• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

স্বামী কাটল চুল, শ্বশুর দিলো সিগারেটের ছ্যাঁকা

প্রকাশ:  ০২ জানুয়ারি ২০১৮, ১৬:২৭ | আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০১৮, ১৬:৩৮
নরসিংদী প্রতিনিধি

যৌতুকের টাকা না দেয়ায় গৃহবধূকে স্বামী, দেবর, শ্বশুর মিলে পাশবিক, নির্মম নির্যাতন করেছে নরসিংদীর রায়পুরায় জাহাঙ্গীনগর গ্রামে। মাথার চুল ও ভ্রু কেটে দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে দেয়া হয়েছে সিগারেটের ছ্যাঁকা।

অমানুষিক নির্যাতন ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতের সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে নির্যাতিতার পরিবার।ঘটনায় মঙ্গলবার নির্যাতিতা অথরা আক্তার ওরফে সুমি (২২) বাদী হয়ে স্বামী কবির মিয়া, শ্বশুর, শাশুড়ি দেবরসহ ৫ জনকে আসামি করে রায়পুরা থানায় মামলা করেছেন। তবে এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

সম্পর্কিত খবর

    নির্যাতিতার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ৬ বছর আগে রায়পুরার পলাশতলী ইউনিয়নের শাহর খোলা গ্রামের ব্যবসায়ী বাহার উদ্দিনের মেয়ে অথরা আক্তার ওরফে সুমিকে একই উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর গ্রামের হাসেম মিয়ার ছেলে কবির মিয়ার সঙ্গে বিয়ে দেয়া হয়। বর্তমানে তাদের সংসারে দু’টি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছু দিন পর থেকে রিকশা গ্যারেজের মালিক সুমির স্বামী কবির মিয়া যৌতুকের জন্য স্ত্রীর ওপর নির্যাতন শুরু করে। বিভিন্ন অজুহাতে যৌতুক এনে দেয়ার জন্য সুমিকে চাপ দেয় কবির মিয়া। পরে সুমি তার বাপের বাড়ি থেকে ৬০ হাজার টাকা এনে স্বামীর হাতে দেয়।

    সম্প্রতি কবির মিয়া ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করে। ঘর নির্মাণের জন্য স্ত্রীর কাছে তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। সুমী ওই টাকা দিতে অস্বীকার করলে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।

    এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার বিকেলে সুমিকে পুনরায় যৌতুকের টাকা আনতে চাপ দেয় স্বামী। টাকা দিতে অস্বীকার করলে স্বামী কবির মিয়া সুমিকে মারধর শুরু করে। এ সময় কেচি দিয়ে সুমির মাথার চুল কেটে দেয়া হয়। পরে তার দেবর চোখের ভ্রু কেটে দেয়। এ সময় শ্বশুর হাসেম মিয়ার হাতে থাকা সিগারেটের আগুন দিয়ে সুমির দুই হাতে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দেয়া হয়।

    স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও দেবরের অমানুষিক নির্যাতনের একপর্যায়ে সুমি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে বাপের বাড়ির লোকজন সুমিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

    নির্যাতিতা সুমি বলেন, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও দেবর যৌতুকের জন্য আমাকে নির্যাতন শুরু করে। ঘর নির্মাণের জন্য তারা ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। টাকা না দেয়ায় আমার ওপর নির্যাতন করে মাথার চুল কেটে দেয় এবং ভ্রুতে আগুনের ছ্যাঁকা দেয় তারা।

    সুমির বাবা বাহার উদ্দিন বলেন, মেয়ে সুখে ঘর করবে বলে বিয়ে দিলাম। কিন্তু সুখ হলো না। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর নির্যাতন সইতে হচ্ছে তাকে। মেয়েকে স্বামীর নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচাতে এ পর্যন্ত ৬০ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু তার স্বামী ঘর নির্মাণের জন্য ৩ লাখ টাকা দাবি করে। আমি কিভাবে দেব এত টাকা? এত টাকা আমার নেই।

    বিষয়টি নিশ্চিত করে রায়পুরা থানা পুলিশের ওসি দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

    /সাজিদ

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close