• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

এমপি লতিফ এখন ‘মহিউদ্দিন গ্রুপে’

প্রকাশ:  ১৯ মার্চ ২০১৮, ০১:১৪ | আপডেট : ১৯ মার্চ ২০১৮, ০১:৩৬
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের সঙ্গে দূরত্ব তৈরির পর প্রয়াত সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন চট্টগ্রামের আলোচিত সংসদ সদস্য এম এ লতিফ। দীর্ঘদিন ধরে মহিউদ্দিনের বাসায় ‘নিষিদ্ধ’ থাকা লতিফকে রোববার তাঁর জেয়াফত অনুষ্ঠানে দেখা গেছে। লতিফ নিজেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি এখন মহিউদ্দিন গ্রুপে।

এদিকে মেয়র মহিউদ্দিনের মৃত্যুর পর চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগে নানা মেরুকরণের মধ্যে লতিফের ‘গ্রুপ বদল’ নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

সম্পর্কিত খবর

    রোববার (১৮ মার্চ) দুপুর পৌনে ২টার দিকে মহিউদ্দিনের বাসা নগরীর চশমা হিলের মেয়র গলিতে যান নগরীর বন্দর আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এম এ লতিফ। এসময় মহিউদ্দিনের ছেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে কিছুক্ষণ খোশগল্প করেন। আহার সেরে লতিফ সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন।

    লতিফ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ট্রেডবডি থেকে রাজনীতিতে এনেছেন। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে, সমাজকর্মী হিসেবে কাজ করার চেয়েও রাজনীতি করতে গেলে অনেক অভিজ্ঞতার দরকার হয়। আমার রাজনীতির বয়স মাত্র নয় বছর। আমার অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল। রাজনীতির অভ্যন্তরেও রাজনীতি থাকে। এতদিন সেটা বুঝতাম না।

    চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি পদে থাকা লতিফ ২০০৮ সালে আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী মহিউদ্দিনের ঘনিষ্ঠ খোরশেদ আলম সুজন। ২০১৬ সালে লতিফের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বিকৃতির অভিযোগ উঠার পর রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন সুজনের অনুসারীরা। এসময় সুজনের পক্ষ নিয়ে জনসভা করে মহিউদ্দিন লতিফকে লাঠিপেটার হুমকি দিয়েছিলেন।

    সেই মহিউদ্দিনের জেয়াফত অনুষ্ঠানে লতিফকে দেখা গেলেও সুজনকে দেখা যায়নি।

    মহিউদ্দিনের বাসায় যাওয়া প্রসঙ্গে লতিফ বলেন, আমি আগেও এসেছি। মহিউদ্দিন ভাই মারা যাবার পর উনার বাসায় এসেছি, জানাজায়ও গেছি। গ্রুপিংয়ের কারণে এতদিন মহিউদ্দিন ভাইয়ের বাসায় আসা বন্ধ ছিল, এটা অসত্য নয়। তবে আমি দেখছি মহিউদ্দিন ভাইয়ের দুই ছেলে নওফেল এবং সালেহীন দুজনই উচ্চশিক্ষিত। আচার-ব্যবহার খুব ভাল। তারা কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন না। কাউকে খাটো করে দেখেন না। যাদের জ্ঞানের গভীরতা কম, তারাই মানুষকে খাটো করে দেখে।

    সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে মেয়রের সঙ্গে দূরত্ব তৈরির কথা স্বীকার করেন লতিফ। তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগ করি। উনিও (মেয়র) আওয়ামী লীগ করেন। উনার সঙ্গে দূরত্ব তৈরির কারণ আমার কাছে পরিস্কার নয়। হয়ত উনি ভালো বলতে পারবেন। আর ব্যক্তিগত কারণে কেউ যদি দূরত্ব তৈরি করে সেটার দায়দায়িত্ব তো আমার নয়।

    চট্টগ্রাম বন্দরে আধিপত্য নিয়ে মেয়রের সঙ্গে লতিফের দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে দলের নেতাকর্মীদের ভেতরে গুঞ্জন রয়েছে। তবে এ বিষয়ে মেয়র নাছিরের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

    জানতে চাইলে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সারাবাংলাকে বলেন, আমি কোন মেরুকরণে নেই। উনিও মহানগর আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির মেম্বার। আমিও মেম্বার। আমরা কেন শত্রুতা তৈরি করব। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, সামনে নির্বাচন। জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রার্থী, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে হবে। নৌকা যিনি পাবেন, আমি তার পক্ষে।

    পটিয়ায় মহাসমাবেশ নিয়ে লতিফের ক্ষোভ:

    চট্টগ্রাম নগরীর বাইরে পটিয়া উপজেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহাসমাবেশ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন সংসদ সদস্য এম এ লতিফ। তিনি বলেন, শহর থেকে পটিয়ার দূরত্ব মাত্র ১৫ কিলোমিটার। এই মহাসমাবেশ শহরে হতে পারত। এটা আমরা যারা মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি, আমাদের ব্যর্থতা। আমি খুব আহত হয়েছি।

    তিনি বলেন, আজ মহিউদ্দিন ভাই বেঁচে থাকলে হয়ত তিনি নেত্রীকে বোঝাতেন। মহাসমাবেশ চট্টগ্রাম শহরেই করতেন। মহিউদ্দিন ভাইয়ের অনুপস্থিতির জন্যই আমরা সাফার করছি।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close