৭১'র বীর শোনালেন সেই বীরত্বের কথা
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্বে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করা ভারতীয় সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল জে বি এস যাদব বাংলাদেশ পরিদর্শনে আসেন। পরিদর্শন শেষে সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকার হোটেল রেডিসনে এক সংবাদ সম্মেলন করেন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল জে বি এস যাদব বলেন, শেখ কামাল, খালেদ মোশাররফ, ক্যাপ্টেইন জাহাঙ্গীর ভারতীয় সেনাবাহিনীতে অংশগ্রহন করে এবং প্রশিক্ষন নেয়। ১৪ ডিসেম্বর সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনী মুক্তিযোদ্বাদের সহযোগিতা করে। এর ফলে পাকিস্তানের পরাজয় সম্ভাব্য হয়ে পড়ে। ১৫ ডিসেম্বর আই এন এস বিক্রান্ত বগুড়া, রংপুরের উত্তর সেক্টরের দায়িত্বে থাকে এবং পাকিস্তানের নৌবাহিনীকে রুখে দেয়। ১৬ ডিসেম্বর তারা আত্বসমর্পন করে। মুক্তিযোদ্বাদের সাথে একত্রিত হয়ে আমরা যুদ্ব করি। আমাদের এই সম্পর্ক চিরকাল থাকবে যা রক্তের এবং আত্বার সম্পর্ক। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী অনেক শক্তিশালী। তাদের বন্ধন অটুট। আমরা তাদের সাথে যুদ্বে অংশগ্রহন করতে পেরে গর্বিত।
সম্পর্কিত খবর
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ এখন স্বাধীন দেশ। বাংলাদেশের মানুষ খুব হাসি খুশি। তাদের অর্থনৈতিক শক্তি এবং উন্নতি ভারতের থেকে বেশী। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইউরোপসহ বিশ্বের উন্নত দেশে এখন তাদের মেধাবীরা উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখছে। সার্ক মুলত বাংলাদেশে অবদান। দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নে তাদের অবদান অনেক। প্রধানমন্ত্রী নিজ পরিবার হারানোর পরও বাংলাদেশের অগ্রগতি এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের এখন বড় চ্যালেঞ্জ কি, সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে বড় চ্যালেঞ্জ হল জঙ্গীবাদ। এর কোন পরিসীমা নেই। এটা কোন একটা দেশের যুদ্ব নয়। মুলত দেশের বাহিরের কিছু অপশক্তি জঙ্গীবাদ পরিচালনা করে। তারা দেশের তরুণদের ভুল পথে নিয়ে গিয়ে জঙ্গীবাদের মত সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে। জঙ্গীবাদ সারা বিশ্বের জন্য হুমকি। মুম্বাইতে জঙ্গী হামলায় ১জন জীবিত ধরা গিয়েছিল কিন্তু সেটা প্রায় কঠিন তাদের জীবিত গ্রেফতার করা।
এটাকে ইন্দো-পাক যুদ্ব কেন বলা হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা পরাজিত শক্তি তারা এটাকে ইন্দো-পাক যুদ্ব বলে থাকে। কিন্তু এটা ইন্দো-পাক যুদ্ব নয়। এটা মুলত মিত্র বাহিনীর সাথে পাকিস্তানের যুদ্ব। বাংলাদেশ থেকে আমাদের কাছে সহযোগিতা চাওয়ায় আমরা তাদের সাথে একত্রিত হয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্বে যুদ্ব করি। এবং ভবিষ্যতে যদি আবারো প্রয়োজন হয় আমরা বাংলাদেশকে ১৯৭১ এর মতই সাহায্য করবো।
কোন স্বরনীয় ঘটনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটা ঘটনা ছিল মহাস্থানে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী আমাদের সকল ট্যাঙ্ক ধ্বংস করে দেয়। আমরা কোন প্রকার দিকনির্দেশনা ছাড়াই ইছামতি নদী পার হই এবং আমাদের কেন্দ্রে যেতে সক্ষম হই। পরদিন সকালের দিকে আমরা তাদের আক্রমন করি। আরেকটি ঘটনা ছিল সার্কিট হাউজে তাজমুল মালিক পাকিস্তানের নেতৃত্বে ছিল এবং সে কোনভাবেই আত্বসমার্পন করতে চায়নি। সে নিজের কাপড় পরিবর্তন করে মালদা থেকে নেপাল হয়ে পাকিস্থানে যায়। সেখানে সে মুক্তিবাহিনী দ্বারা আহত হয়। তারা তার হাত পা ভেঙে দেয়। তাজমুল মালিক তখন হাত উচিয়ে তাকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিতে বলে এবং প্রানভিক্ষা চায়। তখন তাকে মুক্তি দেয়া হয় এবং সে প্রানে বেঁচে যায়।