• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

জাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সাংবাদিকসহ তিনজনকে মারধরের অভিযোগ

প্রকাশ:  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:৫২ | আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:৫৯
জাবি প্রতিনধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে এক কর্মরত সাংবাদিকসহ এক ছাত্রী ও দুই বহিরাগতকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে বারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের সামনে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার মাহমুদুল হক সোহাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং চ্যানেল আই অনলাইন পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।

মারধরকারী নেতা-কর্মীরা হলেন, নেজামউদ্দিন নিলয় (নাটক ও নাট্যতত্ত, ৪২ ব্যাচ), রাফিউল সিকদার আপন (লোক প্রশাসন বিভাগ, ৪৭ ব্যাচ), সোহেল রানা (লোক প্রশাসন বিভাগ, ৪৭ ব্যাচ), শুভাশিষ শুভ (বাংলা ৪৫ ব্যাচ)। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চলের অনুসারী এবং রফিক-জব্বার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। আসন্ন হল কমিটিতে নেজামউদ্দিন নিলয় সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী বলে জানা গেছে।

প্রত্যেক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রবিবার দুপুর সাড়ে বারোটায় বিশ^বিদ্যালয়ের সুইমিং পুল সংলগ্ন এলাকায় বেড়াতে আসেন দুই বহিরাগত। সে সময় সাংবাদিক মাহমুদুল হক সোহাগ ও কয়েকজন শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান করেন। এসময় বিশ^বিদ্যালয়ের রফিক-জব্বার হলের কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী সুইমিং পুলে গিয়ে বহিরাগত দুই জনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, মারধর এবং তাদের হাতে থাকা মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালান। ঘটনা প্রত্যেক্ষ করে মাহমুদুল হক শিক্ষার্থীদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা সবাই লোক প্রশাসন বিভাগের ৪৭ ব্যাচের ছাত্র এবং শহীদ রফিক-জব্বার হলের ছাত্রলীগ কর্মী বলে পরিচয় দেন। মাহমুদুল হক তার পরিচয় দিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের হাত থেকে বহিরাগত দুই জনকে রক্ষা করেন এবং তাদেরকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন।

এরপর বহিরাগত ওই দুই জন শারীরিক শিক্ষা বিভাগের সামনে আসলে পুনরায় তাদের আটক করেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। এসময় মাহমুদুল হক ঘটনাস্থলে আবারো উপস্থিত হন এবং বহিরাগত দুই জনকে মারধরে বাঁধা দেন। এসময় ছাত্রলীগ কর্মী রাফিউল সিকদার আপন ছাত্রলীগ নেতা নেজামউদ্দিন নিলয়কে ডেকে আনেন। নিলয় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তার মদদে ছাত্রলীগ কর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে মাহমুদুল হককে বেধড়ক কিল-ঘুষি দিতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে পাশের ঝোপে ফেলে দেন। এসময় মাহমুদুল হককে রক্ষা করতে তার বিভাগের এক ছাত্রী এগিয়ে আসলে তাকেও বেধড়ক মারধর করেন। পরবর্তীতে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন।

এ ঘটনায় প্রক্টর ও উপাচার্য বরাবর তারা মৌখিক ও লিখিত অভিযোগপত্র প্রদান করেন।

এ বিষয়ে প্রক্ট্রর শিকদার মো: জুলকারনাইন বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারন করে তারা কোনভাবেই এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িত হতে পারে না। এরা ছাত্রলীগ নামক কুলাঙ্গার। অভিযোগপত্রটি হাতে পেয়েছি। ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে সাময়িক বহিষ্কার করা হবে। পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ তদন্তে সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চল বলেন, আমার জানা মতে মারধরকারীরা ছাত্রলীগের কেউ নয়। তবে অভিযুক্তদের কেউ ছাত্রলীগকর্মী হলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়,ছাত্রলীগ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close