছে জাতীয় নায়িকা। তার চিকিৎসার ভার নিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। যার একমাত্র কারণই হলো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের সক্রিয়তা। এ ধরণের কোপা কুপির ছবি দেখেলেই আমাদের গণমাধ্যমের মানবতা জেগে ওঠে। শুধুমাত্র ফেসবুক ভিডিওর কারণেই সিলেটের রাজন হত্যার বিচার হয়। সুতারাং বর্তমানে যে ধরণের গণমাধ্যম আমাদের দেশে বিদ্যমান আছে সেগুলো না থাকলেও ১৫ কোটির অধিক মানুষের কিছু আসে যায় না। তাদের জীবনে বিন্দুমাত্রও প্রভাব নেই এসব ফরমাল গণমাধ্যমের। যার কারণে গণমাধ্যমের ‘গণ’ শব্দটিই এখন আপত্তিকর ও প্রয়োজনহীন হয়ে পড়েছে।

    লেখক: কবি, সাংবাদিক ও উপস্থাপক

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close