আঙুল কেটে দেয়া শিশুটির দায়িত্ব নিলেন পুলিশ সুপার
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের প্রকল্প কমিটির সভাপতি (পিআইসি) ও যুবলীগ নেতা আবদুল অদুদের বর্বরতার শিকার প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া সাত বছরের শিশু ইয়াহিনের চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব নিলেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ খাঁন।
গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর রোববার রাত ৮টার দিকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ওই শিশুটিকে দেখতে হাসপাতালে ছুঁটে যান পুলিশ সুপার।
সম্পর্কিত খবর
মানসিক বিপর্যস্ত মায়ের পাশে হাসপাতাল বেডে শয্যাশায়ী শিশু ইয়াহিনের মুখে পুলিশ সুপার শনিবার তার উপর চালানো নির্যাতনের ঘটনা শুনেন। এখনও আতংক কাটেনি তার।
শিশু ইয়াহিন জানায়, শনিবার বিকেলে হাওর রক্ষা বাঁধে খেলার ছলে সহপাঠিদের নিয়ে গড়াগড়ি দিচ্ছিল। এ ঘটনা দেখে ফেলেন অদুদ। তখন শিশুদের ধাওয়া করার এক পর্যায়ে অন্যরা দৌড়ে পালাতে পরলেও তাকে (ইয়াহিনকে) ধরে ফেলে মদ্যপ অবস্থায় অদুদ প্রথমে কয়েকবার মাটিতে আছড়ে ফেলেন। এরপর গলায় ধান কাটার কাস্তে (কাঁচি) ধরে তাকে জবাই করে মেরে ফেলার ভয়-ভীতি দেখান।
প্রাণভয়ে তখন ইয়াহিন অদুদের হাত-পা ধরে কান্নাকাটি করে ক্ষমা চাইলেও মন গলেনি তার। এরপর কাস্তে দিয়ে তার ডান হাতের একে একে তিনটি আঙুল কেটে দেন পাষন্ড অদুদ। অবুঝ শিশুর মুখে এমন বর্বর নির্যাতনের ঘটনা শুনে হাসপাতালে থাকা অন্য রোগী, তাদের স্বজন, গণমাধ্যমকর্মী এমনকি পুলিশ সুপার ও তার সহকর্মীরাও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।
এ সময় পুলিশ সুপার শিশু ইয়াহিন সুস্থ না হওয়া পর্য্যন্ত তার চিকিৎসার যাবতীয় ব্যায়ভার বহন ও আইনি সহায়তার ঘোষণা দিয়ে তার মা দিলরাজ বেগমের হাতে প্রাথমিক অনুদান হিসাবে নগদ ২০ হাজার টাকা, নতুন জামা কাপড় ও ফলের ব্যাগ তুলে দেন।
পুলিশ সুপার বলেন, এ ঘটনায় অন্য সবার মতো পুলিশ প্রশাসনের লোকজনও মর্মাহত। অদুদ যে লীগই হওক আর যতবড় প্রভাবশালীই হওক না কেন তাকে খুব দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের হাতে সোপর্দ করা হবে।