• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

কুলাউড়ায় শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, তদন্ততেই ঘুরপাক

প্রকাশ:  ২০ মে ২০১৮, ১৪:৩৬
এম এ কাইয়ুম (মৌলভীবাজার)

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের কেন্দ্র শিক্ষক নিয়োগে উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজার হাবিবুর রহমান কর্তৃক ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগের দীর্ঘ ৪ মাস কেটে গেলেও এর কোন সুরাহা হয়নি। এতে নিয়োগ পরীক্ষায় বঞ্চিতের শিকার পরীক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে এর প্রতিকার দাবি করে আসছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রগুলোতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য একটি লিখিত নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ওই নিয়োগ পরীক্ষা শেষে যাচাই বাছাই কমিটি ১৩টি স্থান ও কেন্দ্র শিক্ষক নির্বাচন করে ফলাফল ঘোষণা করে এবং এর একটি তালিকা উপজেলা প্রশাসনের দেয়ালে টাঙ্গানো হয়। যাচাই কমিটিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বী, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম মুসা ছিলেন।

এর ১ মাস পর উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজার হাবিবুর রহমান ১৩টি স্থান এবং কেন্দ্র শিক্ষকের পাশাপাশি আরও ১৭টি স্থান এবং কেন্দ্র শিক্ষক সংবলিত একটি তালিকা প্রকাশ করেন। যদিও এই তালিকার কেউ ওই নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। এতে নিয়োগ পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ অন্যান্যরা এর প্রতিবাদ করেন এবং বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩১ জানুয়ারী নিয়োগে অনিয়ম এবং দুর্নীতির বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন শিল্পি বেগম।

পুরনো কেন্দ্র থাকলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ নতুন শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন। তবে নতুন কেন্দ্রে নতুন শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে করতে হয়। বঞ্চিত পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, নতুন কেন্দ্রে নতুন শিক্ষক দেয়া হয়েছে। উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজার হাবিবুর রহমান সম্পূর্ণ অনৈতিক উপায়ে এমনটি করেছেন অভিযোগ তাদের।

এদিকে অভিযোগের তদন্তের জন্য ইউএনও অফিস থেকে দায়িত্ব দেয়া হয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের ফিল্ড সুপারভাইজার শফিকুল ইসলামকে। দীর্ঘ ৩ মাস তদন্তের পর তিনি স্পষ্ট কোন তথ্য জমা দিতে পারেন নি। বর্তমানে তিন সদস্য বিশিষ্ঠ একটি কমিটি গঠন করে নতুন করে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করা হয়।

এবিষয়ে অভিযোগকারী শিল্পী বেগম বলেন, স্বচ্চতার ভিত্তিতে ১৩ জন শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছিলেন। আমরা তা মেনে নেই। কিন্তু এক মাস পর ফিল্ড সুপারভাইজার সম্পূর্ণ বেআইনী উপায়ে আরও ১৭ জন অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীকে নিয়োগ দেন। এই নিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক নতুন কেন্দ্র তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যা বিধিসম্মত নয়।

অভিযোগের ব্যাপারে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কুলাউড়া উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, শিক্ষক নিয়োগে কোন অনিয়ম হয়নি। গত বছরে কার্যক্রম বন্ধ ছিলো এমন কেন্দ্র চিহিৃত করে পরিবর্তে কেন্দ্র স্থাপন করে শিক্ষক নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে যারা উত্তীর্ণ হতে পারেন নি কিন্তু অফিসের সাথে যোগযোগ রেখেছিলেন, তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।

এবিষয়ে প্রাথমিক তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের ফিল্ড সুপারভাইজার শফিকুল ইসলাম বলেন, তদন্ত করে বিষয়টি পরিষ্কার হতে পারিনি। তাই কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই ইউএনও মহোদয়ের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছি।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বী বলেন, পুনরায় তদন্তের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দিয়েছি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পুরনো কেন্দ্র থাকলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ নতুন শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারেন। তবে কেন্দ্র নতুন হলে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া বেআইনী হবে। তদন্তে অনিয়ম প্রমানিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ওএফ

কুলাউড়ায় শিক্ষক নিয়োগে,অনিয়ম, তদন্ততেই ঘুরপাক
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close