স্টেডিয়ামে খোলামেলা পোশাকে ইরানের রক্ষণশীল মেয়েরা
বাছাই পর্ব পেরিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের মূল পর্বে অংশ নিয়েছে ইরান। রক্ষণশীল দেশটিতে স্টেডিয়ামে বসে মেয়েদের খেলা দেখা নিষিদ্ধ হলেও রাশিয়ায় তা নয়। তাই তো স্বদেশকে সমর্থন জানাতে দূর দেশে উড়ে এসেছেন হাজারো ফুটবলপ্রেমী মানুষ। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারীও রয়েছেন।
বিশ্বকাপের খেলা দেখতে রাশিয়া যাওয়া মেয়েদের মধ্যে রয়েছেন কিয়ানা ও পারিয়া নামের ২২ বছরের দুই তরুণী। মাঠে গিয়ে খেলা দেখাটা তাদের কাছে অনেকটাই ইতিহাস গড়ার মতো। এদের মধ্যে একজন তো আবার খেলা দেখতে গিয়ে ধরা পড়ে জেলও খেটেছেন। খবর দ্য টেলিগ্রাফের।
সম্পর্কিত খবর
পারিয়া বলেন, আমি খেলা ভালোবাসি, আমি ফুটবল ভালোবাসি। ইরানে নারীদের স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখার সুযোগ নেই। যদিও এক রাতে আমি চেষ্টা করি, খেলা দেখতে যাই এবং ধরা পড়ে জেলে যাই।
তিনি বলেন, ঘটনাটি গত মার্চের। একটা গুজব উঠে, খেলার প্রতি নারীদের আগ্রহের কারণে স্টেডিয়ামে বসে নারীদের খেলা দেখার কঠোর বিধি-নিষেধ শিথিল করা হয়েছে। আমি এটা সত্য ভেবেছিলাম। এবং ভেবেছিলাম আমাদের খেলা দেখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এরপর তেহরানের ডার্বিতে খেলা দেখার জন্য আমার বয়ফ্রেন্ডকে পীড়াপীড়ি করি।
কিন্তু ওটা গুজবই ছিল। কারণ নিষেধাজ্ঞা উঠানো হয়নি। পারিয়া বলেন, ওই সময় আমরা ২৯ জন নারী আটক হয়েছিলাম। আমাকে পরবর্তীতে থানায় নেওয়া হয়। আমার অপরাধ ছিল, আমি ছেলেদের মতো মেকাপ নিয়েছিলাম। তাদের মধ্যে আমিই একমাত্র এক রাতে কারাগারে ছিলাম। তবে পুলিশ আমার সাথে ভদ্র আচরণ করেছিল।
স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখার সুযোগ সেবার হাতছাড়া হলেও ইরান রাশিয়া বিশ্বকাপের জন্য কোয়ালিফাই করার পর কিয়ানা ও পারিয়া তাদের বয়ফ্রেন্ডের মাধ্যমে ইরানের প্রতিটি ম্যাচে টিকিটের ব্যবস্থা করে।
কয়েক হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে রাশিয়া আসা কিয়ানা বলেন, স্টেডিয়ামে বসে খেলার দেখার সুযোগ না থাকলেও ছোটবেলা থেকেই টেলিভিশনে খেলা দেখে বড় হয়েছি। এখানে নারী-পুরুষ মিলে ইরানের ৩০ হাজার ফ্যান রয়েছে বলেও তিনি। তার মধ্যে ১০ হাজার নারী রয়েছে সেটাও জানাতো ভুলেননি তিনি।
গায়ে ইরানের জার্সি ও হাফ প্যান্ট পরার ব্যাপারে কিয়ানা বলেন, এখানে আমরা যে পোশাকে এসেছি, দেশে সে পোশাকে বাইরে বের হতে পারি না। তবে আমরা কিন্তু ঘরের মধ্যে এ ধরনের পোশাক পরে খেলা দেখি। তিনি আরও বলেন, আমাদের হিজাব পরতে হবে এমন না, কিন্তু চুল ঢেকে রাখতে হয়।
-একে