• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

ভিক্ষা চাই না মা, কুত্তা সামলা

প্রকাশ:  ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৮:১০
নাজনীন নাসির দোলা

মার্চ মাসে আমার বাসায় গ্রীল কেটে চোর ঢুকলো। আমি আব্বা-আম্মাকে ডাক্তার দেখিয়ে দেশের বাইরে থেকে ফিরেই খবর পেলাম। চোর কিছু নিতে পারে নাই, বাসায় যে ছেলেটা ছিল চোরকে ধরে ফেলছিল। যদিও ততক্ষণে বাসা লণ্ডভণ্ড করে চোর সব বোঁচকায় বেঁধে ফেলছে। বাংলা সিনেমার মত শেষ দৃশ্যে পুলিশের আগমন।

চোরকে তারা থানায় নিয়ে যায়, সেই সাথে আমার বাসার সব দামী জিনিস আলামত হিসেবে নিয়ে যায় তারা। বাসায় ফিরেই ছুটলাম থানায়। রাত ৮টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত বসে রইলাম। মামলা দেবো না বলাতে তারা রেগে আগুন; বললো আমার মত নাগরিকদের জন্যই দেশে আইনের শাসন নাই.. ইত্যাদি ইত্যাদি।

সম্পর্কিত খবর

    বললো মামলা করবে পুলিশ, আমি বাদী। কিছুই করা লাগবে না আমার। এজাহার লিখা হলো না বকশিশ না দেয়া পর্যন্ত।

    এরপর তিনমাস গেল, সাড়া শব্দ নাই। আইন আর শাসন গেছে ঘুরতে। তিনমাস পর পুলিশ দূত পাঠালো, আইনজীবী। আমার জিনিস ছুটিয়ে দেবেন, বিনিময়ে দিতে হবে বিশ হাজার। মাফ আর দোয়া চেয়ে নিজেই উকিল ঠিক করলাম। তারপর সিএমএম কোর্টে ডেট পাইতে আরও তিন মাস.. অবশেষে প্রায় ৩৫ হাজার খরচ করে এলো সেই ক্ষণ.. আমি এজলাসে.. যাহা বলিব সত্য বলিব, সত্য বই মিথ্যা বলিব না...।

    বিচারক অর্ডার দিয়েছেন মালামাল আমার জিম্মায় দেয়ার.. এবার আবার থানা.. তারা বললেন জিনিস তাদের জিম্মায় নাই.. আছে আদালতের জিম্মায়.. পিংপং বলের মত অবস্থা। এক দয়াবান পরে বললেন তাদের জিম্মায় মালামাল আছে থানায়। কোর্ট থেকে আদেশ এসে পৌঁছলে আমি জিনিস ফেরত পাবো। আর হ্যাঁ চোর কিন্তু এক সপ্তাহেই জামিন পেয়ে গেছে.. তবে কেইস চলবে আর প্রতি ডেটে আমাকে গুনতে হবে উকিলের ফি। উকিল বলছে আমার যেন ঝামেলা না হয় সেটা সে দেখবে। আর আমি ভাবি..ভিক্ষা চাই না মা, কুত্তা সামলা।

    (ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

    /পি আর

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close