একজন শীর্ষেন্দু হয়ে ওঠার গল্প
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। বাংলা সাহিত্যের এক প্রবাদপ্রতিম লেখক। বাংলা ভাষাভাষী পাঠকের কাছে জনপ্রিয়তায় শীর্ষে। গল্প-উপন্যাসে, আলাপে-আড্ডায়- মানুষ, সমাজ ও সভ্যাতার কথা বলেন তিনি। জনপ্রিয়তার জন্য লেখেননি কখনো, লেখাই তাকে জনপ্রিয় করে তুলেছে। মানুষ যখন ধর্মের কথা বলে মানুষ খুন করে, সহিংসতায় লিপ্ত হয়, কষ্ট পান তিনি। ধর্মের দীক্ষা, ইতিবাচক প্রভাব ফেলে তার লেখাতে। আজ তার জন্মদিন। ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর ময়মনসিংহে গ্রহণ করেন। ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর পূর্বপশ্চিমবিডি ডট নিউজের উদ্বোধনী আমন্ত্রণে বরেণ্য এই লেখক এসেছিলেন বাংলাদেশে। অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে কথা বলেছেন বিস্তর, পাঠক শুনেছেন মন্ত্রমুগ্ধের মতো। সেসময় পূর্বপশ্চিমবিডি ডট নিউজ তার একান্ত সাক্ষাৎকার নিয়েছিল। সাক্ষাৎকারে তিনি সাহিত্য, ধর্ম, মানুষ এবং বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলেছেন বিশদে।
পূর্বপশ্চিম বিডি ডট নিউজ: ২ নভেম্বর আপনার জন্মদিন। জন্ম তো বাংলাদেশেই, ময়মনসিংহে।
সম্পর্কিত খবর
পূর্বপশ্চিম বিডি ডট নিউজ: এই যে ড্রিম লাইফের কথা বললেন, সেটা কেমন ছিল- বিশদে বলবেন কী? শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়: ব্রহ্মপুত্র নদীর ধারেই ছিল আমাদের বাড়ি। এতো সুন্দর লাগতো! সামনেই ব্রক্ষপুত্র, আমাদের বাড়ি থেকে দেখা যেত নদীর বুকে নৌকা চলার দৃশ্যপট। বাড়িতে চারটে ঘর ছিল, আমার মনে আছে। আমরা বলতাম পুবের ঘর, পশ্চিমের ঘর, আর বড় ঘর। আমার ঠাকুরদা জমিদারের ছেলেকে পড়াতেন এক সময়, মুক্তাগাছার জমিদারের ছেলে। ওই জমিটা দাদুকে দিয়েছিলেন বসবাস করার জন্য।
পূর্বপশ্চিম বিডি ডট নিউজ: সেখানে কত বছর বয়স পর্যন্ত ছিলেন? শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়: বছর তিন-সাড়ে তিন পর্যন্ত টানা ছিলাম। তারপর ওইদিকে, মানে আমরা পশ্চিমবঙ্গে চলে গেলাম। তখন যুদ্ধ চলছে, সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ার। সেই থেকে ওইখানে অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে এক নতুন জগতের মধ্যে আমাদের পথ চলা শুরু। যেহেতু খুব ছোটবেলায় মাতৃভূমি ছেড়ে গিয়েছিলাম, তাই মাতৃভূমি ত্যাগের স্মৃতি আমার বাবা-দাদার মতো আমাকে পীড়িত করেনি। বেড়ে উঠতে উঠতেই আমার মায়ের কাছে গল্প শুনে শুনে আমার শৈশব স্মৃতিকে নতুন করে ভাববার সুযোগ পেয়েছি। মায়ের কাছে ময়মনসিংহ শহর, চারপাশের পরিবেশ ও প্রতিবেশিদের অনেক গল্প শুনেছি। সেই সব গল্প স্বপ্নের মতো, অর্থাৎ ভাবনাকে আলোড়িত করা ড্রিম লাইফের অংশ। আমার লেখা অনেক উপন্যাসের উপজীব্য সেই দিনগুলি নানা স্মৃতি। বাংলাদেশে যেহেতু জন্ম, এখানে আমি যতবার আসি, নিজেকে কখনো অতিথি মনে হয় না। মনে হয় যেন নিজের দেশেই এসেছি।