• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

প্রধানমন্ত্রীকে এসএমএস: সামাদের ভাগ্যবদল

প্রকাশ:  ২১ জুন ২০১৮, ১৯:০১ | আপডেট : ২১ জুন ২০১৮, ১৯:৩০
নিজস্ব প্রতিবেদক

এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি! আয়ের একমাত্র অবলম্বন অটোরিক্সা হারিয়ে বিপাকে পড়া আবদুস সামাদকে আশার আলো দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসএমএস পেয়ে তিন দিনের মধ্যেই অসহায় মানুষটির জন্য পাঠিয়েছেন একটি অটোরিকশা।

সম্পর্কিত খবর

    আর এই সহায়তা পাওয়ার পুরো কাহিনীটিই খুব আশ্চর্জজনক। বিষয়টি এতটাই অবিশ্বাস্য ঠেকছে খোদ সামাদের কাছে যে, তিনি একে "স্বপ্নের মতো" বলে অভিহিত করেছেন।

    পূর্বপশ্চিম বিশ্বকাপ কুইজে অংশ নিতে ক্লিক করুন।

    না, সরকার প্রধানের কাছে স্বশরীরে আসেননি সামাদ, অন্য কারও মধ্যস্থততার সাহায্যও নেননি। প্রধানমন্ত্রী কয়েক বছর আগে তার যে মোবাইল ফোন নম্বর গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, সেই নম্বর জোগাড় করে এসএমএস পাঠিয়েছিলেন। আর তাতেই মিলেছে সাড়া।

    ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার আব্দুস সামাদ তার জীবিকার একমাত্র অবলম্বন অটোরিক্সাটি হারিয়ে ফেলেন গত ২৮ মে। গ্যারেজ থেকে রিক্সা চুরি হয়ে যাওয়ার পর পরিবারের জন্য অর্থের সংস্থান করতে পারছিলেন না তিনি।

    আর রিক্সা হারিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চান সামাদ। ভেবেছিলেন কোনোভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার নিবেদন পৌঁছে গেলে তার বিপদ কাটবে।

    বঙ্গবন্ধু কন্যা এর আগেও সামাদের মতো অসহায় মানুষের ডাকে সাড়া দিয়েছেন, এবারও নিরাশ করেননি। তবে সেই আবেদনে এত দ্রুত সহায়তা মিলবে, সেটি ধারণায় ছিল নাখোদ সামাদেরও। গত ১৮ জুন পাঠানো এসএমএসে সামাদ লিখেন, ‘মা, তুমি সারা দেশের মা। আমাকে একটু সাহায্য করুন।’

    আর দুই দিন পর ২০ জুন বুধবার সামাদের বাড়িতে পুলিশ হাজির। তারা জানতে চান, কোনও এসএমএস পাঠিয়েছেন নাকি!

    সামাদ জানান, ‘ফয়লা (প্রথমে) ডরাইছি। পরে কথাবার্তা শুইন্যা বুঝছি, আমাকে সাহাইয্য করতে আইছে পুলিশ।’

    এরপর আজ বৃহষ্পতিবার ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার তার অফিসে ডেকে একটি অটোরিক্সা তুলে দেন সামাদের হাতে।

    সামাদ বলেন, ‘আমি স্বপ্নেও ভাবতারছি না অত প্রধানমন্ত্রী আমারে অত তাড়াতাড়ি সাহাইয্য করব। অহনও মনে অইতাছে (হচ্ছে) স্বপ্ন দেখতাছি (দেখছি)।’

    ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এসএমএসটি নজরে আসার পরপরই সাহায্যের নির্দেশনা পাঠান প্রধানমন্ত্রী। আমরা আবদুস সামাদকে খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।’

    সামাদ জানান, তিনি ধারদেনা করে এক লাখ ষাট হাজার টাকা দিয়ে অটোরিক্সাটি কিনেছিলেন। এটি চালিয়ে স্ত্রী, স্কুলপড়ুয়া দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে চলছিলো তার সংসার। কিন্তু জীবিকার অবলম্বনটি হারিয়ে যাওয়ার পর তার নিজের জন্য পর্যাপ্ত অর্থের যোগান যেমন কষ্টকর হয়ে গিয়েছিল, তেমনি মাথায় চেপেছিল ঋণ পরিশোধের বোঝা।

    সামাদ জানান, তিনি কোনো উপায় না দেখে নিজের মোবাইলে গুগলে কোনো মন্ত্রী বা এমপির নাম লিখে নম্বর সার্চ করেন। কিন্তু পেয়ে যান প্রধানমন্ত্রীর নম্বর। ভাবেন শেখ হাসিনা অনেককেই সহায়তা করেন, এসএমএসটি পেলে হয়ত তাকেও ফেরাবেন না।

    প্রধানমন্ত্রী বারবার বলে থাকেন, “তার গণভবনের দুয়ার দেশের সব মানুষের জন্যই খোলা”। দেশবাসীকে নির্ভয়ে সেখানে যেতেও নানা সময় পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

    আবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে নানা সময় নানা দাবি পূরণও হয়েছে। ২০১৬ সালের আগস্টে পটুয়াখালীর শিশু শীর্ষেন্দু বিশ্বাস পায়রা নদীতে সেতু নির্মাণের আবেদন জানিয়ে চিঠি লিখে শেখ হাসিনার কাছে। এরপর তিনি এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দেন।

    গত এপ্রিলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের বাসিন্দা দ্বিতীয় শ্রেণি পড়ুয়া শিশু সৈয়দা রওনক জাহান সেঁজুতি প্রধানমন্ত্রীকে ভালোবেসে চিঠি লিখেছিল। প্রধানমন্ত্রী সেই চিঠি পড়ে মুগ্ধ হয়ে জবাবও দিয়েছিলেন।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close