• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

লিখিত অনুমতি নিয়েই কেবল দ্বিতীয় বিয়ে!

প্রকাশ:  ৩১ অক্টোবর ২০১৭, ০০:৫১
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

সম্প্রতি বেড়ে গেছে দ্বিতীয় বিয়ের প্রবণতা। প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়েই হরহামেশাই ঘটছে দ্বিতীয় বিয়ের ঘটনা। তবে অনেক নারীর জানে না যে, প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, আর বিয়ে যদি করতেই হয় তবে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি আবশ্যক। প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করলে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে স্বামীকে।

মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১-এর ৬ ধারা মতে, দ্বিতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে সালিশি পরিষদের কাছে অনুমতি না নিলে বিয়ে নিবন্ধন হবে না। অনুমতির জন্য ফি দিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করতে হবে এবং আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিয়ের অনুমতি দিতে যেসব বিষয়ের প্রতি বিবেচনা করা হবে, তার মধ্যে অন্যতম হলো: ১. বর্তমান স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব, ২. শারীরিক মারাত্মক দুর্বলতা, ৩. দাম্পত্য জীবন-সম্পর্কিত শারীরিক অযোগ্যতা, ৪. দাম্পত্য অধিকার পুনর্বহালের জন্য আদালত থেকে প্রদত্ত কোনো আদেশ বর্জন, ৫. মানসিকভাবে অসুস্থতা ইত্যাদি।

সম্পর্কিত খবর

    দ্বিতীয় বিয়ে সম্পর্কে আইনে আসলে কী আছে। সে সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই বেশিরভাগ নারীদের। দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়ে সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও হাইকোর্টের সিনিয়ন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু।

    আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু বলেন, বিয়ে করতে হলে অবশ্যই প্রথম স্ত্রীর অনুমতি প্রয়োজন। প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া কোনোভাবেই দ্বিতীয় বিয়ে করা যাবে না। তবে যদি কেউ তা করে থাকে, তবে তার জন্য শাস্তি আবশ্যক।

    সালিশি পরিষদের অনুমতি

    স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা পৌরসভার মেয়র দুই পক্ষের প্রতিনিধি নিয়ে সালিশি পরিষদ গঠন করে থাকেন। সালিশি পরিষদের লিখিত অনুমতি নিয়েই কেবল দ্বিতীয় বিয়ে করা যাবে। সালিশি পরিষদে যদি বর্তমান স্ত্রী অনুমতি না দেন, তাহলে কোনোভাবেই দ্বিতীয় বিয়ে করা যাবে না।

    মামলা ও বিবাহবিচ্ছেদ

    কোনো স্বস্বামী যদি প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করেন তবে প্রধম স্ত্রীর আশু বা বিলম্বিত দেনমোহরের সম্পূর্ণ টাকা তৎক্ষণাৎ পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া প্রথম স্ত্রী আদালতে মামলা করে বিবাহবিচ্ছেদ করতে পারেন।

    প্রথম স্ত্রী ও সন্তানের ভরণপোষণ

    দ্বিতীয় বিয়ে করার কারণে প্রথম স্ত্রী যদি সন্তানদের নিয়ে আলাদাভাবে বসবাস করেন তবুও স্বামীকে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণ দিতে হবে। স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণ দিতে স্বামী আইনত বাধ্য থাকিবে। ভরণপোষণ ছাড়াও স্ত্রী ও সন্তানরা উত্তরাধিকারীর অধিকার লাভ করবেন এবং মোহরানার টাকা পরিশোধ করা না হলে বকেয়া ভূমি রাজস্ব আদায়ের মতো আদায় করা হবে।

    এক বছর পর্যন্ত জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা

    দ্বিতীয় বিয়ের পরে স্বামী যদি তার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের দায়িত্ব পালন না করেন এবং তিনি যদি দোষী সাব্যস্ত হন, তবে এক বছর পর্যন্ত জেল ও ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।

    আবার দণ্ডবিধি আইন ১৮৬০-এর ৪৯৪-এর বিধানমতে, স্বামী যদি স্ত্রীর জীবনকালে পুনরায় বিয়ে করেন, তবে সেই ব্যক্তি যে কোনো বর্ণনার কারাদণ্ডে যার মেয়াদ সাত বছর পর্যন্ত হতে পারে, তদুপরি অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন। তবে একটি বিষয় পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা উচিত, বহু বিয়ের মামলায় বাদীকে সফল হতে হলে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে, দ্বিতীয় বিয়ের সময় প্রথম বৈধ বিয়ের অস্তিত্ব ছিল।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close