• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

তৌকীর আহমেদ, আপনি এটা কী বানালেন?

প্রকাশ:  ০৪ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৭:৪৩
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

যার বুকে ঢেউ থাকে, তার বুকে ভর...

জোয়ার-ভাটার খেলা, করে না তো পর...

সম্পর্কিত খবর

    জীবন নদীর মত ঢেউ থামে না,

    কেউ তার পার পায়, কেউ পায় না।

    আহা!! জীবন কত ভালোবাসা বাসি,

    নোনা জলে, নোনা জলে কত হাসাহাসি

    আহ! সারাদিন, প্রতিটি মুহূর্ত এ, এই গানটি আমার এখন সঙ্গী। পিন্টু ঘোষ এবং তৌকীর আহমেদ এর মন কাড়া কথা, পিন্টু ঘোষের আবেগী সুর এবং অবশ্যই নন্দিতা আর পিন্টু এর কণ্ঠ। ইশ!! বুক ভার করে দেয়। চোখে জল আনে। এত্ত ভালো গান!! আসলেই হয়? এখন??? অনেক অনেক শুভ কামনা।

    মানুষ যখন অবাক হয় তখন সে তার কথা এক্সপ্রেশন দিয়ে বোঝাতে পারে। মানুষ যখন সুন্দর সকাল দেখে, সূর্য দেখে, কিংবা রাতে ভরা পূর্ণিমা দেখে, কিংবা বৃষ্টি দেখে তখনও মানুষ লিখে, ভালোবেসে বলতে পারে!! কিন্ত মানুষ যখন সত্যিকারের বিস্মিত হয়, মানুষ তখন ভাষা হারিয়ে ফেলে।

    আসলেই ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না কী করে শুরু করবো! কী লিখব!! কারণ লেখা অনেক কঠিন একটি কাজ। আর হালদা নিয়ে লেখা আমার জন্যও বিস্ময়!!! হালদা দেখেছি প্রিমিয়ার শো এর দিন। ৩০ নভেম্বর, ২০১৭ বাসায় ফিরে একটা ঘোরের ভিতর থেকেছি।

    মাথা থেকে বের হচ্ছে না এক মুহূর্তের জন্য। তারপর আবারো দেখেছি ২ ডিসেম্বর... নাহ!! এইবার কিছু একটা লিখতেই হয়... তৌকীর আহমেদ, আপনি এটা কী বানালেন? কী নির্মাণ করলেন? আপনি নিজেও তা জানেন না। সত্যিই জানেন না!!

    কোনটা ছেড়ে কোনটা লিখবো!! বুঝতে পারছি না। কারণ, সত্যি আমি বিস্মিত। আজাদ বুলবুলের টান টান গল্পে কী ভীষণ সুন্দর সংলাপ, স্ক্রিপ্ট!! প্রত্যেকটি ফ্রেম ক্যানভাসের ছবির মত! যেন তুলি দিয়ে আঁকা হয়েছে। আপনার ডিরেকশন এ আপনার ডিওপী সোহেল দারুণভাবেই ভালোবাসা দিয়ে ধারণ করেছেন প্রতিটি সিকুয়েন্স। ধন্যবাদ তাকে।

    জাহিদ হাসানকে অনেক দিন পর আমার কাছে হ্যান্ডসাম লেগেছে। কারণ আমার কাছে "আগে দর্শনধারী, তারপর গুণ বিচারী" কী তার অভিনয়! মাঝে মাঝে তার বউ এর সাথে অভিনয় বুকে ভয় এনেছে। মনে হয়েছে এটা জাহিদ হাসান নন। তার প্রতিটি এক্সপ্রেশন পারফেক্ট। অভিনয় অসম্ভব সুন্দর, পরিমিত। তৌকীর আহমেদ আপনি এখানেও সফল। অভিনন্দন জাহিদকে।

