১০ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ২৩ হাজার কোটি টাকা
গত ডিসেম্বরে সামগ্রিক খাতে মূলধন উদ্বৃত্ত ছিল ৪ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা
বারবার পুনঃতফসিল করে খেলাপি ঋণ কমানোর চেষ্টা করছে ব্যাংকগুলো। উল্টো বাড়ছে খেলাপি ঋণ। এর প্রভাবে বেশি করে প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে গিয়ে মূলধন ঘাটতিতে পড়তে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। বর্তমানে মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে ১০টি ব্যাংক। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এসব ব্যাংকের ২৩ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি দেখা দিয়েছে। গত ডিসেম্বরে ৯টি ব্যাংক ১৯ হাজার কোটি টাকার বেশি ঘাটতিতে ছিল।
পূর্বপশ্চিম বিশ্বকাপ কুইজে অংশ নিতে ক্লিক করুন।
সম্পর্কিত খবর
বাংলাদেশ ব্যাংকের মার্চভিত্তিক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ওই সময় পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে আট লাখ ২২ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ রয়েছে ৮৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১০.৭৮ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ছিল ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৪ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, খেলাপি ঋণ বাড়লে মূলধন ঘাটতিও বাড়ে। ১০টি ব্যাংকের বিপুল অঙ্কের মূলধন ঘাটতি থাকলেও কিছু ব্যাংক প্রয়োজনের তুলনায় বেশি রাখতে সক্ষম হয়েছে। সব মিলিয়ে পুরো ব্যাংক খাতে এক হাজার ৬১৯ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি রয়েছে। গত ডিসেম্বরে সামগ্রিক খাতে মূলধন উদ্বৃত্ত ছিল ৪ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা।
মূলধন ঘাটতির তালিকায় থাকা ব্যাংকগুলোর মধ্যে সাতটি সরকারি। বাকি তিনটি বেসরকারি খাতের। সরকারি মালিকানার সাতটি ব্যাংকে ঘাটতি রয়েছে ২১ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকের দক্ষতা না বাড়িয়ে করের টাকায় বারবার মূলধন পুনর্ভরণ করে সমালোচনার মুখে রয়েছে সরকার। গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে সরকারি ব্যাংকের মূলধন পুনর্ভরণের জন্য দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্যও বরাদ্দ রেখেছে সরকার।
প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, কার্যক্রম শুরুর মাত্র চার বছরের মাথায় সংকটে পড়া ফারমার্স ব্যাংক ৩০২ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে। বেসরকারি খাতের আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ঘাটতি সামান্য বেড়ে এক হাজার ৫১৪ কোটি টাকা হয়েছে। বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ঘাটতি রয়েছে ২৬৫ কোটি টাকা।
ব্যাংকগুলোর শেয়ারহোল্ডার বা উদ্যোক্তাদের জোগান দেওয়া অর্থই মূলধন হিসেবে বিবেচিত হয়। সারা বিশ্বে ভেসেল প্রণিত আন্তর্জাতিক নীতিমালার আলোকে ব্যাংকগুলোকে মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে ভেসেল-৩ নীতিমালার আলোকে একটি ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ অথবা ৪০০ কোটি টাকা, এর মধ্যে যেটি বেশি সেই পরিমাণ মূলধন রাখতে হচ্ছে।
/এসএম