• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

ঝালকাঠিতে বিএনপির তিন চ্যালেঞ্জ

প্রকাশ:  ২০ জুলাই ২০১৮, ১৫:৩১
ঝালকাঠি প্রতিনিধি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অভ্যন্তরীণ তিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে ঝালকাঠি বিএনপিকে। এ নিয়ে চিন্তিত দলটির জেলা নেতৃবৃন্দ। বিএনপির তিন চ্যালেঞ্জ হল- মনোনয়ন বঞ্চিতদের ভোটের মাঠে নামানো, বির্তকিত সিন্ডিকেটের অনুপ্রবেশ ঠোকানো এবং শরিকদল জামায়াতের শর্ত পুরন। তা না হলে বিজয় অর্জন কঠিন হতে পারে বলে মনে করছেন দলটির নেতাকর্মীরা।

ঝালকাঠিতে দুটি সংসদীয় আসন যেখানে সবমিলিয়ে দলটির কমপক্ষে ১০ জন সক্রিয় মনোনয়ন প্রত্যাশি রয়েছেন। এর মধ্যে ৮ জন মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন। ভোটের মাঠে এই ৮ জনের ভূমিকা কি হবে তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে।

ঝালকাঠি-১ আসনে তিনজন মনোনয়ন প্রত্যাশি রয়েছেন। তিনজনের মধ্যে এখানে ব্যারিষ্টার এম শাহজাহান ওমর বীর উত্তম তার মনোনয়ন এক রকম নিশ্চিত। তবে তার বিরুদ্ধে দুদুকের মামলা রয়েছে। এই মামলার কারণে আইনগত জটিলতা সৃষ্টি হলে এ আসনে অপর দুইজন মনোনয়ন প্রত্যাশি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম আজম সৈকত অথবা সাবেক দলীয় প্রার্থী রফিকুল ইসলাম জামাল দলের মনোনয়ন পেতে পারেন। কিন্তু এরা মনোনয়ন পেলেও শাহজাহান ওমরের সমর্থন পাবেন কিনা সে বিষয় সন্দেহ রয়েছে। অন্যদিকে শাহজাহান ওমর মনোনয়ন পেলে এই দুইজন শাহজাহান ওমরের সাথে সহযোগিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন।

বিএনপির জন্য সমস্যার পাহাড় ঝালকাঠি-২ আসনে। এখানে ৭ জন মনোনয়ন প্রত্যাশির মধ্যে ঐক্য গড়া খুবই কঠিন। ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনয়নকে কেন্দ্র করেই মূলত জেলা বিএনপির গ্রুপিং। তাই এই আসনের মনোনয়ন বঞ্চিতরা দলের পক্ষে মাঠে নামবেন কিনা অথবা কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হবেন কিনা তা নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। এ কারণে এ আসনে ভোটের সময় দলীয় ঐক্য বজায় রাখার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে বিএনপিকে।

অন্যদিকে নির্বাচনের সময় বিএনপিকে আরো একটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। বিগত জোট সরকারের সময় ঝালকাঠিতে বিএনপির দুটি বির্তকিত সিন্ডেকেট গড়ে ওঠে। সে সময়ের আইন প্রতিমন্ত্রী ও ঝালকাঠি-১ আসনের সাংসদ ব্যারিষ্টার শাহজাহান ওমরকে কেন্দ্র করে একটি এবং ঝালকাঠি-২ আসনের এমপি ইসরাত সুলতানা ইলেন ভূট্টোকে কেন্দ্র করে আরো একটি সিন্ডিকেট টেন্ডার বাণিজ্য থেকে শুরু করে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পরে।

এদের কার্যকলাপে দলের ত্যাগি নেতা কর্মীরা কোনঠাসা হয়ে যায়। দুটি সিন্ডিকেটোর ৭/৮ জন বিএনপির সময় আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যায়। ১/১১র পরে বিএনপি যখন বিপর্যস্ত সে সময়ই এই সিন্ডকেটটি গা ঢাকা দেয়। অদ্যবধি এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা আর মাঠে নামেনি। আশংকা করা হচ্ছে নির্বাচনের সময় মনোনীত প্রার্থীদের পিছনে টাকা খরচ করে আবারো এই সিন্ডকেটটি মাঠে নামতে পারে।

যা সাধারণ নেতাকর্মীরা মেনে নিতে পারবে না এবং এ কারণে ভোটেও বিরুপ প্রভাব পরতে পারে। তাই এই বির্তকিত সিন্ডিকেট দুটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে জেলা বিএনপিকে।

এদিকে ভোটের সময় জোটের অন্যতম শরিকদল জামায়াত এবার বিএনপিকে শর্ত দেবে। কারণ জোটবদ্ধ নির্বাচন হলে ঝালকাঠির দুটি আসনে জামায়াত বিএনপির প্রার্থীকেই সমর্থন জানাবে। তবে সমর্থনের কিছু শর্ত থাকবে। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পরে ঝালকাঠি পিপি এবং জিপি পদ জামায়াতকে দিয়েছিলো বিএনপি।

জেলা জামায়াতের একটি সূত্র জানায়, ভোটের বাজারে তাদের অবস্থান যাই থাকুক বিএনপির নির্বাচন পরিচালনায় তাদের সুসংগঠিত কর্মীবাহিনী কাজ করবে।

এটা বিএনপির বিজয় অর্জনে সহায়ক হবে। তাই এবার জামায়াত বিএনপির কাছে স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে তাদের প্রার্থীদের পক্ষে জোটের সমর্থন চাইবে।

সূত্রটি জানায় জামায়াত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ঝালকাঠি সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, ঝালকাঠি পৌরসভার ১ নং ও ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে জোটের জোড়ালো সমর্থন চাইবে। এ শর্ত পুরন না হলে দলটির নেতাকর্মীরা স্বত:স্ফুর্তভাবে বিএনপির পক্ষে মাঠে নাও নামতে পারে বলে সূত্রটি জানিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নুপর বলেন, প্রথমত যে চ্যালেঞ্জের কথা বলা হচ্ছে সে বিষয় আমি বলতে চাই, অতীতের কোন নির্বাচনেই মনোনয়ন বঞ্চিতরা দলের পক্ষে কাজ করেনি। কিন্তু তাতে ভোটে কোন প্রভাব পড়েনি। দ্বিতীয়ত যে বির্তকিত সিন্ডিকেটের কথা বলা হচ্ছে সিন্ডিকেট এখন জনবিচ্ছিন্ন।

আর সিন্ডিকেট নিয়ে কেউ মাঠে নামলে তকে নেতাকর্মীরা বর্জন করবে। তৃতীয়ত জোটের শরিকদল জামায়াত শর্ত দিলেও ঝালকাঠিতে তাদের অবস্থান দূর্বল। তাই জামায়াতের শর্ত নিয়েও বিএনপি চিন্তিত নয়।

/পি.এস

ঝালকাঠি,বিএনপি
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close