ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা গণসংহতির
জাতীয় সংসদে সদ্য পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি এ ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, সংবাদ মাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার মানে হচ্ছে জনগণের কণ্ঠরোধ করা। জনগণের কণ্ঠরোধ করার সমস্ত ব্যবস্থা এ আইনে আছে। আমরা এ আইনের বিরুদ্ধে লড়ব। আমরা সকল গণতান্ত্রিক শক্তি, যারা বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে কাজ করে তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করে আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।
রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হাতিরপুলে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘সংবাদ মাধ্যম ও জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতাবিরোধী নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্পর্কিত খবর
জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার মনে করে তাদের পায়ের তলায় কোনো মাটি নেই। জনগণের সমর্থন তাদের নেই, জোর করে তারা জনগণকে শাসন করতে চায়। সেটার জন্য যত রকমের আয়োজন দরকার সমস্ত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আইনগুলো তারা তৈরি করে পরিবর্তন করছে।
তিনি বলেন, দুর্নীতির একটা বড় উৎস আমলাতন্ত্র, সেই আমলাতন্ত্রকে নানা ধরনের সুবিধা দেয়া হচ্ছে। আমলাতন্ত্র যেন এ দুর্নীতির অভিযোগে না পড়ে। তাদেরকে এ সুবিধা দেয়া হচ্ছে অফিশিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টের নামে। আইনগুলোকে এমনভাবে পরিবর্তন করা হচ্ছে যাতে করে আইনিভাবেই সকলকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, আজকে আইনের শাসন কথাটাকে নতুনভাবে ভাবা দরকার। কারণ, আইনের শাসন মানেই কিন্তু একটা ভালো শাসন নাও হতে পারে। আইন নিজেই যদি প্রবল অগণতান্ত্রিক, গণবিরোধী এবং কালাকানুন হয়। তাহলে অগণতান্ত্রিক আইনের শাসন হবে। আমাদেরকে একটা নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার জন্য লড়াই করতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একটা বড় ধরনের আঘাত হিসেবে রাষ্ট্র এবং জনগণের উপরে আসছে। বর্তমান সরকার একটা গোষ্ঠিগত শাসন কায়েম রাখার জন্য রাষ্ট্রের পত্তনের অঙ্গীকারের সম্পূর্ণ বিপরীতে গিয়ে জনগণের অধিকারগুলোকে সংকুচিত করছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন গণসংহতি আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল। তিনি বলেন, ঔপনিবেশিক শাসনের ভুত এখন স্বাধীন বাংলাদেশের শাসকদের মাথায় ভর করেছে। এই ঔপনিবেশিক আইন স্বাধীন দেশে অচল, তা গণতান্ত্রিক রীতি নীতির বিরুদ্ধে।
আরও বলা হয়, এ আইনের ৪৩ ধারা কার্যত একটা পুলিশি রাষ্ট্রকে আইনি বৈধতা দিয়েছে। আইনের ভেতরে এমন ব্যবস্থা রেখে দেয়া হয়েছে, যা কেবল শাসন ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বিরুদ্ধেই নয়, কার্যত দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের পথকেই প্রশস্ত করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার, ফিরোজ আহমেদ, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
/এসএম