এমপি পুত্রের বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মীদের জুতা মিছিল

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনির জনসভাকে কেন্দ্র করে গোপালপুর উপজেলায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মীরা এমপি পুত্র এবং মনোনয়ন প্রত্যাশী খন্দকার মশিউজ্জামান রুবেলের বিরুদ্ধে শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) রাতে পৌর শহরে জুতা মিছিল বের করে।

জানা যায়, গোপালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নামে গত ১৩ অক্টোবর উপজেলার হেমনগর কলেজ মাঠে এক নির্বাচনী জনসভা আহবান করা হয়। এতে প্রধান অতিথি করা হয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট মন্ত্রী ডাঃ দিপু মনিকে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সাংসদ খন্দকার আসাদুজ্জামান তার পুত্র খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেলকে ওই জনসভায় দলীয় প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা দেওয়ার বিষয় প্রচার হয়ে যাওয়ায় দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে কোন্দল দেখা দেয়।

পরবর্তীতে গত ১৬ অক্টোবর এবং ১৯ অক্টোবর জনসভার তারিখ দেয়া হলেও জেলা আওয়ামী লীগ কোন্দল ফয়সালা করতে অপারগ হওয়ায় তৃতীয় দফায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মতি ছাড়াই স্থানীয় সাংসদ খন্দকার আসাদুজ্জামানের একক সিদ্ধান্তে শনিবার (২০ অক্টোবর) জনসভার দিন ঘোষণা দেয়া হয়। এতে আওয়ামী লীগের অপর চার মনোনয়ন প্রত্যাশীর মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং উপজেলা চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার জানান, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগকে অন্ধকারে রেখে স্থানীয় সাংসদ খন্দকার আসাদুজ্জামান নিজ পুত্র মশিউজ্জামান রুমেলকে দলীয় প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা দেয়ার জন্য কৌশলে এ জনসভার আয়োজন করেছে। জনগণ এ ষড়যন্ত্রকে মেনে নেবে না। তাই আগামীকালের এ জনসভাকে দলীয় নেতাকর্মীরা প্রত্যাখান করেছে।

অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক তানভীর হাসান ছোট মনি জানান, স্থানীয় সাংসদ খন্দকার আসাদুজ্জামান জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগকে পাশ কাটিয়ে নিজের অযোগ্য পুত্রকে দলের প্রার্থী হিসাবে কৌশলে ঘোষণা দেয়ার জন্য একজন কেন্দ্রীয় নেত্রীকে মিসগাইড করে জনসভার আয়োজন করেছে। জনগণ এ ষড়যন্ত্রমূলক জনসভাকে প্রত্যাখান করেছে।

অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আশরাফুজ্জামান স্মৃতি জানান, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে এ জনসভা। এ জনসভায় কোন নেতাকর্মী অংশ নেবে না। জনসভার নামে নিজ পুত্রকে ঘোষণা দেয়ার এ চক্রান্তে কেউ অংশ নেবেনা।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হালিমুজ্জামান তালুকদার জানান, স্থানীয় সাংসদ এ জনসভা চাপিয়ে দিয়েছে। তাই দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ ও চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাতে স্থানীয় সাংসদ এবং তার পুত্রের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মীরা জুতো মিছিল করে প্রতিবাদ জানায়।

গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান আল মামুন জানান, জনসভাকে কেন্দ্র করে উত্তজেনার প্রেক্ষিতে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

/পি.এস