    তিশার অভিনয় চোখ ভাসিয়ে দিয়েছে। এত ভালো অভিনয় এই মেয়েটি কী করে করলেন!! যেন সত্যি তিনিই হাসু! তার প্রেম, ভালোবাসা, ভয়, আবেগ, দায়িত্ববোধ সব সব তার চোখে মুখে স্পষ্ট। অভিনন্দন এই গুণী অভিনয় শিল্পীকে। তার অভিনয়, তার চোখের এক্সপ্রেশন আমার চোখ ভিজিয়েছে। অনেক মায়া লেগেছে তার জন্য।

    মোশারফ করিম। তাকে যখন আমি টেলিভিশনের বিভিন্ন নাটকে দেখি আমার মন খারাপ হয়। মনে হয়, এত্ত সিরিয়াস একজন তুখোড় অভিনয়শিল্পী আমাদের দেশের, তিনি কেন শুধু নামকাওয়াস্তে হাসির নাটকে অভিনয় করবেন! আজ তৌকীর আহমেদ আপনি পেরেছেন মোশারফ করিমের মত শক্তিমান অভিনয় শিল্পীকে দিয়ে সিরিয়াস চরিত্রে অভিনয় করাতে! ইশ! চোখ তো ঝাপসা হয়ে যাচ্ছিল বার বার। এই জায়গাতে আর কাকে মানাতো জানা নেই! অনেক গর্ববোধ করি। অভিনন্দন তাকেও।

    বড় বৌ রুণা খান। একদম একদম একদম পারফেক্ট কাস্টিং। মেকআপ গেটআপ পুরাই ঠিকঠাক। সংলাপ যখন বলছিলেন!! ও মাই গড! মাঝে মাঝে আমার ওকে সহ্য হচ্ছিল না। চোখে মুখে কষ্ট আর ঈর্ষা! যেন একটা জ্বলন্ত গোলা। ভীষণ ভালো করেছেন রুনা খান।

    এছাড়া দিলারা জামান, ফজলুর রহমান বাবু, শাহেদ আলী, সুজাত শিমুল এবং অন্যান্য সব সব সব্বাই অনেক অনেক অনেক বেশি ভালো করেছেন, এত ভালো করেছেন বোঝাই যায় এখানেও পরিচালোকের কড়া নজর ছিল।

    তৌকীর আহমেদ, পুরোটা হালদাই পারফেক্ট আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের একটি মিষ্টি প্রেমের ছবি। আপনি, আপনার কষ্ট স্বার্থক। এত কষ্টের ফল!! সিনেমা দেখে বোঝাই গিয়েছে, কতটা ভালোবাসা আর যত্ন দিয়ে মাখানো তার হালদা। আবহ সংগীত এর জন্য আবারো পিন্টু ঘোষকে ধন্যবাদ। আপনি জেনে বুঝেই আপনার কাজটি করেছেন। এডিটিং, কালার গ্রেডিং সব সুন্দর।

    স্যালুট টু ইউ তৌকীর আহমেদ। হালদা সারা বিশ্ব জয় করবে। আমি শিওর। এখনও সারা বাংলাদেশ এ হাউজফুল হচ্ছে ছবিটি। এটা অনেক ভালোলাগার। অনেক আনন্দের। অনেক বিস্ময়ের আমাদের জন্য এখনো।

    প্রযোজক ইব্রাহীমকে অজস্র ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা। যেন তিনি এইভাবেই ভালো নির্মাতাদের পাশে থাকেন।

    আবারো শুভ কামনা তৌকীর আহমেদকে। এইভাবেই জয় হোক বাংলাদেশের সিনেমার। প্রিয় পরিচালক, আপনাকে নিয়ে অনেক গর্বিত। আপনি এইভাবেই ভালো ভালো কাজ করে যান আর আমাদের দেশকে সারা বিশ্বের কাছে নিয়ে যান। আমাদের বাংলাদেশের প্রেমের ছবিকে ছড়িয়ে দিন সবার মাঝে!! অনেক ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা।

    (লেখিকার ফেসবুক পেইজ থেকে সংগৃহীত)

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close