• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ডাকসু: আদালত অবমাননার মামলা কার্যতালিকা থেকে বাদ

প্রকাশ:  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:৩২
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন না করায় বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা আদালত অবমাননার মামলাটি শুনানি না করে আদালতের কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অন্যদিকে শুনানিতে ছিলেন মামলার রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

শুনানিতে মামলার বিবাদীদের বিরুদ্ধে রুল জারির আরজি জানান মনজিল মোরসেদ। তখন আদালত রুল জারি করতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল তার জবাব দেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত এবং এ সংক্রান্ত প্রকাশিত খবর আদালতে তুলে ধরে এ মামলার বিরোধিতা করেন।

মনজিল মোরসেদ তখন আদালত অবমাননার মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেলের শুনানির এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুললে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে আদালত মামলা শুনতে অপারগতা জানিয়ে মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেয়।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম পরে সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বলেছেন, মার্চের ভেতরে ডাকসু নির্বাচন করার সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভিসির এই বিষয়টিই আমি কোর্টের গোচরে এনেছি।

তিনি আরও বলেন, ‌এই মুহূর্তে জাতীয় নির্বাচনের প্রশ্নটিই বড়। ছাত্রদের নির্বাচনের প্রশ্নে কোনো রকম বিশৃঙ্খলা হলে জাতীয় নির্বাচনের ওপর একটা বিরূপ প্রভাব পড়বে। তাই খবরের কাগজে এ সংক্রান্ত প্রকাশিত খবর দেখে এবং আমার বক্তব্য শুনে আদালত অবমাননার এই আবেদনটি আপাতত তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন আদালত।

এর আগে ডাকসু নির্বাচনে পদক্ষেপ নিতে ৩১ শিক্ষার্থীর পক্ষে ২০১২ সালের ১১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টর ও ট্রেজারারকে লিগ্যাল নোটিশদেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই নোটিশের কোনও জবাব না দেওয়ায় ২০১২ সালে ২৫ শিক্ষার্থীর পক্ষে রিট আবেদন করা হয়। এরপর একই বছরের ৮ এপ্রিল হাইকোর্ট নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন করার ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। রিটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরকে বিবাদী করা হয়।

পরে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ৬ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ আদেশ বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া ডাকসু নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

এ সংক্রান্ত এক রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। কিন্তু সে রায় বাস্তবায়ন না হওয়ায় তাদের নোটিশ পাঠান রিটকারী আইনজীবী।

সাত দিনের মধ্যে আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে নোটিশপ্রাপ্ত তিনজনের বিরুদ্ধে হাইকার্টে আদালত অবমাননার মামলা করা হবে বলেও ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাবি ভিসিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, ১৯৯০ সালের ৬ জুলাই ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

/এসএম

ডাকসু,আদালত অবমাননা,হাইকোর্ট
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close