• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

সরি পৃথুলা, এ দেশের মানুষ বড্ড অকৃতজ্ঞ!

প্রকাশ:  ১৪ মার্চ ২০১৮, ১৫:১৫ | আপডেট : ১৪ মার্চ ২০১৮, ১৫:৩২
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

“তুমি বাংলাদেশের মানুষ? তোমরা বড় অকৃতজ্ঞ জাতি। যে মানুষটা তোমাদের মুক্তি এনে দিলেন, স্বাধীনতা এনে দিলেন আর তাকেই তোমরা হত্যা করলে?”

বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বিদেশের মাটিতে একদিন ইউরোপের এক এয়ারপোর্টে শেখ হাসিনা যখন সে দেশের ইমিগ্রেশন অফিসারের মুখোমুখি হলেন তখন শেখ হাসিনার হাতে বাংলাদেশের পাসপোর্ট ছিল। সেটি দেখেই ইমিগ্রেশন অফিসার ঘৃণাভরে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ কথাটি বলেছিলেন।

সম্পর্কিত খবর

    পৃথুলা রশীদ। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। চিল-ঈগলের মতো ডানা আকাশে উড়ে বেড়ানোর স্বপ্ন ছিল তার। তাইতো নিজেকে প্রতিষ্ঠিত বিমান চালিকা হিসেবে। ইউএস বাংলা এয়ার লাইন্সের প্রথম নারী পাইলট পৃথুলা ছিলেন গতকাল কাঠমন্ডুতে বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস বাংলার বিমানটির কো পাইলট। নেপালে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় তিনি পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। সে সাথে থেমে গেছে তাঁর পাখির মতো আকাশে উড়ে বেড়ানোর স্বপ্নও।

    শুধু আকাশে চষে বেড়ানোই নয় তার অন্তরটিও যে ছিল আকাশের মত বিশাল পৃথুলা চলে গেলেও বিদায় বেলা সেটি প্রমাণ করে গেছেন । নিজের জীবন যেখানে সংকটাপন্ন সেখানে পৃথুলা বাঁচিয়েছেন ১০ নেপালী যাত্রীর প্রাণ। তার ফলশ্রুতিতে নেপাল ও ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোশ্যাল সাইটে বীর ওই নারী পাইলটকে ‘ডটার অব বাংলাদেশ’ আখ্যা দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।

    কিন্তু তাতে কি হয়েছে পৃথুলা যে একজন নারী, তার বিমানের পাইলট হতে মানা সেটা হয়তো পৃথুলা জানতেন না। জানলে নিশ্চয় এমন কাজ করতেন না। পৃথুলার অমন কর্মে পুরো বিশ্ব বাহবা দিলেও আমাদের কিছু খাঁটি দেশপ্রেমিক ভাইয়ারা মনে করেন পৃথুলা নিজের দেশের মানুষদের না বাঁচিয়ে বড্ড পাপ করেছেন! নিজের দেশের তো ৩০ জনের মতো যাত্রী ছিল তাদের না বাঁচিয়ে তিনি কেনো ওই ১০ জন নেপালীকে বাঁচালেন। এই যারা কথাগুলো বলছেন এরা হয়তো জানেন না যে, ওর ভেতরে মনুষত্বটা তখন কাজ করেছিল জাতি ভেদাভেদ নয়।

    কারো কারো তো আবার ওর পাইলট হওয়া নিয়ে সমস্যা। একজন মেয়ে হয়ে পাইলট হয়েছে সে জন্যই তো বিমানটি দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি। কিন্তু তারা হয়তো জানেন না, এই পৃথুলা-নাবীলাদের জন্যই বাংলাদেশের মান বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। পৃথুলার মতো উদার মনের পাইলট ছিল বলেই দশটি তাজা প্রাণ মৃত্যুকে খুব কাছে থেকে দেখেও ফিরে আসতে পেরেছে।

    সরি পৃথুলা, এ জাতি বড্ড অকৃতজ্ঞ। তারা তোমাকে তোমার প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতেও হোঁচট খায়। পুরো বিশ্বে তোমাকে নিয়ে প্রসংশার জোয়ার ভাসলেও তোমার দেশের মানুষ তোমাকে নিয়ে উল্টো কথা বলতে পারে। লিঙ্গ বৈষম্য থেকে এ দেশ এখনো মুক্ত হয়নি। তাই দেশের মান রক্ষার্থে তোমার নিজের কুরবানীটা তারা মেনে নিতে পারে নি। ওপারে ভালো থেকো প্রিয় পৃথুলা রশীদ। সূত্র: বিডি২৪টাইমস

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close